বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) লোগো
লকডাউন যথেষ্ট নয়, দরকার আরও জরুরি পদক্ষেপ ।। বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় একে রুখতে এরই মধ্যে সব দেশেরই বড় শহরগুলো লকডাউন করা হচ্ছে। গণপরিবহন, হোটেল, রেস্তোরাঁ, বিমানবন্দর, শপিংমল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রেখে জনসাধারণকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ঘরে অবস্থান করতে; কিন্তু এর পরও কোনোভাবেই করোনাকে পরাস্ত করা যাচ্ছে না। যার প্রমাণ পশ্চিম ইউরোপের দেশ ইতালি ও স্পেন। দেশ দুটির রাজধানী রোম ও মাদ্রিদসহ অনেক শহর লকডাউন থাকার পরও হু হু করে সেখানে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এমন অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) জরুরি পরিস্থিতি বিশেষজ্ঞ মাইক রায়ান।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. রায়ান বলেন, ‘করোনা পরাস্তে শুধু লকডাউন যথেষ্ট নয়, বরং আবার এই ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বের সঙ্গে যে কাজটি করতে হবে তা হলো- যারা এই ভাইরাসের সংক্রমণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তাদের খুঁজে বের করা। এর পর তাদের অন্যদের কাছ থেকে আলাদা করে একা রাখতে হবে। আমরা যদি শুধু লকডাউন করেই হাত গুটিয়ে বসে থাকি, তা হলে তা উঠে যাওয়ার পর ফের এ ভাইরাস হানা দিতে পারে। তখন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।’
চীন, সিঙ্গাপুর এবং দক্ষিণ কোরিয়া যেভাবে তাদের শহরগুলো লকডাউনের পাশাপাশি সন্দেহভাজন রোগীর পরীক্ষা করেছে, ঠিক সেভাবেই অন্য দেশগুলোকে একই তৎপরতা দেখানোর পরামর্শ দেন তিনি।
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, গতকাল রবিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ১৯০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৮৮১ জন এবং প্রাণ গেছে ১৪ হাজার ৪৪৪ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৯৬ হাজার ৯৫৮ জন। আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষ ৫ দেশ হলো চীন (৮১০৫৪), ইতালি (৫৯১৩৮), যুক্তরাষ্ট্র (৩৮১৬৫) স্পেন (২৮৬০৩), ও জার্মানি (২৪৭১৪)। মৃতের সংখ্যায় শীর্ষ পাঁচ দেশ হলো- ইতালি (৫৪৭৬), চীন (৩২৬১), স্পেন (১৭৫৬), ইরান (১৬৮৫) ও ফ্রান্স (৫৬২)। গতকাল ২৪ ঘণ্টায় ইতালিতে ৬৫১, স্পেনে ৩৭৫, ইরানে ১২৯, যুক্তরাষ্ট্রে ৯৪, যুক্তরাজ্যে ৪৮, নেদারল্যান্ডসে ৪৩, ইন্দোনেশিয়ায় ১০, বেলজিয়ামে ৮, অস্ট্রিয়ায় ৮, ইক্যুয়েডরে ৭, সুইজারল্যান্ডে ৫, চীনে ৬, ফিলিপাইনে ৬, জার্মানিতে ৮, ফিলিপাইনে ৬, ইরাকে ৩, হাঙ্গেরিতে ২, গ্রিসে ২, পোল্যান্ডে ২, দক্ষিণ কোরিয়ায় ২, পর্তুগালে ২, মালয়েশিয়ায় ২, রোমানিয়ায় ২, ভারতে ২, তিউনিসিয়ায় ২, কলম্বিয়ায় ২, আলজেরিয়ায় ২, হাঙ্গেরিতে ২ এবং উত্তর মেসিডোনিয়া, স্লোভেনিয়া, অস্টিয়া, সুইডেন, কানাডা, সার্বিয়া, কম্বোডিয়া, অ্যানডোরা, বুরকিনা ফাসো, বাহারাইন, আফগানিস্তান, মরিশাস ও গুয়ামে একজন করে মোট ১৪৩৭ জন প্রাণ হারিয়েছে।