বেগুন-টমেটোর দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগির মাংস! ⇔৩৮০ বার জিন বদলেছে করোনা! বিজ্ঞানীদের ঘুম হারাম⇔করোনাভাইরাস: সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে ৩৩ দেশে স্কুল-কলেজ বন্ধ⇔করোনার ঝুঁকি এড়াতে কিছু অ্যাকাউন্ট স্থগিত করবে উবার!⇔যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০⇔করোনা আতঙ্কে নির্বাচনী প্রচারণা বাতিল যুক্তরাষ্ট্রে⇔করোনা রোগীদের সেবায় মারা যাওয়া ডাক্তার-নার্সদের ‘শহীদ’ ঘোষণা দিল ইরান⇔করোনা রুখতে ভারতে বিশুদ্ধ গোমূত্রের ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজার’!⇔করোনার প্রভাবে এশিয়া ও বিশ্ব একাদশের ম্যাচ স্থগিত⇓
১১ মার্চের বিশ্ব করোনা সংবাদ ।। করোনাভাইরাস আতংকে বেগুন-টমোটোর দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগির মাংস। পশ্চিমবঙ্গের বাজারে যেখানে কয়েকদিন আগেও প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হয়েছিল ১০০ টাকার উপরে। সেখানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মুরগির দাম নেমে এসেছে ৬০ টাকায়। আর পাইকারি বাজারে মুরগির দাম নেমে এসেছে ৩৫-৪০ টাকায়। কলকাতার গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, বার্ড ফ্লুর সময়েও মুরগির দাম এত নিচে নেমে আসেনি।
পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার বেহালা থেকে বেলেঘাটা, গড়িয়া থেকে লেক মার্কেটসহ কলকাতার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতি কেজি বেগুনের দাম ৪০-৫০ টাকা। টমেটোর দাম ৪০ টাকা। আর শশার দাম ৩০ টাকা। অন্যান্য শাক-সবজিও বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকার মধ্যে।
বলা হচ্ছে, বিক্রেতারা সাধাসাধি করেও ক্রেতাদের মুরগি কেনাতে হিমশিম খাচ্ছেন। বলা হচ্ছে এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে পাঠার মাংসের বিক্রেতারা। মুরগির মাংসের সাত গুণ দাম নিচ্ছেন তারা।
ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মদনমোহন মাইতি বলেন, ফ্রেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রাজ্যটিতে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতির মুখ পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে কত কোটি টাকার ক্ষতি হবে এখনো বোঝা যাচ্ছে না।
বেহালা সরসুনার সুপার মার্কেটে মুরগির মাংস বিক্রেতা বাপি দাস জানন, হঠাৎ করে গুজব রটে গেল, মুরগির মাংস খেলে করোনাভাইরাস আক্রমণ করবে। এরপরেই এ ব্যবসায় ধস নেমেছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, করোনা-আতংকের জেরে মুরগির মাংসের বিক্রি ৬০ শতাংশ কমেছে। প্রতি সপ্তাহে রাজ্য জুড়ে ২ কোটি ৪০ লাখ কেজির মতো মুরগির মাংস উৎপাদন হয়। রাজ্যে চাহিদা রয়েছে ২ কোটি কেজির কাছাকাছি। এখন বেশি পরিমাণে উৎপাদন হচ্ছে। বিদেশেও রফতানি করা হয়। রাজ্যে প্রায় ৫ লাখ পোল্ট্রি রয়েছে।
৩৮০ বার জিন বদলেছে করোনা! বিজ্ঞানীদের ঘুম হারাম
