সজীব দেবরায়, কমলগঞ্জ | পর্যটনের অপার রাজ্য মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা। লেক, জলপ্রপাত, চা বাগান, জাতীয় উদ্যান ও পাহাড়ি টিলাসহ অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে এই উপজেলায়। উপজেলার পর্যটন ক্ষেত্রে নতুন এক মাত্রা যোগ করেছে সবুজ পাহাড়ের বুকে দৃষ্টিনন্দন ইকো ভিলেজ ।
পাহাড়ি টিলার চারদিকে নির্মল সবুজের সমারোহ। সমতল ভূমি থেকে উচ্চতা প্রায় ১৯০ ফুট। উঁচু ওই পাহাড়ের চূড়ায় পর্যটকদের রাত্রীযাপনের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন রিসোর্ট। নাম ‘টিলাগাঁও ইকো ভিলেজ’। ইকো ভিলেজের এক একটি ঘরের দেয়াল তৈরি করা হয়েছে এঁটেল মাটি দিয়ে। আর উপরে দেয়া হয়েছে ছনের চালা। রুমের ভেতরে রয়েছে নানা কারুকাজ। শহরে ইট-কংক্রিটের দালানের আড়ালে আকাশ ঢাকা পড়লেও দৃষ্টিনন্দন এ কটেজে বসেই আকাশের সঙ্গে মিতালিতে মন ছুঁয়ে যাবে গ্রামের অনুভূতিতে। কটেজটির পাহাড়ি টিলার নিচে রয়েছে লাভ আকৃতির একটি জলাশয়। জলাশয়ের তিন পাশেই পাহাড়ি টিলা। পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত এ রিসোর্টটি যে কাউকে মুগ্ধ করবে।
রিসোর্টটির চারিদিকে আম, কাঠাল, লিচু সহ নানা প্রজাতির ফলজ বৃক্ষের সমারোহ। নানা প্রজাতির ফলজ বৃক্ষের ডালে ঝুলছে নানা ধরনের দোলনা। রয়েছে রিসিপশনের চৌকি। একই স্থানে প্রকৃতির এমন বাহারি সৌন্দর্যের সমাহার খুব কম জায়গায়ই মিলে। পরিবেশ দেখলে মনে হবে এ যেন এক খ- ‘সাজেক’।
কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের টিলাগাঁও গ্রামে দৃষ্টিনন্দন এই ইকো ভিলেজের অবস্থান। চলতি বছরের ১২ই ফেব্রুয়ারি থেকে পর্যটকদের জন্য এ ইকো ভিলেজ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। কিন্তু করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে পর্যটক না আসলেও এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিদিন সেখানে উঠছেন পর্যটকরা।
ইকো ভিলেজের দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার সায়হান সিদ্দিকী হৃদয় বলেন, ‘প্রতি শুক্র ও শনিবারে কটেজের রুম ভাড়া ৩ হাজার ২০০ টাকা এবং অন্যদিনের জন্য ২ হাজার ৭০০ টাকা। কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ বালিগাঁও (বটতলা) নামক এলাকা থেকে দক্ষিণ দিকে যে পিচ সড়ক গেছে সে পথে গাড়ি নিয়ে ৫-৭ মিনিটের রাস্তা অতিক্রম করলে আপনার চোখে পড়বে রিসোর্টটির সাইনবোর্ড। কমলগঞ্জ পৌর এলাকার ব্যস্ততম ভানুগাছ বাজার থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার। কটেজে যাওয়ার পথে রাস্তার পাশে চোখে পড়বে গ্রামবাংলার মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য। টিলাগাঁও ইকো ভিলেজের উত্তরে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, দক্ষিণে মাধবপুর লেক, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিস্তম্ভ ও হামহাম জলপ্রপাত। এ ছাড়া দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে রয়েছে সারি সারি সবুজ সমারহের চায়ের বাগান। পাশেই রয়েছে খাসিয়া ও মনিপুরী পল্লী। এসব স্থান খুব সহজেই ঘুরে দেখা সম্ভব।
মৌলভীবাজার জেলা শহর থেকে রিসোর্টটির দূরত্ব প্রায় ২ কিলোমিটার ও শ্রীমঙ্গল শহর থেকে দূরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার। আর কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৬ কিলোমিটার।