ফুটবল ঈশ্বরের বিদায়ে বিশ্ব তারকা খেলোয়াড়দের শোক
একদিন তোমার সঙ্গে ওপারে ফুটবল খেলব: ম্যারাডোনার মৃত্যুতে পেলে
পেলে ও ম্যারাডোনা
আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়াগো ম্যারাডোনা আর নেই। ৬০ বছর বয়সে পুরো ফুটবল বিশ্বকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন এই ফুটবল জাদুকর।
বুধবার নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। বিশ্বজয়ী কিংবদন্তি এই ফুটবল তারকার মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ গোটা ফুটবল বিশ্ব।
ম্যারাডোনার মৃত্যুতে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এক বার্তায় লিখেছেন, ‘কী দুঃখের একটা খবর! আমি সত্যিকারের একটা বন্ধু হারালাম, বিশ্ব হারাল এক কিংবদন্তিকে। তার ব্যাপারে বলার শেষ নেই। তবে এখন শুধু বলব, ঈশ্বর তার পরিবারকে শক্তি। আশা করি, একদিন আমরা ওপরে একসঙ্গে ফুটবল খেলব।’
১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর বুয়েন্স আয়ার্সের লানুসে অবস্থিত পলিক্লিনিক এভিটা হাসপাতালে জন্ম গ্রহণ করেন ম্যারাডোনা।
আমার পাগল জিনিয়াস চিরশান্তিতে থেকো: সৌরভ গাঙ্গুলী
কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়াগো ম্যারাডোনা আর কিংবদন্তি ক্রিকেটার সেরৈভ গাঙ্গুলী
ফুটবল বিশ্বকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়াগো ম্যারাডোনা।
বুধবার নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৬০ বছর বয়সে মারা যান তিনি। বিশ্বজয়ী কিংবদন্তি এই ফুটবল তারকার মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ গোটা ফুটবল বিশ্ব।
ম্যারাডোনার মৃত্যুতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এক বার্তায় শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমার নায়ক আর নেই। আমার পাগল জিনিয়াস চিরশান্তিতে থেকো। আমি তোমার জন্যই ফুটবল দেখতাম।’
বিশ্ব ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে বিবেচিত ম্যারাডোনার নেতৃত্বে ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা। টুর্নামেন্টে তার জাদুময় পারফরম্যান্স মন ভরিয়ে দিয়েছিল ফুটবল প্রেমীদের।
ক্লাব পর্যায়ে তিনি বার্সেলোনা অধ্যায় শেষে যোগ দেন নাপোলিতে। এখানেও নিজের একক নৈপুণ্যে ইতালিয়ান ক্লাবটিকে দু’টি লিগ শিরোপা জেতান ম্যারাডোনা। আর্জেন্টিনার জার্সিতে ৯১ ম্যাচে ৩৪ গোল করেছেন তিনি। খেলেছেন ৪টি বিশ্বকাপে।
ম্যারাডোনার নেতৃত্বে ১৯৯০ সালের ইতালি বিশ্বকাপেও ফাইনালে খেলে আর্জেন্টিনা। তবে সেবার তারা হেরে যায় পশ্চিম জার্মানির কাছে। পরে ১৯৯৪ সালের যু্ক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপে ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় তাকে নিষিদ্ধ করা হয়। এফেড্রিন নামক ড্রাগ নিয়ে ম্যারাডোনা খেলতে নেমেছিলেন, এমন দাবি করা হয়।
ম্যারাডোনা আমাদের ছেড়ে যাননি, তিনি অমর: মেসি
সর্বকালের সেরা ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনা আর তার স্বদেশি ফুটবলার ও সময়ের অন্যতম সেরা তারকা লিওনেল মেসিও।
চিরবিদায় নিয়েছেন সর্বকালের সেরা ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনা। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই তারকার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা বিশ্বে। ম্যারাডোনার চলে যাওয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তার স্বদেশি ফুটবলার ও সময়ের অন্যতম সেরা তারকা লিওনেল মেসিও।
তবে ম্যারাডোনার মৃত্যুকেই তার চিরবিদায় হিসেবে মানতে রাজি নন আর্জেন্টিনার বর্তমান অধিনায়ক লিওনেল মেসি। বর্তমান ফুটবল বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার বিশ্বাস করেন, ম্যারাডোনা চির অমর হয়ে থাকবেন ফুটবল ইতিহাসে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেসি লিখেছেন, ‘সকল আর্জেন্টাইন ও সারা বিশ্বের সবার জন্য কষ্টের একটি দিন। তিনি আমাদের ছেড়ে গেছেন কিন্তু চলে যাননি। দিয়েগো অমর। আমি তার সঙ্গে কাটানো সকল সুন্দর মুহূর্ত নিজের কাছে রেখে দিয়েছি। তার পরিবার ও কাছের বন্ধুদের জন্য আমার সহমর্মিতা। শান্তিতে থাকুন ম্যারাডোনা।’
এর আগে বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১১টার দিকে আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে ম্যারাডোনার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছে।
সংস্থাটির প্রধান ক্লাওদিও তাপিয়া শোকবার্তায় বলেন, ‘আমাদের কিংবদন্তির মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত। দিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনা। সবসময় তুমি আমাদের হৃদয়ে থাকবে।’
সাকিবের চোখে ম্যারাডোনা
আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনার মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমেছে ক্রীড়াজগতে। তার এমন চলে যাওয়া যেন মেনে নিতে পারছেন না কেউ। ম্যারাডোনার প্রয়াণে শুধু ফুটবলে নয়, অন্যান্য খেলার সাবেক-বর্তমান ক্রীড়াবিদরাও শোকে কাতর।
বাংলাদেশের ক্রিকেটার, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও ফুটবলের এই জাদুকরকে নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করেছেন।
মারাডোনার মৃত্যু সংবাদ শোনার পর বুধবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাকিব লেখেন, প্রতিটি প্রজন্মেই এমন খেলোয়াড় আছেন নিজেদেরকে এক একজন আইকনিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। আবার এমন কিছু খেলোয়াড় থাকেন যারা, নিজের প্রজন্মকে অতিক্রম করে যান এবং নিজেই সেই খেলাটির আইকন হয়ে ওঠেন।
সাকিবের চোখে দিয়াগো ম্যারাডোনা এমন একজন খেলোয়াড়; যিনি ফুটবলকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছিলেন। তিনি মাঠের খেলায় ততটাই বিখ্যাত ছিলেন, যতটা আবার মাঠের বাইরে কুখ্যাতি অর্জন করেন নানা কারণে। তিনি যা কিছু করেছেন নিজের মত করেই করেছেন। হোক সেটা ভুল কিংবা শুদ্ধ।
‘তার অবিশ্বাস্য প্রতিভা, ফুটবল সুক্ষদর্শিতা এবং এই খেলাটির প্রতি ভালোবাসা কখনোই অস্বীকার করার মত নয়। তার মত কিংবদন্তির কারণে ফুটবল আরও এগিয়ে যাবে এবং আমাদেরকে আরও বিস্মিত করে তুলবে।’
সব কিছুর জন্য তোমাকে ধন্যবাদ’
ফুটবল কিংবদন্তি দিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা আর নেই। পৃথিবীর মায়া ছিন্ন করেছেন আর্জেন্টাইন ফুটবল লিজেন্ড। আর্জেন্টিনার বহুল প্রচারিত দৈনিক ক্লারিন জানিয়েছে, বুধবার বুয়েন্স আয়ার্সের টাইগ্রেতে তার নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৬০ বছর বয়সী ম্যারাডোনা। সম্প্রতি মস্তিস্কে অস্ত্রোপচারের পর বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন এ ফুটবল যাদুকর। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসেসিয়েশনও (এএফএ) ১৯৮৬ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।
ম্যারাডোনার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ফুটবল বিশ্বে। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা ইংলিশ স্ট্রাইকার গ্যারি লিনেকার টুইটারে শোক বার্তায় লিখেছেন, ‘যোজন যোজন এগিয়ে, আমার প্রজন্মের সেরা খেলোয়াড় এবং সম্ভবত সর্বকালের সেরা।’
ম্যারাডোনার সাবেক ক্লাব নাপোলি ফুটবলের এ রাজপুত্রের বিদায়ে টুইটারে শোক বার্তায় লিখেছে. ‘ তুমি সবসময়ই আমাদের হৃদয়ে।’
আরেক সাবেক ক্লাব বার্সেলোনা লিখেছে, দিয়েগো, ‘সব কিছুর জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।’
ম্যারাডোনার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে টুইট করেছে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটি ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)।
১৯৭৬ সালে আর্জেন্টাইন ক্লাব বোকা জুনিয়র্সের জার্সি গায়ে পেশাদার ফুটবলে পা রাখেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। ১৯৮২তে বার্সেলোনায় পাড়ি দেন এ ফুটবল জাদুকর।
মাত্র ১৭ বছর বয়সে ১৯৭৭ সালে জাতীয় দলে অভিষেক ম্যারাডোনার। খেলেছেন চারটি বিশ^কাপ (১৯৮২, ১৯৮৬, ১৯৯০ ও ১৯৯৪)। নিজ মাটিতে ১৯৭৮ বিশ^কাপেও আর্জেন্টিনা দলে ছিলেন ম্যারাডোনা। কিন্তু কম বয়স বলে সেবার ম্যারাডোনাকে কোনো ম্যাচ খেলতে দেননি আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী কোচ সিজার মিনোত্তি। ম্যারাডোনার অধিনায়কত্বে ১৯৮৬তে বিশ্বকাপ শিরোপা জেতে আর্জেন্টিনা।
তোমার থেকে বড় সুপারস্টার আমার চোখে আর কেউ ছিল না
শোকের পরে শোক চলছে। তোমার থেকে বড় সুপারস্টার আমার চোখে আর কেউ ছিলোনা, আর আসবেও না। ব্যক্তি জীবনে তুমি আমার একমাত্র সুপারস্টার ছিলে যাকে আমি একবার হলেও সামনে থেকে দেখতে চেয়েছিলাম। তোমার বা পায়ের আঁকা নিখুদ গোলের ছবি গুলো মনের ক্যানভাসে থেকে যাবে আজীবন। ভালো থেকো ওপারে যাদুকর। দি ড্রিবলিং মাস্টার, দিয়াগো আরমান্দো মারাদোনা। (RIP)
ম্যারাডনার মৃত্যুতে শোকাহত গোটাবিশ্ব। যেন এই সংবাদকে কেউ বিশ্বাসই করতে চাইছে না। একটু পরেই যেন সবার ভুল ভাঙবে। কিন্তু অমোঘ সত্য ম্যারাডোনা আর নেই। শোকার্ত গোটা ফুটবল বিশ্ব, শোকার্ত গোটা বিশ্ব। একমাত্র ম্যারাডোনার কারণে আজ বাংলাদেশের এতো ভক্ত। সেই ম্যারাডোনা যখন না ফেরার দেশে চলে যান, তখন তার শোক কী পরিমাণ হতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা শোক প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘তোমার থেকে বড় সুপারস্টার আমার চোখে আর কেউ ছিলোনা।’
নিজের ভেরিফায়েড পেইজে লিখেছেন, শোকের পরে শোক চলছে। তোমার থেকে বড় সুপারস্টার আমার চোখে আর কেউ ছিলোনা, আর আসবেও না। ব্যক্তি জীবনে তুমি আমার একমাত্র সুপারস্টার ছিলে যাকে আমি একবার হলেও সামনে থেকে দেখতে চেয়েছিলাম। তোমার বা পায়ের আঁকা নিখুদ গোলের ছবি গুলো মনের ক্যানভাসে থেকে যাবে আজীবন। ভালো থেকো ওপারে যাদুকর। দি ড্রিবলিং মাস্টার, দিয়াগো আরমান্দো মারাদোনা। (শান্তিতে থাকুন)
আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনা আজ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম খবরটি নিশ্চিত করেছে। এর আগে বেশ কয়েক দিন অসুস্থ ছিলেন তিনি।
তিগ্রে-তে নিজ বাসায় মারা যান ম্যারাডোনা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। গত মাসে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন ম্যারাডোনা। বুয়েনস এইরেসের হাসপাতালে তাঁর মস্তিষ্কে জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়। মস্তিষ্কে জমাট বেঁধে থাকা রক্ত (ক্লট) অপসারণ করা হয়েছিল।
সূত্রঃ মানবজমিন, কালের কন্ঠ, আমাদের সময়
এসএস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন