সেখানে প্রায় ৩৮ হাজার বাংলাদেশি রেজিস্ট্রেশন করেছেন। কিন্ত কমিউনিটি সূত্রের খবর অনিবন্ধত বা রেজিস্ট্রেশনের বাইরে আরও অন্তত ১৫-২০ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। অবৈধদের ফেরানোর চাপ দিনে দিনে জোরালো হচ্ছে জানিয়ে ঢাকার এক কর্মকর্তা বলেন, করোনা পরিস্থিতি যেন সেই চাপ বা আগুনে ঘি ঢালতে শুরু করেছে। করোনায় কর্মহীন বৈধ বাংলাদেশিদেরও এখন ১/২ মাসের আগাম বেতন দিয়ে ছুটিতে দেশে পাঠানোর নতুন চেষ্টা শুরু করেছে মালদ্বীপ সরকার। শ্রমিকদের তারা নানাভাবে উৎসাহিত করছে দেশ ফিরতে। সরকারী পর্যায়ে অবশ্য সরাসরি বৈধদের ফেরানোর চাপ অসেনি। মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান মানবজমিনের সঙ্গে বার্তা বিনিময়ে বৈধ বাংলাদেশিদের ছুটিতে পাঠাতে উৎসাহিত করার বিষয়টি শ্রমিক মারফত জেনেছেন বলে জানান। তার ভাষ্যটি ছিল এমন- ‘হ্যাঁ, প্রতিদিনই আমরা আমাদের প্রবাসীদের কাছ থেকে এমন তথ্য পাচ্ছি। বিশেষত যারা ট্যুরিজম সেক্টরে কাজ করেন তাদের কাছ থেকে।’ ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এই ক’দিনে একাধিকবার মালদ্বীপ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। মন্ত্রী এটা স্পষ্ট করেন যে দুনিয়ার সব দেশই করোনা সঙ্কটে। এ সঙ্কট বিশ্বময়। সবাই সঙ্কট মোকাবিলায় প্রাণপণ চেষ্টা করছে। মানবতার এই সঙ্কটে সব দেশকে মানবিকতা প্রদর্শনের অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা কোনো দেশ থেকেই এই পরিস্থিতিতে কাউকে ফেরানোর চিন্তা করছি না। তাঁর সঙ্গে আলাপে মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অবৈধ বাংলাদেশিদের জরুরি ভিত্তিতে ফেরানোর অনুরোধ করেছেন জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, তিনি আমাকে বলেছেন- করোনার কারণে পর্যটন বা রেস্টুরেন্ট খাতে কর্মহীন বৈধদের বিষয়টি তারা দেখবেন। সে ক্ষেত্রে অবৈধদের কষ্ট হবে। ফলে তাদের দ্রুত ফেরত আনাই ভাল। মন্ত্রী বলেন, আমি তাদের বলেছি বর্তমান সময়ে আমাদেরও অসুবিধা, তোমাদেরও অসুবিধা। তাই মানবাধিকারের বিষয়টি সামনে এনে এদের তোমরা সাহায্যে কর। উভয়ের সমস্যার কথা বিবেচনায় বাংলাদেশ জরুরি ভিত্তিতে মালদ্বীপে কিছু ত্রাণ ও করোনা মোকাবিলার সরঞ্জামাদি পাঠাচ্ছে বলে জানান তিনি।
৮৫ টন ত্রাণ ও মেডিকেল সরঞ্জামাদি যাবে নেভির জাহাজে: চাল, ডাল, আলু, পিয়াজ, ডিম এবং সবজি মিলিয়ে মোট ৮৫ টন খাদ্য সামগ্রী মালদ্বীপে পাঠাতে একটি আদেশ জারি করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। আদেশ মতে, ৪০ মেট্রিক টন চাল, ১০ মেট্রিক টন আলু, ১০ মেট্রিক টন মিষ্টি আলু, ৫ মেট্রিক টন পিয়াজ, ১০ মেট্রিক টন মসুর ডাল, ৫ মেট্রিক টন ডিম এবং ৫ মেট্রিক টন সবজি ত্রাণ সামগ্রী হিসেবে দেশটিতে যাবে। ত্রাণের চাল ছাড়া অন্যান্য সামগ্রী ক্রয়ের জন্য ৫০ লাখ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। এসব সামগ্রী ছাড়াও হ্যান্ড স্যানিটাইজার, জরুরী ঔষধ পত্র ও মাস্কসহ অন্যান্য সামগ্রী এই ত্রাণ সহায়তায় অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে তার চাহিদা পত্র দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দ্রুত মন্ত্রণালয় পাঠাতে বলা হয়েছে। এসব ত্রাণ সামগ্রী চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ক্রয় পূর্বক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে মালদ্বীপে প্রেরণের জন্য চট্টগ্রামের নিউমুরিং এ অবস্থিত নেভাল স্টোর ডিপোতে কমান্ডিং অফিসার ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেনের কাছে হস্তান্তর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদেশে উল্লেখ না থাকলেও সরকারী সূত্র বলছে, খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ১৫ তারিখে ত্রাণ সামগ্রী জাহাজ চট্টগ্রাম ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ৪-৫ দিনে তা গন্তব্যে পৌঁছানোর আশা করছে ঢাকা।