ফিচার্ড বিনোদন

ফেসবুকজুড়ে ‘মা’ হারানোর বেদনা

অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ। সংগৃহীত ছবি

ফেসবুকজুড়ে ‘মা’ হারানোর বেদনা

জ্যেষ্ঠ অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ আর নেই। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় উত্তরায় নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই অভিনেত্রী। এই অভিনেত্রী দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন। চলছিল কেমো। সম্প্রতি সর্বশেষ কেমো দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো না।

শর্মিলী আহমেদের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশে-বিদেশে এবং বিনোদন অঙ্গনে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক তারকাই তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।

অভিনেতা ডিপজল লিখেছেন, ‘চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের মায়াবী অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ ইন্তেকাল করেছেন! ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আমি তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। আমার অনেক কাছের ছিল, আল্লাহ তাকে বেহেস্ত নসিব করুক।’

চিত্রনায়ক ওমর সানী লিখেছেন, ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। দেশবরেণ্য অভিনেত্রী, একজন ভালো মনের মানুষ, শ্রদ্ধেয় শর্মিলী আহমেদ আন্টি আর নেই। আজ ভোর বেলায় তিনি রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেন। আমি তাকে মা বলতাম, অনেক ছবিতে কাজ করেছি এতো ভালো মানুষ ছিল, একটা পবিত্র দিনে ও উনি চলে গেলেন আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুন।’

নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী লিখেছেন, ‘এমন তো কথা ছিল না এতো তাড়াতাড়ি মা, শর্মিলী আহমেদ, তুমি কেন চলে গেলে মা? আজ ভোর সকালে? সেইদিন না এক সাথে খেলাম, কতো গল্প করলাম!
সবাই প্রার্থনা করবেন।’

নির্মাতা নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল লিখেছেন, ‘আমাদের সকলের মা, অভিভাবক শর্মিলী আহমেদ আজ সকালে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। ইন্নানিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহ উনাকে বেহেস্ত নসীব করুক আমিন।’

অভিনেত্রী রুনা খান লিখেছেন, ‘তার উপহার দেওয়া শাড়িতে আমার আলমারি ভরা। আর গত চার বছরে যে মমতা আর দরদ তিনি দেখিয়েন আমার প্রতি তা লিখে-বলে-বুঝিয়ে ব্যাখ্য করবার সাধ্য আমার নেই। একজন করে কাছের মানুষ চলে যায়, আর আমার আরো তীব্রভাবে মনে হতে থাকে, জীবন এতো ছোট! এই ছোট্ট জীবনে মানুষকে ভালোবাসা দেয়া, আর মানুষের ভালোবাসা পাওয়া ছাড়া আর কোনো কিছুই তেমন কোন অর্থ বহন করে না। আপনি অর্থপূর্ণ জীবন যাপন করে গেছেন আন্টি। মহান সৃষ্টিকর্তা সকল আত্মার শান্তি দিন।’

অভিনেতা সাজু খাদেম লিখেন, ‘কিংবদন্তি অভিনেত্রী আমাদের সকলের মা, অভিভাবক শর্মিলী আহমেদ আজ সকালে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।’

কন্ঠশিল্পী দিনাত জাহান মুন্নি লিখেছেন, ‘ঈদের এই ফটোসেশনে তিনি আমাদের মা হয়েছিলেন। তারপর থেকেই তাকে ‘মা’ই মনে হতো। প্রিয় ‘মা’ আল্লাহ আপনাকে জান্নাত দান করুন। দুনিয়ার মতোই স্বসম্মানে থাকুন পরপারে।’

সংগীত শিল্পী লুৎফুল হাসান লিখেছেন, ‘সমগ্র পৃথিবীতে দুই চারজন অভিনেত্রী আছেন, যারা মায়ের চরিত্রে অভিনয় করার সময় সবাই তাদের নিজের মা ভেবে নিতো। তাদের মধ্যে অন্যতম শর্মিলী আহমেদ। আজ চলে গেলেন। আল্লাহ তাকে ভালো রাখুন।’

কণ্ঠশিল্পী লোপা হোসাইন লিখেছেন, ‘নাটকে, চলচ্চিত্রে যাকে দেখলেই মা মা লাগতো, সেই মমতাময়ী অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।’

শর্মিলী আহমেদের প্রকৃত নাম মাজেদা মল্লিক। ১৯৪৭ সালের ৮ মে রাজশাহীতে তার জন্ম। রাজশাহী বেতারের শিল্পী ছিলেন তিনি। তার প্রথম সিনেমা উর্দু ভাষায় নির্মিত ‘ঠিকানা’ মুক্তি পায়নি। ষাটের দশকে নায়িকা হিসেবে সুনাম কুড়ান সুভাষ দত্তের ‘আলিঙ্গন’, ‘আয়না ও অবশিষ্ট’, ‘আবির্ভাব’ সিনেমায় অভিনয় করে। বেশকিছু উর্দু ভাষার সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।

স্বামী পরিচালক রূপকারের (রকিবউদ্দিন আহমেদ) ‘পলাতক’ সিনেমায়ও অভিনয় করেন শর্মিলী আহমেদ। স্বাধীনতার পরে ‘রূপালী সৈকতে’, ‘আগুন’, ‘দহন’ প্রভৃতি সিনেমায় অভিনয় করেন। ‘আগুন’ সিনেমায় প্রথম মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। তা ছাড়া কয়েকশ টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন শর্মিলী আহমেদ।

 



সংবাদটি শেয়ার করুন