স্পেনে বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ পুরস্কারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
মাদ্রিদ, ২৪ মে । বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতার স্থপতি, গণতন্ত্র ও শান্তি আন্দোলনের পুরোধা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ কর্তৃক জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভুষিত করা হয়। বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী ম্যারী কুরি ও পিয়েরে কুরি দম্পত্তি বিশ্ব শান্তির সংগ্রামে যে অবদান রেখেছেন, তা চিরস্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৫০ সাল থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে, মানবতার কল্যাণে, শান্তির সপক্ষে বিশেষ অবদানের জন্য বরণীয় ব্যক্তি ও সংগঠনকে জুলিও কুরি শান্তি পদকে ভূষিত করে আসছে। ফিদেল ক্যাস্ট্রো, হো চি মিন, ইয়াসির আরাফাত, সালভেদর আলেন্দে, নেলসন ম্যান্ডেলা, ইন্দিরা গান্ধী, মাদার তেরেসা, কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা, জওহরলাল নেহেরু, মার্টিন লুথার কিং, লিওনিদ ব্রেজনেভ প্রমুখ বিশ্বনেতাদের এই পদকে ভূষিত করা হয়।
বিশ্বশান্তি ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদানকে তুলে ধরার জন্য স্পেনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে এ উপলক্ষ্যে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে পাঠ করা হয়। দূতাবাসের ১ম সচিব তাহসিনা আফরিন শারমিনের সঞ্চালনায় এ আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ, কমার্শিয়াল কাউন্সেলর রেদোয়ান আহমেদ এবং ১ম সচিব (শ্রম) মুতাসিমুল ইসলাম অংশগ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বনেতাদের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্বে, দীর্ঘ নয় মাস মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিজয়। ফ্যাসিবাদবিরোধী, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ও শোষণের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামকে বিশ্ব মানবতার ইতিহাসে চির অম্লান করে রাখার জন্য বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৭৩ সালের ২৩ মে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদান করে। এ সম্মান পাবার পর বঙ্গবন্ধু তাঁর বক্তৃতায় বলেছিলেন, “এ সম্মান কোন ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়। এ সম্মান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মদানকারী শহীদদের, স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানীদের। জুলিও কুরি শান্তি পদক সমগ্র বাঙালী জাতির।” বঙ্গবন্ধুকে পদক পরিয়ে দেয়ার সময় বিশ্ব শান্তি পরিষদ এর মহাসচিব ঘোষণা করলেন, “শেখ মুজিব শুধু বঙ্গবন্ধু নন, আজ থেকে তিনি বিশ্ববন্ধুও বটে।” শান্তির দূত বঙ্গবন্ধু “সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়” এবং সকল বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানকে তার পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু আজ উপস্থিত না থাকলেও তার মহান আদর্শ, উদ্দেশ্য এবং তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ আজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শান্তির স্বপক্ষে বাংলাদেশ কর্তৃক গৃহীত বিবিধ পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী প্রভূত প্রশংসিত হয়েছ্।ে মিয়ানমার থেকে ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরনার্থীদের বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। প্রতিবছর জাতিসংঘে বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত শান্তির স্বপক্ষে ‘রেজুলিয়শন’ ব্যপকভাবে গৃহীত হয়। এছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশ বৃহত্তম/দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শেষে বিশ্বশান্তির দূত-জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। স্পেন সরকার কর্তৃক প্রদত্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে এ অনুষ্ঠান উদযাপন করা হয়। – প্রেস বিজ্ঞপ্তি
এস এস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান