‘ফাহিম সালেহ : স্বপ্নের কারিগর’ এবারের বই মেলায় নতুন বই
এনআরবি নিউজ ।। এবারের বাংলা একাডেমি বই মেলায় বিশ্বব্যাপী চাঞ্চল্যসৃষ্টিকারি নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার প্রযুক্তি-উদ্ভাবক ফাহিম সালেহ’র জীবন-কর্ম-উদ্ভাবন নিয়ে বই প্রকাশ করছে ‘অন্যপ্রকাশ’ । বইটির নাম ‘ফাহিম সালেহ স্বপ্নের কারিগর’ । ফাহিমের পোট্রেট এঁকেছেন শিল্পী শামসুদ্দোহা । প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জায় মাসুম রহমান । সম্পূর্ণ অফসেট কাগজে ছাপা , রঙিন ছবি নিয়ে বইটি রয়েল সাইজে প্রকাশিত হয়েছে । মূল্য ৭০০ টাকা।
দেশ বিদেশের পঁচিশজন লেখকের লেখা স্থান পেয়েছে বইটিতে । লিখেছেন নিউইয়র্ক টাইমস এর পুলিৎজার বিজয়ী সাংবাদিক উইলিয়াম কে রাশবাম এবং সি-এন-এন , ওয়াশিংটন পোস্ট এর সাংবিদকেরা, বাংলাদেশের পূরবী বসু , তাসলিমা নাসরিন এবং আরো অনেকে ।
বাংলাদেশী সাংবাদিকেরা নতুন প্রযুক্তি প্রসারে এবং বাংলাদেশের স্টার্টআপ অঙ্গনে ফাহিমের অবদানকে পরিপূর্ন ভাবে তুলে ধরেছেন । নাইজেরিয়ান সাংবাদিকেরা লিখেছেন নাইজেরিয়ায় নতুন প্রযুক্তি প্রসারে ফাহিমের অবদান নিয়ে ।
রয়েছে ফাহিম সালেহর বড় বোন রুবি এঞ্জেলা সালেহ’র বহুল আলোচিত লেখা — ‘গড়ঁৎহরহম গু ইধনু ইৎড়ঃযবৎ ঋধযরস’ এর বাংলা অনুবাদ । ফাহিমের বাবা সালেহ উদ্দিন আহমদ লিখেছেন বেশ কয়টি স্মৃতি কথা , যা বইটির এক মূল্যবান সংযোজন । ফাহিমের নিজের তিনটি লেখা, নতুন আইডিয়া নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে– তরুণ উদ্যোক্তাদেরকে দারুণভাবে সাহায্য করবে।
ফাহিমের আঁকা বেশ কটি শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে বইটিতে । অনেকগুলো স্মৃতি ছবি এই তরুণ উদ্যোক্তার কর্মচঞ্চল জীবনকে নতুন করে মনে করিয়ে দেয় ।
বইটির সম্পাদনা করেছেন ফাহিমের বাবা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি এ সংবাদদাতাকে বলেন, ফাহিম আমাদের আজকের ও ভবিষ্যতের তরুণদের জন্য এক উজ্জ্বল উদহারণ । নিজের সফলতাকে অন্যদের জন্য কাজে লাগাবার প্রবল ইচ্ছা এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কাছে নতুন প্রযুক্তি পৌছিয়ে দেয়ার নিরলস প্রচেষ্টা -ফাহিমকে সাধারণ জনগনের মনে স্থান করে দিয়েছে । সারাবিশ্বে তথ্য-প্রযুক্তি জগতে বিশেষ এক স্থান দখলে সক্ষম তরুণ এই উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহ সম্বন্ধে জানতে আগ্রহীদের জন্যে এ বইটির গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ, এটি গল্প বা উপন্যাসের পর্ব নয়, মানুষকে আত্মনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করতে বাস্তবমুখী ধ্যান-ধারণার সমাহার।
তিনি আরো বলেন, “ফাহিমকে নিয়ে জানার কৌতূহলের শেষ নেই। সবাই শুনতে চায় আমার ফাহিমের কথা । ছোট্ট ফাহিম , ফাহিমের বড় হওয়া , ফাহিমের ব্যবসা, ফাহিমের কৌতুককর স্বভাব, ফাহিমের শখ এবং বাংলাদেশ নিয়ে ফাহিমের ভাবনা-এই সব নিয়েই আরো কথা। তাদের জানার কৌতূহল মেটানোর জন্যই এই বই ।”
‘বইটি তরুণদেরকে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করবে , উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তিবিদরাও দারুন ভাবে উপকৃত হবেন’-প্রত্যাশা ফাহিমের বাবার ।
উল্লেখ্য, যানজটে নাকাল সিটিসমূহে কর্মজীবী মানুষের জন্যে ট্যাক্সির বিকল্প হিসেবে মটর সাইকেলের প্রচলন ঘটাতে বাংলাদেশে ‘পাঠাও’ চালু করেছিলেন। একইধারায় মালয়েশিয়ার পর নাইজেরিয়ায় ‘গোকাদা’ চালু করে বেশ জনপ্রিয় অর্জন করেন ফাহিম সালেহ। সউদি আরবে জন্মগ্রহণ করলেও বেড়ে উঠেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তবে হৃদয়ে লালন করেছেন মা-বাবার জন্মস্থান বাংলাদেশকে। পরিচিতি পেয়েছিলেন একজন বাংলাদেশী-আমেরিকান উদ্যোক্তা হিসেবে। সালেহ ম্যানহাটান ভিত্তিক উদ্যোগের মূলধন সংস্থা অ্যাডভেঞ্চার ক্যাপিটালের প্রতিষ্ঠাতা অংশীদারও ছিলেন। এই প্রযুক্তি-উদ্যোক্তাকে ৩৩ বছর বয়সে গত বছর ১৩ জুলাই ম্যানহাটানে নিজ এপার্টমেন্টে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ঘাতক হিসেবে গ্রেফতার হয়েছে তারই অফিস সহকারি হ্যাসপিল টাইরেস (২১)। সে দোষ স্বীকার করেনি।
এস এস/সিএ