সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কানাডায় ব্যতিক্রমী ঈদ উদযাপন
কানাডার বিভিন্ন স্থানে পালিত হয়েছে ঈদ-উল-আজহা। প্রবাসী বাঙালিরা এ বছর ব্যতিক্রমী উদ্যোগে বিভিন্ন ভাবে পালন করে এবারের ঈদ। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত পরিসরে মিলিত হয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন একে অপরের সাথে ।
কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশিরা সাধারণত ঈদের নামাজ শেষে চলে যান কোরবানি দিতে। কিন্তু এবছর ছিল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। কোভিড-১৯’র কারনে প্রবাসীরা অনেকেই ঘরে ভার্চুয়ালি নামাজ আদায় করেন। শুক্রবার (৩১ জুলাই) কানাডায় কর্মময় দিবস থাকায় অনেকেই ঘরে নামাজ পড়ে অফিসে চলে যান।
কানাডায় নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানি দেয়া বাধ্যতামূলক। নির্ধারিত ফার্মগুলোতেই কোরবানি দিয়েছেন প্রবাসীরা। ঈদের দিনে কারও কারওও কর্ম দিবস থাকায় খুব ভোরে নতুন পোশাক পরে অনেকেই আগেই বের হয়ে পড়েন ঈদের নামাজ আদায় করতে। প্রবাসী বাঙালিদের নিজস্ব মসজিদ ছাড়াও বিভিন্ন কমিউনিটির মসজিদে প্রবাসীরা নামাজ আদায় করেন। কানাডার বিভিন্ন মসজিদে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
মসজিদে নামাজ শেষে প্রবাসীরা পরিবার পরিজন নিয়ে বের হন। ঘুরতে যান স্বল্প পরিসরে বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয় স্বজনের বাসায়। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সবাই একত্রিত হয়ে মেতে ওঠেন নানা গল্প আর আড্ডায়। উঠে আসে ঈদ আনন্দের সাথে কোভিড-১৯’র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি। দেশের বর্তমান অবস্থা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয়।
ক্যালগেরির মতই অটোয়া, টরেন্টো, মনট্রিলসহ কানাডা জুড়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঈদ উদযাপন করলেও কোথায় যেন ছিল এক শূন্যতা। সাম্প্রতিক সময়ের কোভিড-১৯ আর গত ৬ মাসে প্রিয়জন হারানোর বেদনা প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ঈদের দিনে সন্ধ্যায় বাঙালির চিরাচরিত আড্ডার পাশাপাশি চলে ঈদ উপলক্ষে নানা সুস্বাদু খাবার। বিরিয়ানি, পোলাও, কোর্মা, মাংসের চপ, রোস্ট, জর্দা আর গৃহবদধূদের নিজ হাতের তৈরি দইসহ নানামাত্রিক রান্না করা খাবার। থাকছে মধু মাসের মধু ফল আমও। প্রবাসীদের মহামিলনের পাশাপাশি প্রবাস থেকে দেশের আত্মীয় স্বজনের সঙ্গেও চলে টেলিফোনে আলাপচারিতা।
এবিএম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট ড. মো. বাতেন বলেন, ‘বাংলাদেশের মত আনন্দ করে এখানে ঈদ হয় না। আর তাছাড়া এ বছর দু’টি ঈদ ই আমরা পালন করলাম এক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে। বিশ্ববাসী আজ এক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে দিন অতিক্রম করছে । এমন ঈদ তো কখনোই কাম্য নয়। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা’।
ঈদের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ক্যালগেরির টমবেকার ক্যানসার সেন্টারের ক্লিনিক্যাল রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর আহমেদ হোসেন শাহিন বলেন, জীবন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে, শৈশবের সেই আনন্দের ঈদ আর কখনোই আসবে না। সেই দিন সময় আর কখোনই ফিরে পাবার নয়। ব্যস্ততাময় এই প্রবাস জীবনে পরিবার আর বন্ধুবান্ধবদেও নিয়ে যদিও ঈদ করি, কিন্তু সেই সময়ের ঈদ এখন কেবলই স্মৃতি। আশাকরি কোভিড -১৯ এর অবস্থা থেকে আমরা খুব শীঘ্রই মুক্তি পাব। সবাইকে ঈদ মোবারক।
ঈদের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ক্যালগেরির মইদুল অনু বলেন, ঈদ আবার আসবে কিন্তু শারীরিক সুস্থতাতাই এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ। ঘরে বসেই ঈদ পালন করছি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রয়োজন না হলে সবাই কে ঘরে থাকার ও পরামর্শ দেন তিনি।
ক্যালগেরির বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী সোহাগ হাসান আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন, সবই আছে শুধু সময়টাই নেই। ঈদের দিন সময় বের করে বাংলাদেশের আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধবদের সাথে ফোনে কথা হয়। শুধু এতটুকুই। সময় বড়ই নিষ্ঠুর ইচ্ছে করলেই সব কিছু হয় না। তবু প্রবাসের ঈদ পরিবার পরিজন নিয়ে উপভোগ করি আনন্দ করি।
ঈদের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ক্যালগেরির মাহমুদ হাসান দীপু বলেন, খুব মিস করি শৈশবের সেই আনন্দের ঈদকে। সেই সময় আর কখোনই ফিরে পাবার নয়। ব্যস্ততাময় এই প্রবাস জীবনে পরিবার আর বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে যদিও ঈদ করি, কিন্তু সেই সময়ের ঈদ এখন কেবলই স্মৃতি।
ঈদের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ক্যালগেরির এক্সপ্লোর ইমিগ্রেশনের আনোয়ারুল করিম হিরু বলন, শৈশবের সেই আনন্দের ঈদ আর কখনোই আসবে না। সেই দিন সময় আর কখোনই ফিরে পাবার নয়। ব্যস্ততাময় এই প্রবাস জীবনে পরিবার আর বন্ধুবান্ধবদেও নিয়ে যদিও ঈদ করি, কিন্তু সেই সময়ের ঈদ এখন কেবলই স্মৃতি।
-বিডি-প্রতিদিন
সিএ/এসএস
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন