ফিচার্ড মত-মতান্তর

পঙ্কজের পরে কে?  

পঙ্কজ দেবনাথ

পঙ্কজের পরে কে?  

শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক।। পঙ্কজ দেবনাথকে আওয়ামী লীগের সকল পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। দলের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে একথা জানানো হয়েছে। এ নিউজটি দেখে আমার সামাজিক মাধ্যমে প্রায়শ: দেখা একটি উদৃতি মনে এলো: একটি ‘বকরী’-কে যখন জবাই করা হয়, অন্য বকরী তখন কাঁঠাল পাতা চিবায়। আরো একটি উদৃতি মনে হলো, তাহলো: গরুর গাড়ীতে গরুর মাংস নিয়ে যাওয়া হলেও নির্বোধ গরু তা বোঝেনা। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ডঃ নিম চন্দ্র ভৌমিক-এর পর পঙ্কজের উইকেট পড়লো। এরপর কি রানা দাশগুপ্তের পালা? হয়তো এ কারণে, ফেইসবুকে কে যেন লিখেছেন, এশিয়া কাপে পাকিস্তান হেরেছে, শ্রীলংকা জিতেছে, ভারত হেঁসেছে আর বাংলাদেশ কেঁদেছে।

বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান হিন্দু নির্যাতনের প্রেক্ষিতে সংসদে সংখ্যালঘু নামধারী যে দেড় ডজনের একটু অধিক সাংসদ আছেন, এদের মধ্যে একমাত্র পঙ্কজ দেবনাথ মাঝে-মধ্যে হয়তো বিবেকের দংশনে একটু-আধটু কথাবার্তা বলেন, তাই কি তাঁর বহিস্কার? অন্তত: হিন্দুরা তাই মনে করেন। সরকার কি বিএনপি নেতৃত্বের মত হিন্দু নেতৃত্ব ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? যেই একটু উপরে উঠতে যাচ্ছেন তাঁকেই ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। বিএনপি না হয় ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখে, হিন্দু নেতৃত্ব তো ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখেনা, তবু কেন এই বৈমাত্রী সুলভ আচরণ? দলভর্তি বা দেশভর্তি তোষামোদকারী নিয়ে কেউ কখনো উপকৃত হয়েছেন বলে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়না।

লিখেছেন শিতাংশু গুহ

জানা যায়, রানা দাশগুপ্ত এবং গোবিন্দ প্রামানিক-কে সরকার কারা যেন সংসদ সদস্য হবার জন্যে ডাকছেন। এদের একজন বলেছেন, আমার তো এলাকায় কোন পরিচিতি নেই, আমি কিভাবে জিতবো। উত্তর, সেটি আমরা দেখবো। সুযোগ থাকলে এদের পরামর্শ দিতাম, ‘দাদা, রাজি হয়ে যান, সংসদে আরো দুই সেট অলংকার বাড়ুক’। পাকিস্তান সেনাবাহিনী যদি একাত্তরে হিন্দুদের টার্গেট না করতো, তাহলে বাংলাদেশ হতোনা। পাকিস্তান সেনাবাহিনী রমনা কালীবাড়ি ধ্বংস করেছিলো, সেই রমনার পাদদেশে দাঁড়িয়েই তাঁদের আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিলো। প্রয়াত আব্দুল গাফফার চৌধুরী বলেছিলেন, সেনাবাহিনীতে ৫% হিন্দু থাকলে কোন অভ্যুত্থান ঘটতো না। এসবই সত্য, ইতিহাস।

হিন্দুরা থাকলে বাংলাদেশ আফগানিস্তান হবেনা। মৌলবাদীরা এটি জানে বলেই তাঁরা হিন্দুদের খেদাতে চায়। হিন্দুরা বাংলাদেশে ‘ডিটারেন্ট’ ফ্যাক্টর। এঁরা শান্তিপ্রিয়, এঁরা জঙ্গী হয়না। আগে হিন্দুরা আওয়ামী লীগের ওপর ভরসা করতো, এখন করেনা। কারণ গত একযুগে হিন্দুদের ওপর যত অত্যাচার-নিপীড়ন হয়েছে, তাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সরাসরি জড়িত। আওয়ামী লীগও এখন আর ভোট ব্যাংকের কেয়ার করেনা, কারণ নির্বাচনে জিততে ভোটের দরকার পড়েনা। তদুপরি মৌলবাদীরা আগে বিএনপি’র একক সম্পত্তি থাকলেও এখন এদের অনেকে আওয়ামী লীগের ঝান্ডাতলে। এদের খুশি করতে হিন্দু কোরবানী দিলে কি আসে যায়? যেমন কোরবানী দেয়া হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে, মুক্তবুদ্ধি মানুষগুলোকে, অথবা শাহবাগ আন্দোলনকে? # [email protected]

সংবাদটি শেয়ার করুন