রঞ্জনা রায়-এর কবিতা
আমি চাই
আমি একটু একটু করে হারিয়ে যাই
আমার পরিচিত রঙেদের আড়ালে
একটু একটু করে পথ খুঁজি
সেই নকশীকাঁথার অচেনা জঙ্গলে।
দেখেছিল সে সূর্য ওঠা ভোর
কৃষ্ণপ্রিয়া রাধিকার লাজে
শুনেছিল বর্ষার পায়ে কনক নুপুর বাজে।
কাল অমাবস্যার অন্ধকারে শুরু হয়
একাকী চাঁদের পূর্ণতার অভিযান,
বিন্দুতম এই আমি চাই
বহুত্বের আস্বাদন।
২. পণ্য গুদাম
একটা বাঘের খাঁচার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম সেইদিন।
হিংস্র চতুরতার চারপাশে খনিজ ধাতুর বন্ধন।
বাঘ ঘোরে,পায়চারি করে সাজানো নকল বাগিচায়।
মানুষের চিড়িয়াঘরে সে এক সত্যিকারের বাঘ পুতুল!
সকলে তাকে ভালো করে দেখতে চায়।
আমাদের নিজস্ব স্বার্থের মাপে-
ঘরবাড়ি,বাঘ, কুমির,নদী,মাটির বুকে সবুজ ঘাস,
সব আজ পণ্য
পৃথিবী এক বিরাট পণ্যের গুদাম।
৩. ঝিনুক
জেগেছিল একটি তারা অন্ধকার রাতে
আলিঙ্গনের শীতলতায় ডুব দিয়ে খোঁজে মুক্ত
অজস্র ঝিনুক ছড়ানো এধারে ওধারে
এক বিশেষ ইঙ্গিতের ইশারায় সবাই উজ্জ্বল
সব ঝিনুকের নিভৃতে সম্ভাবনার আশা
মিলতে ও পারে অমৃত ফল!
রাংতা মোড়া চুম্বনের খেলায়
হয়নি সেদিন ভূমিকম্পে প্রলয়
জ্বলন্ত বন কখনো কি হয়
নিরাপদ আশ্রয়!
শীতল দেহের ঘর্ষনে অহল্যা হৃদয়
রোজ খোঁজে সেই বোধিসত্ত্ব ঝিনুক।
৪. চিঠি
রাতের পর রাত কেটে যায়
অন্তহীন রাতের ঠিকানায় আসে না
ভোরের চিঠি
রাতের অন্ধকার দীর্ঘ হয়
স্থায়িত্বের নিবিড়তায়।
ট্রেনের কামরায় ধোঁয়াটে গোধূলি
সবাই নির্বিবাদে হাসে;
একরাত,দু-রাত,একে-ওকে
খেয়াল খেলায় ভালোও বাসে!
রাতের পর রাত কেটে যায়
অনাগত চিঠির আশ্বাসে…