বারবার নিজের জিন বদলে উত্তোরত্তর ভয়াবহ হয়ে উঠছে করোনাভাইরাস। এরই মধ্যে সে টিকে থাকার স্বার্থে ৩৮০ বার নিজের জিন বদলে ফেলেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কোভিড-১৯ এর এই জিন মিউটেশনই ভয়ের আসল কারণ। যার জেরে বিশ্বের সব বিজ্ঞানীদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে আমজনতার মধ্যেও। মাঝেই মাঝেই শোনা যাচ্ছে এবারে এই ভাইরাসকে জব্দ করা যাবে ভ্যাকসিন দিয়ে। কিন্তু প্রতিষেধক কতটা কাজের কাজ করতে পারবে সেই নিয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরাও চিন্তায় পড়েছেন।
হিউম্যান প্যাথোজেনিক ভাইরাসের সংক্রমণজনিত অসুখের এক গবেষকের মতে, এতো কম সময়ের মধ্যে ঘন ঘন জিন মিউটেশন করে নিজের চরিত্র বদলে ফেলছে এই ভাইরাস। তাই একে রুখতে সুনির্দিষ্ট কোনও ওষুধ ব্যবহার করা মুশকিল।
প্রায় দুদশক ধরে করোনা গোত্রেরই ভাইরাস নিয়ে চিকিৎসকরা চিন্তিত। চীনের উহান থেকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এই কোভিড-১৯ ভাইরাসের ১৮ বছর আগে সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম বা সার্সও ঘুম কেড়ে নিয়েছিল চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের। সার্স রোগাক্রান্তদের মধ্যে মারা পড়তেন প্রায় ১০ শতাংশ। মার্স বা মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোমও ২০১২ সালে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। তখন দ্রুত ভ্যাকসিন তৈরি করে তার সাহায্যে রোগের বাড়বাড়ন্ত আটকে দেয়া হয়। কোভিড-১৯ সেই গোত্রেরই জীবাণু। তবে আগের ভাইরাসদের থেকে এর কিছু চরিত্রগত তফাৎ আছে। তাই প্রতিষেধক নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চললেও কোনও কার্যকর ভ্যাকসিন বা ওষুধ বানানো মুশকিল হয়ে পড়ছে।
গবেষকরা এখন হোস্ট ডিরেক্টেড থেরাপির কথা ভাবছেন। ব্যাপারটা হলো, মানুষের জিনের যে প্রোটিনের উপর কোভিড-১৯ ভাইরাস বেড়ে ওঠে, তাকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়া। তাদের ধারণা, তা হলেই হয়তো এই ভাইরাসের খেল খতম হবে।
প্রায় দুদশক ধরে করোনা গোত্রেরই ভাইরাস নিয়ে চিকিৎসকরা চিন্তিত। নভেল করোনাভাইরাসের চরিত্রগত বিশ্লেষণ করে ইতিমধ্যই গবেষকরা বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেছেন।
• কোভিড-১৯ ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমেই বাড়িয়ে চললে শিশুদের বিশেষ কোনও ক্ষতি করতে পারে না। এই ভাইরাসের কবলে পড়লেও শিশুরা ক্রমশ সুস্থ হয়ে ওঠে। শিশুদের তুলনামূলক ভাবে পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখা হলে সংক্রমণের ঘটনাও কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।
• নারীরাও কোভিড-১৯ ভাইরাসের থাবা থেকে কিছুটা নিরাপদ। এর কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, মেয়েদের মধ্যে অটোইমিউন ডিজিজের (শ্বেতী, এসএলই, থাইরয়েড ইত্যাদি) প্রবণতা বেশি হওয়ায় কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে তারা বেশির ভাগ সময়ই জিতে যান। শরীর কোনও না কোনও অ্যান্টিবডি তৈরি করে ফেলে। তাই আক্রান্ত মেয়েদের মৃত্যুহার অনেক কম।
• ধূমপায়ী পুরুষদের মধ্যে এই অসুখের মারাত্মক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। মনে করা হচ্ছে যে, ধূমপানের ফলে শ্বাসনালী ও ফুসফুসের লাইনিং কিছুটা কমজোর থাকে। তাই কোভিড-১৯ ভাইরাস এদের শ্বাসনালী ও ফুসফুসকে আক্রমণ করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
• কোভিড-১৯ আক্রান্ত অশীতিপর বয়স্কদের মৃত্যু হার সব থেকে বেশি। কারণ এদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হয়।
• কোভিড-১৯ ভাইরাসের বড় সড় সংক্রমণে শুধুই যে শ্বাসনালী ও ফুসফুস আক্রান্ত হয় তা নয়, ইন্টেস্টাইনের আবরণ একেবারে নষ্ট করে দেয়। শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ হু হু করে কমে যেতে শুরু করে। ক্রমশ মাল্টি অরগ্যান ফেলিওরের দিকে এগোয়।
• কিছু কিছু অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ব্যবহার করা হলেও খুব যে কার্যকর তা এখনও বলা যাচ্ছে না।
• অনেকেরই ধারণা, গরম পড়লে কোভিড-১৯ ভাইরাসের দাপট কমবে। কিন্তু এই ভাইরাসের জিন মিউটেশনের ধরন দেখে এখনই এ বিষয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
• কোভিড-১৯-এর হাত থেকে বাঁচতে ন্যুনতম ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধুতেই হবে। হাত ধুলে এনভেলপ ফ্লু জাতীয় কোভিড-১৯ ভাইরাসকে নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব। পানি না থাকলে ৬০–৭০ শতাংশ ইথাইল অ্যালকোহল-যুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে ভালো করে হাত পরিষ্কার করে নেয়া উচিত। ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে টাটকা শাকসবজি ও ফল খেতে হবে। ধুমপান ও মদ্যপান ছাড়তে হবে।
সূত্র: আনন্দবাজার, ডেইলি মেইল
করোনাভাইরাস: সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে ৩৩ দেশে স্কুল-কলেজ বন্ধ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস এখন বিশ্বজুড়ে এক আতঙ্কের নাম। এরই মধ্যে ১১৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। করোনার ধাক্কা লেগেছে বিশ্ব রাজনীতি, অর্থনীতি থেকে শুরু করে দৈনিক আয়-রোজগারেও। এই ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন দেশের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদানেও। ইউনেস্কোর তথ্যমতে, অন্তত ৩৩টি দেশ এ ভাইরাস থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১৭টি দেশ গোটা রাষ্ট্রে এবং ১৬টি দেশ বিশেষ কোনো শহর, জেলা বা অঞ্চলে স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ মার্চ) পর্যন্ত ইউনেস্কোর হিসাবে, ১৭টি দেশে পুরোপুরিভাবে স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের কারণে শিক্ষাবঞ্চিত হচ্ছে ৩৬৩ মিলিয়নের বেশি শিক্ষার্থী। আরও ১৬টি দেশে বিশেষ শহর, জেলা বা অঞ্চলে বন্ধ করা হয়েছে স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়, এতে শিক্ষাবঞ্চিত হচ্ছেন আরও ৫৬৭ মিলিয়ন শিক্ষার্থী।
গোটা দেশে স্কুল বন্ধ করে দেয়া ১৭টি রাষ্ট্র হলো- চীন, ইতালি, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, মঙ্গোলিয়া, আজারবাইজান, বাহরাইন, জর্জিয়া, ইরাক, কুয়েত, লেবানন, কাতার, উত্তর কোরিয়া, পোল্যান্ড, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এর মধ্যে অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা সামলে নেয়ায় চীনের কিছু অঞ্চলের গুটিকয়েক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে শুরু করেছে। জাপানে চলছে গ্রীষ্মকালীন ছুটি। আর দক্ষিণ কোরিয়ায় ছুটি শেষে স্কুল খোলার কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের কারণে সরকার তা পিছিয়ে দিয়েছে।
