রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল রাত থেকে আমরণ অনশনে নামেন ৭ জন শিক্ষার্থী। এতে অসুস্থ হন দু’জন। কিন্তু নির্বাকার ছিল প্রশাসন। এ অবস্থায় প্রো-ভিসি অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল ইসলাম মাসউদ, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ও জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদারসহ আরও কয়েকজনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
শনিবার বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনের বারান্দায় এসব ঘটনা ঘটে। এর আগে, দুপুরে প্রো-ভিসিদ্বয়ের বাসভবনে শিক্ষার্থীরা তালা দিলে বাসভবনের ভেতরে ঢুকতে না পেরে ফিরে আসেন প্রো-ভিসি অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খান, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান। পরে তারা জুবেরী ভবনের দিকে আসতে থাকলে আন্দোলনকারীরা স্লোগান দিতে দিতে তাদের পেছনে আসেন।
এক পর্যায়ে জুবেরী ভবনের বারান্দায় এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক এবং ছাপাখানার এক কর্মকর্তা আন্দোলনকারীদের আটকানোর চেষ্টা করেন। এ পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রো-ভিসি অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খানকে চারপাশ থেকে আটকে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ধস্তাধস্তিতে আহত হন অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, একজন উপ-রেজিস্ট্রার, রাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়ার শুভ ও সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারসহ ৭/৮ জন।কর্মী নিয়োগ
হাতাহাতির একপর্যায়ে প্রো-ভিসি জুবেরী ভবনের দ্বিতীয় তলায় চলে যান। শিক্ষার্থীরা তাকে ভবনের দ্বিতীয় তলার বারান্দায় অবরুদ্ধ করে রাখেন। এরই মধ্যে সেখানে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদসহ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হন। জড়ো হতে থাকেন সাধারণ শিক্ষার্থী, ইসলামি ছাত্র শিবিরসহ বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা ও রাকসুর পদপ্রার্থীরা। জুবেরী ভবনের ভিতরে স্লোগান দিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। কিছু শিক্ষার্থী দোতলায় উঠে কয়েকটি ঘরের জানালা ভাঙচুর করেন।
এ বিষয়ে সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, একটি মীমাংসিত ইস্যু নিয়ে প্রশাসনের যে ভঙ্গি নেয়া হয়েছে আমরা তা গভীরভাবে নিন্দা করছি। আমরা কাল থেকে শান্তিপূর্ণ অনশনে রয়েছি, কিন্তু প্রশাসন কোনো গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ নেয়নি। আজ আমাদের ওপর যে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে তা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য। আমি সকল শিক্ষার্থীকে আহ্বান জানাই, শান্তিপূর্ণভাবে যোগ দিন এবং আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা ময়দান ছাড়ব না।
রাবি শাখা ইসলামি ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল বলেন, আর মাত্র চার দিন পর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটি মীমাংসিত ইস্যু—পোষ্য কোটাকে সামনে এনে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষও ঘটে গেছে। ইসলামি ছাত্রশিবির এ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই অযৌক্তিক পোষ্য কোটার ইস্যুর অবসান না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
প্রো-ভিসি অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন বলেন, পোষ্য কোটার বিষয় তো আমার একার কোনো সিদ্ধান্ত না, প্রশাসনের সবার সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে আমাকে বাসায় যেতে দেবে না, খেতে দেবে না এমন আন্দোলন আমি কখনো দেখিনি।
সূত্র: মানবজমিন
এফএইচ/বিডি
CBNA24 রকমারি সংবাদের সমাহার দেখতে হলে
আমাদের ফেসবুক পেজে ভিজিট করতে ক্লিক করুন।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল ভিজিট করতে পোস্ট করুন।