যেভাবে পালিয়ে বাঁচলেন সিনেটররা
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে সিনেটরদের ভরা সভা চলছে। এই সভা শেষেই সরকারি ভাবে জয়ী ঘোষণা করা হবে গত ৩রা নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পাওয়া বাইডেনকে। কিন্তু এর আগেই ঘটনা পাল্টে দিতে ক্যাপিটল হিলে হামলা চালালো বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রামেপর সমর্থকরা।
হলিউডের সিনেমা ছাড়া এর আগে কেউ ক্যাপিটলে এরকম হামলা দেখেনি। কমান্ডো স্টাইলে হামলা চালিয়ে সিনেটরদের জিম্মি করতে চেয়েছিল ট্রামপ সমর্থকরা। নজিরবিহীন এ হামলা থেকে প্রাণ বাঁচাতে সুড়ঙ্গ পথ ব্যবহার করতে বাধ্য হলেন সিনেটররা। অবশেষে রক্ষা পেলেন তারা। পেছনে ফেলে এলেন ভীতিকর এক স্মৃতি।
কীভাবে হামলা হয়েছিল ক্যাপিটল হিলে তা এরইমধ্যে সপষ্ট হয়ে এসেছে। ভেতরে যখন আলোচনা চলছে বাইরে তখন তাণ্ডব চালাচ্ছেন ট্রামপ সমর্থকরা। ক্যাপিটলের দরজা সব বন্ধ থাকায় প্রথমে অবস্থার ভয়াবহতা আঁচ করতে পারেনি কেউই। দরজায় দরজায় প্রস্তুত ছিলেন বন্দুকধারী নিরাপত্তারক্ষীরা। তবে অবস্থা দ্রুতই খারাপ হয়ে গেল। ক্যাপিটলের ভেতরে ঢুকতে মরিয়া হয়ে ওঠে ট্রামপ সমর্থকরা। বাইরে শুরু হয় তুমুল হট্টগোল। হাজার হাজার জনতার চিৎকার শোনা যায় ভেতর থেকে। সিনেটররাও বাইরে উঁকি মারতে থাকেন পরিস্থিতি বোঝার জন্য। ভেতরে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই দলের সিনেটররা, ছিলেন সাংবাদিকরাও। পরিস্থিতি বুঝতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তারা সবাই।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এরকম ঘটনা কখনো ঘটেনি। ট্রামপ সমর্থকদের হাত থেকে সিনেটরদের বাঁচাতে ক্যাপিটলের দরজাগুলো আটকে দিচ্ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। ভেতরে খবর যেতেই তোপের মুখে পড়েন রিপাবলিকান সিনেটররা। তাদের দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ- ‘ডাকুন আপনার নেতাকে! ওর জন্যই তো এসব হচ্ছে।’
তবে ভয়াবহ কাণ্ডটা শুরু হলো এর পরেই। দরজায় আছড়ে পড়তে শুরু করেন ট্রামপ সমর্থকরা। ফলে ভেতর থেকে আসবাবপত্র দিয়ে দরজা ঠেলে ধরে থাকেন কর্মরত পুলিশ। বাইরে ফেলা হয় টিয়ার শেল। তবে তাতেও নিরস্ত্র হয় না উগ্র জনতা। হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির ফ্লোর ডিরেক্টর কেইথ স্টার্ন বলেন, ‘প্রত্যেকে নিজের নিজের আসনে বসে পড়ুন। শান্ত থাকুন। সিটের নিচে রাখা গ্যাস মাস্ক পরে নিন সবাই’। যেকোনো সময় যেকোনো দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকতে পারে বাইরের আতঙ্ক। গোড়ার দিকে যেটা ছিল কৌতূহলের বিষয়, সেটাই হয়ে দাঁড়ালো বিভীষিকা।
সিনেটরদের জীবন বিপন্ন বুঝে আর ঝুঁকি নেননি ক্যাপিটলের নিরাপত্তা অফিসাররা। সিনেটরদের বললেন, সুড়ঙ্গ দিয়ে নিরাপদ কক্ষে পৌঁছে যেতে। সে ভাবেই ফাঁকা করা হলো ক্যাপিটল। হাউস সার্জেন্টকে কোনো এক নিরাপত্তা অফিসারকে নির্দেশ দিতে শোনা যায়, ‘ক্যাপটলকে আমরা যেন নিরাপদ রাখতে পারি, সেটা নিশ্চিত করুন।’ শেষ পর্যন্ত নিরাপদে পার পেয়ে যান সিনেটররা।
এস এস/সিএ