বাকি ১৬ দেশের মধ্যে আফগানিস্তান তাদের হেরাত প্রদেশে; ভুটান রাজধানী জেলা থিম্পু, পারো, পুনাখা; কম্বোডিয়া সিয়েম রিপ প্রদেশে; ফ্রান্স ওঁইস ও হ্যত-রিন, কোরসিকা এবং আরও কিছু শহরে; জার্মানি বাভারিয়া, নর্দেইন-ওয়েস্তফলেন, ব্রান্দেবার্গ, বাদেন-উর্তামবার্গ ও নিয়েদারসাখসেনসহ কিছু শহরে; গ্রিস আচায়ি, জান্তে ও ইলিস অঞ্চলে; ভারত দিল্লি অঞ্চল, কাশ্মীরের জম্মু ও সাম্বা জেলা এবং কেরালার পাথানামথিত্তা ও কোত্তাম জেলায়; পাকিস্তানে সিন্ধ প্রদেশে; ফিলিস্তিন পশ্চিম তীরে; ফিলিপাইন ম্যানিলা সিটি, কালাবারজোন, মধ্যাঞ্চলীয় লুজন ও ইয়োকস অঞ্চলে; যুক্তরাষ্ট্র ক্যালিফোর্নিয়া, কোলোরাডো, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, ইডাহো, ইলিনয়স, ইন্ডিয়ানা, কেন্টাকি, ম্যাসাচুসেটস, মিসৌরি, নেব্রাস্কা, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, পেনসিলভানিয়া, রোডে আইল্যান্ড, সাউথ ক্যারোলিনা, টেনেসে, ভার্জিনিয়া, ভারমন্ট ও ওয়াশিংটনে; ব্রিটেন ও নর্দার্ন আইয়ারল্যান্ড টেটবুরি, নর্থউইচ, মিডলসবারা ও ব্রিক্সামে, ইউক্রেন চেরনিবৎসি ওব্লাস্তে; পর্তুগাল ও স্লোভাকিয়া বেশ কিছু অঞ্চল ও শহরে এবং ভিয়েতনাম হ্যানয়, হো চি মিন চিটিসহ বেশ কিছু শহর ও অঞ্চলে বিভিন্ন স্তরে স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে।
এই ৩৩টি দেশের মধ্যে চীন, ইতালি, ইরান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতি কিছুটা নাজুক হলেও কিছু দেশের পরিস্থিতি তেমনটা গুরুতর রূপ নেয়নি। তবে সচেতনতার স্বার্থেই দেশগুলোর সরকার শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় এবং মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের করোনাভাইরাস ঠেকাতে স্কুলসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
যেমন বুধবার (১১ মার্চ) পর্যন্ত মঙ্গোলিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে ১ জন, ভুটানে ১, আজারবাইজানে ১১ জন, পাকিস্তানে ১৯ জন, সৌদি আরবে ২০ জন, কাতারে ২৪ জন, পোল্যান্ডে ২৫ জন, ফিলিস্তিনে ২৯ জন শনাক্ত হয়েছেন। মঙ্গোলিয়া-ভুটানের মতো দেশগুলোর সরকার বলছে, পরিস্থিতি প্রতিকূলে যাওয়ার আগেই বাড়তি সতর্কতা হিসেবে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে জমায়েত হওয়া বন্ধ করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে ৩ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় বলে জানায় সরকারের আইইডিসিআর। তবে ১১ মার্চ তারা জানিয়েছে, এ তিনজনের মধ্যে দু’জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। শিগগির তারা ছাড়পত্র পাবেন। যদিও সন্দেহভাজন হিসেবে আরও ৮ জনকে আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে। এছাড়া সেলফ বা হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে অনেককে। বাংলাদেশেও স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য দাবি করছেন অনেকেই। যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি বাংলাদেশে হয়নি।
করোনার ঝুঁকি এড়াতে কিছু অ্যাকাউন্ট স্থগিত করবে উবার!
