সৌদি প্রবাসীকে একসঙ্গে তিন ডোজ টিকা!
সৌদি আরবে যাওয়ার আগে করোনা প্রতিরোধী টিকা নিতে সোমবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আসেন নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ওমর ফারুক। তবে না বুঝেই তিনটি বুথ থেকে তিন ডোজ টিকা নেন তিনি।
একজন ব্যক্তি তিন ডোজ টিকা কীভাবে নিলেন, সেই ব্যাখ্যা নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে তারা বলছেন, তিন ডোজ টিকা নেয়া ওমর ফারুক বর্তমানে পর্যবেক্ষণে আছেন। বাড়তি টিকা নেয়ায় কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এখনও দেখা দেয়নি।
টিকা নেয়ার পর ওমর ফারুক একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে বলেন, আমি যখন প্রথমে টিকাকেন্দ্র ঢুকলাম, তখন একজন ইশারা দিয়ে ডান সাইটে যেতে বললেন। ওখানে গিয়ে এক ডোজ টিকা নিলাম। টিকা দিয়ে উনি সামনের দিকে যেতে বললেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য একজন ব্যক্তিকে দুই ডোজ টিকা দিতে হবে। প্রথম ডোজ নেয়ার চার সপ্তাহ বা আট সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হয়। সাধারণত টিকা দেয়ার পর টিকা কার্ডে সেটি উল্লেখ করতে হয়।
নিয়ম অনুযায়ী টিকা নেয়ার পর প্রত্যেক ব্যক্তিকে ৩০ মিনিট পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। এমনকি টিকা নেয়া ব্যক্তির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখার জন্য একজন চিকিৎসকের নম্বর দেয়া হয় টিকা কার্ডে। কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে মোবাইল ফোনে জানানোর পরামর্শ রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
ওমর ফারুকের তিনবার টিকা নেয়ার বিষয়টির পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিতে পারেননি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনার টিকাদান কার্যক্রমের সমন্বয়ক খোরশীদ আলম।
তিনি বলেন, ‘একজন সুস্থ মানুষ কোনো দিন এক দিনে তিন ডোজ টিকা নিতে পারেন না।’
তবে ওমর ফারুককে কেন তিন ডোজ টিকা দেয়া হলো, জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
বিষয়টি কীভাবে ঘটল জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এমন ঘটনা কীভাবে হলো, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে জানতে চেয়েছি। এমনকি সেই ওমর ফারুককেও ডাকা হয়েছে। তিনি এলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
এ বিষয়ে কোনো তদন্ত কমিটি করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। তবে টিকাকেন্দ্র কর্মকর্তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।’
উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার খোঁজখবর রাখছে। তিনি স্বাভাবিক ও সুস্থ রয়েছেন।’
এক দিনে তিন ডোজ টিকা নিলে কী ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, সে বিষয়ে জানতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির সাবেক প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাজুল ইসলাম বারির সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু করোনাভাইরাসের টিকা এমআরএল প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি, সে ক্ষেত্রে এক দিনে তিন ডোজ টিকা নিলেও তেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ার কথা নয়। তবে টিকার উপাদান মানবদেহে মিশতে সময় লাগে তিন দিন। তাই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ করার জন্য কমপক্ষে সাত দিন তাকে (ওমর ফারুক) পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন। এর মধ্যে যদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না দেখা যায়, তাহলে কিছুই হবে না।’
তিনি বলেন, একবারে তিন ডোজ টিকা নিলেও ওমর ফারুককে আবার নির্ধারিত সময় পর আরেকটি ডোজ টিকা নিতে হবে। ফলে সব মিলিয়ে চার ডোজ টিকা পাচ্ছেন ওমর।
ওমর ফারুকের অবস্থান জানতে যোগাযোগ করা হয় নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ আহম্মেদের সঙ্গে। তবে তিনি ওমরের বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
ডা. ইমতিয়াজ বলেন, নারায়ণগঞ্জে ১০০ শয্যা জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে প্রবাসীদের টিকা দেয়া হয়। যারা এখানে রেজিস্ট্রেশন করেন তারা টিকা নিয়ে থাকেন। যিনি বিএসএমএমইউ থেকে টিকা নিয়েছেন তিনি সেখানে নিবন্ধন করেছেন। এ কারণে আমাদের কাছে ওই ব্যক্তির কোনো তথ্য নেই।
সিভিল সার্জন বলেন, যিনি তিনবার টিকা দিয়েছেন তার কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে দুটি ডোজ নষ্ট হলো, যা অন্যরা দিতে পারতেন। আমরা এ ধরনের ঘটনা চাই না। যারা দায়িত্বে আছেন, তাদের আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। –আমারসংবাদ
এস এস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান