ফিচার্ড লেখালেখি

বাইশের পঁচাত্তরতম স্বাধীনতা দিবসে ||  শীতল চট্টোপাধ্যায়

বাইশের পঁচাত্তরতম স্বাধীনতা দিবসে ||  শীতল চট্টোপাধ্যায়

স্বাধীনতার জন্য আগুন ছিল, ফাগুনকে – ফাগুনে না-চিনে, চেনা ছিল দেশ মুক্তির দায়, কাতরতা, যন্ত্রনার তীব্রতা, ছিল ঝড় – বৃষ্টি ও অন্ধকারের মধ্যে আলোকে খুঁজে নেওয়া, ছিল জেদ, ছিল কেড়ে নেওয়ার শক্তি সঞ্চার, ছিল- মিথ্যা, ছলনা, গোপনীয়তা, গুলি, বারুদ, বোমা, তরোয়াল, যুদ্ধসাজ, বক্ষ ঢাল ৷ ছিল -পরাধীন স্বদেশের প্রতি একাগ্র প্রেম, প্রীতি, আবেগ, অনুরাগ, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ৷ ছিল – উৎসর্গ করার জন্য জীবন সাজানো নৈবেদ্য৷
সেই জীবন আর রক্ত থেকেই ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট
সদ্যোজাত স্বাধীনতার মাথায় উঠল দু’শো বছরের চাওয়া, আশা – প্রত্যাশার বিজয় মুকুট ৷
সেই স্বাধীনতা ভারতবাসীর  অনুরাগে, শ্রদ্ধায়, সুরক্ষায়,
মর্যাদায়, হৃদয়ের অন্তস্থলে আগলে রাখার যত্নে, স্বাধীনতার সাথে জেগে থাকার প্রতিশ্রুতির জাগরণে৷
১৯৪৭ এর ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা প্রথম পাওয়ার দিনের ছোটবেলার যারা প্রবীণ মানুষে আজ, তাদের কাছে স্বাধীনতার সেই প্রথম ভোর, সেই সূর্য, সেই সকাল, চাক্ষুস করার সেই আনন্দ জোয়ার আছড়ে পড়ে আজও৷ আজও পঁচাত্তরের স্বাধীনতা দিবসে সারা ভারতবর্ষের নানান অনুষ্ঠানে তাদের উপস্থিতি এবং ভাষণের গল্পে সেই সাতচল্লিশের স্বাধীনতা জাগ্রত হওয়ার ঐতিহাসিক মুহূর্তকে, পরাধীনতার শিকল ছেঁড়ার তেজকে, গরাদ ভাঙার শক্তিকে নতুন করে উপস্থাপিত করেন কথায়, বক্তৃতায়, আলোচনায়, ছুঁইয়ে দেন নব প্রজন্মের নতুন ভারতীয় শৈশবে, কৈশোরে, তারুন্যে, যৌবনে৷ পঁচাত্তরের বর্ষীয়ান চোখ সামাজিক, মানবিক এবং দৈনন্দিনের নানান বিবর্তন, পরিবর্তন পেরিয়ে – পেরিয়েও পঁচাত্তরের স্বাধীনতাতে দাঁড়িয়েও অনায়াসের উজান বাওয়ায় পৌঁছে যান ১৯৪৭ এর ১৫ আগস্টে, মাথা নত করেন স্বাধীনতা জাগার প্রথম ক্ষণে, স্বাধীন ভারতবর্ষকে বুকের মধ্যে প্রথম জড়িয়ে ধরার অনুভূতিকে ফিরিয়ে আনেন বাইশের পঁচাত্তরতম স্বাধীনতা দিবসে৷
ওনাদেরই জীবন্ত চোখে বেঁচে আছে দেশের জন্য শহীদের – শহীদ পূর্বের চলমান জীবনের সচল মুহূর্ত, ফিরে দেখছেন তাদের স্বাধীনতার লক্ষ্যে রাত-দিন, ঝড় – বৃষ্টি, ভয়-সাহসে পেরিয়ে চলাকে, স্বাধীনতা পৌঁছানোর আগেই শুনেছেন এক চরম সত্যি খবরে নেতাজির হারিয়ে যাওয়াকে, হয়তো হারিয়েই তিনি হতে চেয়েছেন মৃত্যুঞ্জয়ী মর্মর মূর্তি বীর, হয়তো চেয়েছেন ভারতবর্ষ স্বাধীনতা পাওয়ার পরেই সারা ভারতবর্ষে ঘোড়া ছুটিয়ে আগলাবেন স্বাধীনতা, আগলানোর বার্তা দিয়ে চলবেন নিথর মূর্তিতে, নীরব ছবিতে, যা সত্যি স্বাধীনতার সত্যির বর্তমানে সেইভাবেই তিনি প্রকাশিত, দৃশ্যায়িত আজ৷
সেই নেতাজি, সেই যাঁরা দেশের জন্য শহীদ, তারপর তাঁরা প্রথম ১৫ আগস্ট থেকে পঁচাত্তরটি ১৫ আগস্টের তিরঙ্গা পতাকায় স্পন্দিত, ‘বন্দেমাতারম্ ‘দেশ বন্দনার গায়কিতে, উচ্চারণে জাগ্রত, স্বাধীনতা আনার জন্য স্বাধীনতার প্রনম্যে তাঁরা ৷

 


সংবাদটি শেয়ার করুন