মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয় বাংলাদেশ
মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চীনকে টপকে দ্বিতীয় অবস্থানে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। দ্যা স্টেট অফ ওয়ার্ল্ড ফিসারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচারের একটি প্রতিবেদনে এ গ্রেড জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা গত দুই বছর থেকে মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে গুরুত্ব দেওয়ার কারণে আহরণ বেড়েছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মিঠা পানির মাছ উৎপাদন ১ দশমিক ২৫ মিলিয়ন টন হতে বৃদ্ধি পেয়ে ১ দশমিক ৩২ মিলিয়ন টনে উন্নীত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, চীনের মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ছিল ১.৪৬ মিলিয়ন টন এবং অবস্থান ছিল বিশ্বে দ্বিতীয়। আর বাংলাদেশের উৎপাদন ছিল ১.২৫ মিলিয়ন টন এবং অবস্থান ছিল বিশ্বে তৃতীয়। গত দুই বছরে বাংলাদেশের মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ১.২৫ মিলিয়ন টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১.৩২ মিলিয়ন টন এ উন্নীত হয়েছে। আর চীনের উৎপাদন ১.৪৬ মিলিয়ন টন থেকে কমে ১.১৬ মিলিয়ন টন হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ চীনকে টপকে ২য় অবস্থানে উন্নীত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত দুই বছরে মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে ইলিশ, দেশীয় প্রজাতির মাছ যেমন পাঙ্গাস, বোয়াল, আইড় ও অনান্য ছোট মাছ এবং কার্প জাতীয় মাছ। এর মধ্যে সর্বাধিক অবদান ইলিশ মাছের। বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনকারী ১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম। ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেল। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে সরকার কর্তৃক জাটকা সংরক্ষণ, ইলিশ প্রজনন সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন, ইলিশ অভয়াশ্রম ঘোষণা ও ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন হয়েছে ৫.৭১ লাখ মেট্রিক টন।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বিগত ১৪ বছরে মোট ৫ লাখ ৮ হাজার ৭১৬ দশমিক ৯৬ মেট্রিক টন মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও মা ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময়ে বিগত ৮ বছরে মোট ৮ হাজার ৩৩৪ দশমিক ৫৪ মেট্রিকটন ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ সব উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিঠা পানির মাছ আহরণে বাংলাদেশ চীনকে পেরিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে, বন্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে পঞ্চম স্থানের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে, ক্রাস্টাশিয়ান্স (খোলসযুক্ত মৎস্য জাতীয় প্রাণি যেমন: চিংড়ি, লবস্টার ইত্যাদি) উৎপাদনে বিশ্বে অষ্টম এবং সামুদ্রিক মাছ উৎপাদনে ১৪তম স্থান অধিকার করেছে।
মৎস ও প্রাণীসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘মিঠা পানির মাছের উৎপাদন বাড়াতে কারেন্ট জাল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলেরা আদালতে মামলাও করেছে। আশা করি এ মামলার বিষয়ে মহামান্য অদালত বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’
– সূত্রঃ জনকন্ঠ