মুক্তিযুদ্ধ

মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে ঢাকা

মুক্তিযোদ্ধারা

আসিফুর রহমান সাগর।।
একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক বেদনাবিধুর দিন। মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে বাঙালি জাতিকে চিরতরে মেধাশূন্য ও পঙ্গু করে দেওয়ার লক্ষ্যে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শিক্ষক, সাংবাদিক, ডাক্তার, আইনজীবী ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি পেশাজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের প্রাক্কালে এ দিন মুক্তিযুদ্ধের যৌথ কমান্ড মিত্রবাহিনীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে রাজধানী ঢাকা। দখলদার বাহিনীর সব কয়টি ডিভিশন ইতিমধ্যেই সেন্ট্রাল কমান্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

হানাদারদের উত্তর সেক্টরের ময়মনসিংহ ব্রিগেড ঢাকার পথে পশ্চাদ্পসরণ করলেও শেষ পর্যন্ত ঢাকা পৌঁছাতে পারেনি। তারা জয়দেবপুরে আটকে পড়ে। মিত্রবাহিনীর অবস্থানের কারণে দখলদার বাহিনীর উত্তর-পশ্চিম সেক্টরের ১৬তম ডিভিশন কিংবা পশ্চিম সেক্টরের ৯ম ডিভিশন কারো পক্ষেই পশ্চাদ্পসরণ করেও ঢাকার ডিফেন্সে এগিয়ে আসার কোনো পথ ছিল না। তাদের প্রতিটি ডিভিশন ইতিমধ্যে যৌথ বাহিনীর আক্রমণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। ইস্টার্ন কমান্ডের কিছু সেনা ঢাকায় আসতে পারলেও তাদের অধিকাংশ সেনা ইতিমধ্যে যৌথ বাহিনীর হাতে বন্দি হয়। বিভিন্ন রণাঙ্গন থেকে একের পর এক পরাজয়ের সংবাদে দখলদার বাহিনী তখন দিশেহারা ও পরাজয়ের আশঙ্কায় ভীত এক বাহিনী।

১৪ ডিসেম্বর দখলদার বাহিনী যখন ঢাকায় নির্দয়ভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যা করছে, ঠিক তখন যৌথ বাহিনী ঢাকার উপকণ্ঠে তুরাগ নদীর পশ্চিম পাড়ে পৌঁছে গেছে। পশ্চিম ও পশ্চিম-উত্তর দিক থেকে ঢাকাকে ঘিরে ফেলে মুক্তিবাহিনী তৈরি করে কালিয়াকৈর-সাভার-মিরপুর-ঢাকা বেষ্টনী। অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধের ৩ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধারা ১৪ ডিসেম্বর রাতে পৌঁছে যায় ঢাকার বাসাবোতে এবং দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি দল ডেমরায়।

মিত্রবাহিনীর কাছে খবর পৌঁছায় যে, চতুর্মুখী আক্রমণে দিশেহারা পাকিস্তানের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও হানাদার বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারা যুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যালোচনার লক্ষ্যে ১৪ ডিসেম্বর গভর্নর হাউসে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসবেন। মিত্রবাহিনী এ বৈঠক পণ্ড করার লক্ষ্যে ঢাকায় গভর্নর হাউসে বিমান হামলা চালায়। এ হামলায় গভর্নর হাউস ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উপায়ন্তর না দেখে ভীত-সন্ত্রস্ত পূর্ব পাকিস্তান মন্ত্রিপরিষদ পদত্যাগ করে। এসময় চট্টগ্রামে দখলদার বাহিনীর কামানের অবস্থানসহ গ্যারিসন, ওয়্যারলেস স্টেশন, জ্বালানি ডিপো ও বন্দরসমূহের ওপর ভারতীয় নৌ-বাহিনীর ক্রমবর্ধমান বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে তাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। সূত্রঃ ইত্তেফাকlooking-for-a-job


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 2 =