দেশের সংবাদ ফিচার্ড

৪৮ মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, ডিএনএ পরীক্ষার পর হস্তান্তর

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৪৯ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে । হাসপাতালে এভাবেই সারি সারি মৃতদেহ জমা করা হচ্ছে

। প্রচুর দাহ্য পদার্থ থাকায় ভয়াবহ হয়ে ওঠে আগুন । বেতন-ভাতার দাবিতে আন্দোলন করায় পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে হত্যার অভিযোগ । মালিক পক্ষের দাবি দুর্ঘটনা।

রূপগঞ্জে পোড়া লাশের মিছিল

  • হতাহতের ঘটনায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
  • অগ্নিকাণ্ডে নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভ, হামলা, ভাঙচুর, অস্ত্র লুট
  • দায়ী কাউকে ছাড় দেয়া হবে না —র‍্যাব মহাপরিচালক
  • জেলা প্রশাসনের সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন 
  • ভবনের সিঁড়ি বন্ধ থাকায় এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, ছাদের সিঁড়ি বন্ধ না থাকলে অনেক প্রাণ বাঁচতো —দেবাশীষ বর্ধন, উপপরিচালক (অপারেশন্স), ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স
  • শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত, আর কত শ্রমিক আটকা পড়েছেন তা জানে না হাসেম ফুড কর্তৃপক্ষ —কাজী রফিকুল ইসলাম, কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন)
  • নিহতদের পরিবারকে দুই লাখ ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেবে শ্রম মন্ত্রণালয় —বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, শ্রম প্রতিমন্ত্রী

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস তৈরির ষষ্ঠতলা বিশিষ্ট কারখানা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই কারখানার দুটি ফ্লোর বাদে (পঞ্চম ও ষষ্ঠ) অন্য চারটি ফ্লোর থেকে ৪৯ শ্রমিকের পোড়া লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। সবকটি লাশই এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। এর আগে ঢামেকে মারা গেছেন তিন শ্রমিক।

৪৮ মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, ডিএনএ পরীক্ষার পর হস্তান্তর

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৮ মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে লাশগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। আগুনে পুড়ে বিকৃত হওয়া লাশগুলো ডিএনএ পরীক্ষার পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস। তিনি জানান, শুধু ফরেনসিক নয়, পাশাপাশি মরদেহের ডিএনএর প্রোফাইলয়ের জন্যও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজে নারী-পুরষসহ তারা মোট ৪৮টি মরদেহ পেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন এই ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক।

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে লাশগুলো নিয়ে আসার পর থেকে সেখানে বাড়তে থাকে স্বজনদের উপস্থিতি। স্বজনদের আহাজারি আর কান্নায় ভারি হয়ে উঠে মর্গের বাতাস। মর্গে স্বজনরা ছবি নিয়ে এসে আকুতি জানাচ্ছেন প্রিয়জনের লাশটি ফিরে পেতে। কিন্তু লাশগুলোকে চেনা যাচ্ছে না অতিরিক্ত পুড়ে যাওয়ার কারণে। তাই ডিএনএ পরীক্ষার পর লাশগুলো স্বজনদের বুঝিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

হাশেম ফুড কারখানায় আগুন
এক ফ্লোরেই অঙ্গার ৪৯ জন, অধিকাংশ শিশু

এরই মধ্যে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) নিহতদের স্বজনদের কাছ থেকে ডিএনএ-এর নমুনা সংগ্রহ করা শুরু করেছে। ঢামেক মর্গে আসা স্বজনদের কাছ থেকে এ নমুনা নেওয়া হচ্ছে। নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর স্বজনদের কাছে লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে জানাচ্ছেন সিআইডির ডিএনএ ফরেনসিক ল্যাবের সদস্যরা।

এ বিষয়ে ফরেনসিক ল্যাবের সহকারী অ্যানালিস্ট আশরাফুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা ঢামেক মর্গে আসা স্বজনদের কাছ থেকে নমুনা নিচ্ছি। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে। নমুনা পরীক্ষার পর লাশ চিহ্নিত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় সেজান জুস, কোমল পানীয় ও বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী তৈরির ওই কারখানায় আগুন লাগে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এদের মধ্যেআগুন লাগার পরপরই মারা যান তিনজন। তাদেরসহ মোট ৪টি মরদেহ শনাক্ত হলেও বাকি ৪৮ জনের লাশই শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ডিএনএ টেস্ট করার পর মৃতদের লাশ যার যার আত্মীয়-স্বজনের হাতে বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা।

এ ছাড়া নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ও আহতদের ১০ হাজার টাকা করে অনুদানের ঘোষণা করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। পাশাপাশি শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। একইসঙ্গে আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, কারখানায় কাজ হলে আগুন লাগতেই পারে বলে মন্তব্য করেছেন সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হাশেম। গতকাল তিনি বলেন, জীবনে বড় ভুল করেছি ইন্ডাস্ট্রি করে। ইন্ডাস্ট্রি করলে শ্রমিক থাকবে। শ্রমিক থাকলে কাজ হবে। কারখানায় কাজ হলে আগুন লাগতেই পারে। এর দায় কি আমার? আমি তো কারখানায় গিয়ে আগুন লাগাইনি। অথবা আমার কোনো ম্যানেজার আগুন লাগায়নি। শ্রমিকদের অবহেলার কারণেও আগুন লাগতে পারে অথবা কোনো শ্রমিক সিগারেট খেয়ে ফেলে দিয়েছে। আবুল হাশেম বলেন, আমি ঘটনাস্থলে যাইনি, তবে আমার লোকজন সেখানে আছে। যারা মারা গেছেন, তারা তো আমারই ছেলেমেয়ে। আমি খুব ভেঙে পড়েছি। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব আমার ছেলেমেয়েদের পাশে থাকতে। এটা একটা দুর্ঘটনা। ফ্যাক্টরির সবগুলো ইউনিট চালু ছিল না। লোকজন কম ছিল। তার পরও যারা ছিল, তারা সবাই চেষ্টা করেছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কিন্তু পারেনি। ভবনটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল বলেও দাবি করেন তিনি।-বাংলাদেশ জার্নাল/আমাদেরসময়


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন