সাহিত্য ও কবিতা

বিশ্বজিৎ মানিক -এর দু’টি কবিতা

বিশ্বজিৎ মানিক -এর দু’টি কবিতা

 

বিশ্বজিৎ মানিক-এর দু’টি কবিতা

ব্যাকরণ পাঠ
==========
বয়স তো হয়ে গেলো – দুই কম ষাট
বেলা শেষে শুরু হলো – ব্যাকরণ পাঠ।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমি – হয়েছি বেকার
এই কাজের ক্রেডিট – কোভিড করোনার।
বাংলা ব্যাকরণ কিন্তু – কঠিন বিষয়
ইহা পাঠেই ছিল – দ্বিধা আর সংশয়।
লিঙ্গের ইংরেজি পড়া – ভিষণ লজ্জার
নির্ধিদায় লিখেন তাহা – মহাশয় ডাক্তার।
টেবিলে লিখি আমি – চেয়ারে বসে
বিদেশী শব্দের প্রয়োগ – করছি অবশেষে।
আশা করি কেহ মোরে – দেবে না ‘আছাড়’
ব্যাকরণ বইয়ে-ই তার – আছে ব্যবহার।
সারমর্ম লিখতে কতো – আনন্দ না হতো
ভাব সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে – মাথা ঘোরাতো।
ক্লাসেতে কতদিন আমি – খেয়েছি যে মার
ব্যাকরণ কঠিন বিষয় – লব্ধ হয় না আর।
ধ্বনি, বর্ণ, সন্ধি, শব্দ – বচন ও সমাস
শুদ্ধ বাংলা শিখতে হলে – পড়বে বারো মাস।
পুরুষ, ধাতু, প্রত্যয়, পদ – বাংলায় অপরিহার্য
শিখতে হবে কাল,কারক – বিভক্তি ও উপসর্গ।
বাক্য গঠনের কত – কঠিন কঠিন ধারা
অনুসর্গ, প্রতিশব্দ আর – বাচ্য, বাগধারা।
প্রবাদে, সারাংশে আছে – হাস্য রসের উক্তি
ভাষা ও ব্যাকরণ পাঠে – আছে যার যুক্তি।
ভাবার্থ, রচনা আর – শিখলে অনুবাদ
ব্যাকরণ বইয়ের সাথে – থাকবে না বিবাদ।
ছেলে মেয়ে আছো যারা – এখন পাঠে রত
ব্যাকরণে ‘ বিরাম চিহ্ন ‘ – পড়বে অবিরত।
মোবাইল ফোনের কল্যাণে – পত্রের আকাল
চাকরির দরখাস্ত লিখতে – প্রার্থীরা হয় নাকাল।
সংস্কৃতে পড়েছিলাম – বচন তিন প্রকার
বাংলা ভাষায় ইহার – নেই কোন আকার।
ছাত্র ছাত্রী ভাই বোনেরা – পড়লে ব্যাকরণ
কোন কালেই পাবে না আর – লজ্জা অকারণ।
বাংলা ভাষা রক্ষার জন্য – দিল কতো প্রাণ
তোমরা যারা পড়ছো আজ – রাখো বাংলার মান।

৩০/০৪/২০২০ খ্রিস্টাব্দ।

 

প্রাকৃতিক বিপর্যয়
=============
ঊনত্রিশ বছর আগে – ঊনত্রিশে এপ্রিল
দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানে – ঘূর্ণিঝড় মলিন।
জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ হারালো – লক্ষ লক্ষ লোক
ঘুর্ণিঝড় এমন ছিল – পাথর হলো শোক।
দুই শত কিলোঃ বেগে – প্রবল ঘূর্ণিঝড়
ঝড়ের কবলে পড়ে – ধ্বংস বাড়ি ঘর।
বিশ ফুট জলোচ্ছ্বাসে – ডুবিয়ে দেয় সন্ধিপ
কুতুবদিয়া, মহেশখালী – বিচ্ছিন্ন সব দ্বীপ।
সুনামী আসে যখন – সাগরের বক্ষে
উপকূলের থাকে না – আর কোন রক্ষে।
ধ্বংস যজ্ঞ চালায় সে – যাহা চায় মন
সুনামির কষাঘাত – বড়ই নির্মম।
দক্ষিণাঞ্চলের ধ্বংসলীলা – এতোই করুন
কয়েক দিন উদিত হয় না- আকাশে বরুণ।
শ্রীহট্টে জন্মিয়া আমি – পাই মহাসুখ
এতদ্দেশে কদাচিত – হয় যে দুর্যোগ।
ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস – টর্নেডোর কালে
কৃষিক্ষেত্র, মৎস্যক্ষেত্র – ডুবে যায় জলে।
নিন্মাঞ্চলের ভূমে যারা – বসবাস করে
মহাকষ্ট পায় তারা – বন্যার ফলে।
ভূমিধস নামে আছে – আরো এক দুর্যোগ
বাঁচিতে নিতেই হবে – মানুষের উদ্দ্যোগ।
পাহাড় আর নদী পাড়েই – হয় বিপর্যয়
গাছ কাটা, পাহাড় কাটায় – না হলে সদয়।
ভুমিকম্প ডেকে আনে – মহা সর্বনাশ
পূর্বাহ্নে থাকে না কোন – যার পূর্বাভাস।
স্বল্প সময়েই সে – ধ্বংস যজ্ঞ চালায়
কার কি ক্ষমতা আছে – তাহাকে ঠেকায়?
আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত – দাবানলের সৃষ্টি
তার থেকে বাঁচার উপায় – যদি হয় বৃষ্টি।
বৃক্ষ সম্পদ, জীব বৈচিত্র্য – করে ফেলে নষ্ট
কখনও যে হয় তাহা – মানবেরই সৃষ্ট।
যুগে যুগে আসে কত – নামে মহামারী
কলেরা, বসন্ত, প্লেগ – সুখ পরি হরি।
বর্তমান কালেতে এলো – কভিড উনিশ
তাকে বধিতে পারে – পৃথ্বীর কোন বিষ?

২৯/০৪/২০২০ খ্রিস্টাব্দ।

* বিশ্বজিৎ মানিক-এর দু’টি কবিতা ১. ব্যাকরণ পাঠ ২. প্রাকৃতিক বিপর্যয়

 


সিবিএনএ/এসএস


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

 

সংবাদটি শেয়ার করুন