করোনা ঝুঁকি এড়াতে বেশ কিছু রাইডার্স ও ড্রাইভারদের অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোবাইল ফোন ভিত্তিক রাইড-শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবার। বলা হচ্ছে, যারা করোনভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বা আক্রান্তদের সংস্পর্শে গেছেন তাদের উবার অ্যাকাউন্ট স্থগিত করে দেবে উবার।
আজ বুধবার আন্তজার্তিক গণমাধ্যম সিএনএন বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। তবে উবার এই বিষয়টি নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করেনি। তবে শনিবারে উবারের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা কোভিড-১৯ আক্রান্ত বা জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নিদের্শনায় কোয়ারেন্টাইনে থাকা চালক ও ডেলিভারিম্যানদের সহযোগিতা করছি। এমন পরিস্থিতি পড়লে তারা ১৪ দিন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর ধারণা করা হচ্ছে, উবারের যেসব চালকরা করোনাতে আক্রান্ত বা যাদের করোনাতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০
যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩০ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় এক হাজার মানুষ।
মৃত এবং আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ইতালি, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে। ইরানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯১ জনে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতে নতুন করে আরও ১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৬২ জন হয়েছে।
করোনা আতঙ্কে নির্বাচনী প্রচারণা বাতিল যুক্তরাষ্ট্রে
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে। এই ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রেও। দেশটির ৩০টিরও বেশি অঙ্গরাজ্যে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে সম্প্রতি প্রচারণা শুরু হয়েছে। কিন্তু করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় নির্বাচনী প্রচারণা বাতিল করেছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্স এবং জো বাইডেন।
গতকাল মঙ্গলবার গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু প্রচারণা বাতিল করে দিয়েছেন বার্নি স্যান্ডার্স এবং জো বাইডেন।
জানা গেছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে ওহিও অঙ্গরাজ্যের ক্লেভেল্যান্ড শহরে তার যে নির্বাচনী প্রচারণা হওয়ার কথা ছিল। তা বাতিল করা হয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ আর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
বার্নি স্যান্ডার্সের মুখপাত্র মাইক কাসকা জানান, জনগণের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে নির্বাচনী প্রচারণা বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, জো বাইডেনের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, ক্লেভেল্যান্ডে যথা সময়েই সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী প্রচারণা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু পরবর্তীতে তার নির্বাচনী প্রচারণা শিবির এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওই নির্বাচনী প্রচারণা বাতিল করা হয়েছে।
এনবিসি নিউজকে জো বাইডেন জানান, তিনি তার নির্বাচনী সমাবেশের বিষয়ে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পরামর্শ নেবেন।
করোনা রোগীদের সেবায় মারা যাওয়া ডাক্তার-নার্সদের ‘শহীদ’ ঘোষণা দিল ইরান
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবায় নিয়োজিত সেবক-সেবিকা ও চিকিৎসকদের মধ্যে যারা মারা গেছেন তারা ‘শহীদ’ হিসেবে গণ্য হবেন বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। মঙ্গলবার এক চিঠিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।
ওয়াশিংটন টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাঈদ নামাকি সর্বোচ্চ নেতার কাছে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব দিলে তাতে সম্মতি দেন খামেনি।
আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেছেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সেবা দিতে গিয়ে ডাক্তার ও নার্সসহ মেডিক্যাল টিমের যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদেরকে ‘দায়িত্ব পালনকারী শহীদৱ’ হিসেবে মর্যাদা দেয়া হবে।’
ইরানের আইন অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদ মর্যাদাপ্রাপ্তদের সব সময় বিশেষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয় এবং তাদের পরিবারের জীবিত সদস্যরা বিশেষ সম্মান ও সুযোগ-সুবিধা পান।
চীনের উহান থেকে উৎপত্তি হওয়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কবলে পড়া অন্যতম দেশ ইরান। দেশটিতে এরই মধ্যে করোনার ছোবলে প্রাণ হারিয়েছেন ২৯১ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজারেও বেশি। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে অক্লান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন দেশটির ডাক্তার ও নার্সরা। করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে এরই মধ্যে অনেক ডাক্তার ও নার্স প্রাণ হারিয়েছেন।
ইরানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ফার্সি নববর্ষের ভাষণ বাতিল করা হয়েছে। আক্রান্ত হয়ে কোয়ারেন্টাইনে আছেন আরও কয়েক হাজার মানুষ। এমনকি দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতাও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক ঘোষণায় দেশটির উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী আলী রেজা রাইসি বলেন, ইরানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ জন সংসদ সদস্য। রয়েছেন সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাও। মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।
এসব আক্রান্তদের সেবা করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত কয়েকজন চিকিৎসক ও নার্স মারা গেছেন। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আক্রান্ত দুই হাজার ৭৩১ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে গেছেন।
এরই মধ্যে এমন আতঙ্কগ্রস্ত পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ইরান সরকার অস্থায়ীভাবে ৭০ হাজার কারাবন্দিকে সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়েছে।
করোনা রুখতে ভারতে বিশুদ্ধ গোমূত্রের ‘হ্যান্ড স্যানিটাইজার’!
করোনা আতঙ্কে ভুগছে গোটা বিশ্ব। এরই মধ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে ১১৫টি দেশে। প্রতিরোধ সরঞ্জাম মাস্ক ও স্যানিটাইজারের হাহাকার চলছে বিশ্বজুড়ে। দাম বেড়ে গেছে বহুগুণে। এমন পরিস্থিতিতে করোনা প্রতিরোধে গোমূত্রের হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং সাবান বাজারে নিয়ে এসেছে ভারতের ই-কমার্স সাইটে। গোমূত্র দিয়ে তৈরি এই হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং সাবানের নাম দেয়া হয়েছে ‘কাউপ্যাথি’। এমন আশ্চর্যজনক তত্যই দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজ।
জি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫০ মিলি লিটারের ২টি হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাওয়া যাচ্ছে ১০০ রুপিতে। অন্যদিকে, অনলাইনে ২১০ রুপিতে পাওয়া যাচ্ছে ‘কাউপ্যাথি’ সাবানের ছয় থেকে সাতটির প্যাক।
‘কাউপ্যাথি’ স্যানিটাইজারের বিবরণে লেখা রয়েছে,দেশি গরুর বিশুদ্ধ গোমূত্র দিয়ে তৈরি হয়েছে এটি। একইসঙ্গে যাতে কোনও গন্ধ না বের হয়, সেজন্য এর সঙ্গে অ্যারোমা এসেনশিয়াল অয়েল ও গঙ্গার পানি মেশানো হয়েছে। বিবরণে আরও বলা হয়েছে ,এতে কোনও অ্যালকোহল নেই। আপনার হাতকে এটা আর্দ্র ও কোমল রাখবে।
যদিও, এই স্যানিটাইজার ও সাবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ‘রুখেছে’ বলে হাতেকলমে কোনও প্রমাণ নেই। তবে ই-কমার্স সাইটে এটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে বলে দাবি করেছে জি নিউজ।
প্রসঙ্গত, গোমূত্র ও গোবরেই সারতে পারে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ! সম্প্রতি এমন দাবি করেছিলেন ভারতের আসামের বিজেপি বিধায়ক সুমন হরিপ্রিয়া। আর এর কিছুদিন পরই জানা গেলো গোমূত্র দিয়ে তৈরি হচ্ছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
করোনার প্রভাবে এশিয়া ও বিশ্ব একাদশের ম্যাচ স্থগিত
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডোর (বিসিবি) এশিয়া একাদশ ও বিশ্ব একাদশের মধ্যে দুটি টি-২০ ম্যাচ আয়োজনের কথা ছিল। এছাড়া একটি কনসার্ট আয়োজনের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছিল বিসিবি। কিন্ত করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিসিবির ওই দুটি আয়োজনই স্থগিত করা হয়েছে।
বুধবার বোর্ডের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমলে পরে আবার এশিয়া একাদশ ও বিশ্ব একাদশের মধ্যে ম্যাচ দুটি আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ সংবাদ
কানাডার সংবাদ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন