দেশের সংবাদ

লন্ডনে করোনার নতুন ধরনে আতঙ্কে সিলেটি প্রবাসীরা

লন্ডনের ট্রেন স্টেশন সেইন্ট প্যানক্রাস। ফাইল ছবি। রয়টার্স

লন্ডনে করোনার নতুন ধরনে আতঙ্কে সিলেটি প্রবাসীরা

লন্ডনে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সেইসঙ্গে যোগ হয়েছে করোনার নতুন ধরন। দিন দিন আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়ায় লন্ডনে বসবাসরত সিলেটি প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। করোনার প্রভাব যদি আরও বাড়ে, তাহলে লন্ডনে দেখা দিতে পারে খাবারের সংকট। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, লন্ডনে এখন তেমন কোনো সংকট দেখা দেয়নি।

বৃটেনে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৭ হাজার ৭২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন ৪৪৫ জন। সরকারি হিসাবে, এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ লাখ এবং মৃত্যু ৭৫ হাজার পাড়ি দিয়েছে। অবশ্য মরদেহের সার্টিফিকেট হিসাবে এ সংখ্যা ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে। সংকট আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন।

ওয়েলেসে ২,৭৬৪টি নতুন সংক্রমণ রেকর্ড করা হয়েছে এবং মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৫১ হাজার ৩০০ জন হয়েছে। জনস্বাস্থ্য ওয়েলস জানিয়েছে, সেখানে ৭০ জন মারা গেছেন। মার্চ মাসের পর থেকে মোট মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৪৬ জন।

লন্ডনের বামিং হামের বাসিন্দা সিলেটের রুমিন চৌধুরী বলেন, লন্ডনে করোনায় আক্রান্তদের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। সেই সাথে ভয়ে কেউ কাজে যাচ্ছেন না। রাস্তাগুলো প্রায় ফাঁকা বলা যায়। জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। অনেকেই খাবার ক্রয় করে ঘরে রিজার্ভ করে রাখছেন।

রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ান্সের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর গড্ডার্ড বলেছেন, ক্রিসমাসের বড় প্রভাব পড়তে পারে তাতে সন্দেহ নেই। ভাইরাসের নতুন রূপটিও বড় প্রভাব ফেলবে। আমরা জানি যে, এটি আরও ভ্যারিয়েন্ট, আরও সংক্রমণযোগ্য। তাই আমি মনে করি, সাউথ ইস্ট লণ্ডন ও  সাউথ ওয়েলসে আগামী ২ মাসে বৃহৎ সংখ্যক আক্রান্ত হতে পারেন। এমনকি দুই মাস ধরে তা প্রতিফলিত হতে পারে দেশের বাকি অংশে।

৩৯টি এনএইচএস হাসপাতালের আস্থাভাজন ২৯টি ক্যান্সার সম্পর্কিত রোগের এবং জরুরি সমস্যাগুলোর বিষয়ে ইলেকট্রিক সার্জারি স্থগিত করা হয়েছে। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে হাসপাতালগুলো সংকট অনুভব করতে শুরু করে এবং এখন দেশের অনেক জায়গায় হিপ বা হাঁটু প্রতিস্থাপনের জন্য নির্ধারিত অপারেশন, কান, নাক এবং গলার অপারেশনও বাতিল করতে হয়েছে।

কয়েক মাস ধরে বেদনা বা অচল অবস্থার জন্য অপেক্ষায় থাকা কয়েক হাজার মানুষ এই ক্রিসমাসে তাদের অপারেশন বাতিল বা স্থগিত হওয়ায় খুব খারাপভাবে হতাশ হচ্ছেন। একজন নার্স হসপিটালের বেপরোয়া পরিস্থিতি তুলে ধরে রোগীদের অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়া এবং করিডোরে সারিবদ্ধ অ্যাম্বুলেন্স দেখাচ্ছিলেন। বলছিলেন, হাসপাতালের বেড ও আইসিও সব ক্ষেত্রেই সংকট বেড়েছে।

রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসের প্রেসিডেন্ট নীল মর্টেনসেন বলেছেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর যে সমস্যা রয়েছে তা ধীর গতিতে গাড়ি দুর্ঘটনা দেখার মতো। তিনি আরও বলেছেন, লোকেরা কাজ করতে রেস্তোঁরা ও দোকানে ফিরে যাওয়ার সাথে সাথে নতুন সংক্রামক রূপটি ইংল্যান্ডের দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে।

এদিকে, গত বুধবার অক্সফোর্ড-এস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন অনুমোদিত হয়েছে। এখন থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন ডোজ সরবরাহের আশ্বাস পাওয়া যাচ্ছে। সূত্রমতে আগামী সপ্তাহে ২০ লাখ ডোজ সরবরাহ দেবে এস্ট্রাজেনেকা। এরপর উৎপাদন আরো বাড়ানো হবে। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করা হবে। এভাবে  প্রতি সপ্তাহে প্রায় ২০ লাখ ডোজ সরবরাহ দেয়া হবে। আশা করা হচ্ছে, এটা তীব্র গতিতে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করবে।

বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এস্ট্রাজেনেকার কাছ থেকে ১০ কোটি ডোজ কেনার অর্ডার দিয়েছেন। কোম্পানি বলেছে, বছরের প্রথম চতুর্থাংশে কয়েক লাখ ডোজ সরবরাহ দেয়ার চেষ্টা করবে। করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণ ঠেকাতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা যতটা সম্ভব বেশি মানুষকে টিকা দিতে চান।

-বিডি প্রতিদিন


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন