ফিচার্ড ভ্রমণ

ফারুক ব্যক্তিজীবনে অনেক সাহসী ও রাগী ছিলেন: ববিতা

ফারুক ও ববিতা

ফারুক ব্যক্তিজীবনে অনেক সাহসী ও রাগী ছিলেন: ববিতা

সুজন সখী, গোলাপী এখন ট্রেনে, সারেং বউ, লাঠিয়াল, নয়নমণি, মিয়াভাই, আলোর মিছিল- এমন কালজয়ী ছবির নায়ক ফারুক আজ চিরবিদায় নিয়েছেন। ‘লাঠিয়াল’খ্যাত এই নায়কের মৃত্যুতে শোকাহত তার অনেক ছবির নায়িকা ববিতা।

প্রিয় নায়কের মৃত্যুর খবরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ববিতা বললেন, ‘ফারুক ভাই নেই—সংবাদটি শোনার পর সকালটা বিষণ্ণ হয়ে গেল। যা ভাবিনি তাই হলো। সবকিছু ছাড়িয়ে তিনি ছিলেন অনেক আপন মানুষ। প্রতিবাদী মানুষ।’

ববিতা বলেন, ‘ফারুক ভাই অনেকদিন ধরে দেশের বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শুনেছিলাম অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কয়েক মাস আগে তার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছিল। কী থেকে কী যে হয়ে গেল! প্রিয় মানুষটি আর নেই।’

’নায়ক ফারুকের সঙ্গে আমার পরিচয় হয় অনেক বছর আগে। শুনেছি ব্যক্তিজীবনে তিনি অনেক সাহসী ও রাগী ছিলেন। তবে, শিল্পীজীবনে তিনি ছিলেন মাটির মানুষ। ক্যামেরার সামনে সত্যিই মাটির মানুষ হয়ে যেতেন। কীভাবে সংলাপ দিতে হবে, কীভাবে দৃশ্যটি আরও সুন্দর হবে—বিষয়গুলো নিয়ে তিনি ভাবতেন।’

‘নয়নমণি’, ‘লাঠিয়াল’ ও ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ বাংলা চলচ্চিত্রে ইতিহাস হয়ে থাকবে যুগের পর যুগ। ফারুক ও ববিতা জুটি হয়ে এসব সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন।

চিত্রনায়ক ফারুক ইন্তেকাল করেছেন

বাংলা সিনেমার মিয়া ভাই’খ্যাত নায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা ১৭ (গুলশান – বনানী) আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক আর নেই। আজ সোমবার সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

আগামীকাল মঙ্গলবার ভোরের একটি ফ্লাইটে এই অভিনেতার মরদেহ আনা হবে ঢাকায়। এর আগে, সিঙ্গাপুরে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন পাঠান।

তিনি বলেন, ‘গত ৩-৪ দিন যাবৎ বাবার শরীর হঠাৎ খারাপ হয়ে যায়। মা ফোন দিয়ে আমাকে বলেন, সিঙ্গাপুরে আসতে। সংবাদটি শুনে দ্রুত আমি সেখানে যাই। হয়তো বাবা আমার জন্যই ক’দিন খুব কষ্ট করেছেন। আপনারা সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতালের প্রক্রিয়া শেষ করে বাবাকে দেশে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করছি। এখানে বাবার একটি জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আর আগামীকাল ভোরেই আমরা দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেব।’

এদিকে, দাপুটে এই অভিনেতার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এমপি, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’র মধ্যদিয়ে ১৯৭১ সালে সিনেমায় তার অভিষেক হয়। প্রথম সিনেমায় তার বিপরীতে ছিলেন কবরী। এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা খান আতাউর রহমানের ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘আলোর মিছিল’-এ অভিনয় করেন তিনি।

প্রায় পাঁচ দশক ঢালিউডে অবদান রেখেছেন অভিনেতা ফারুক। অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
সূত্র:সমকাল/আমাদেরসময়

 



এসএস/সিএ
সংবাদটি শেয়ার করুন