কোভিড সময়ে সিবিএনএ |||| ডঃ শোয়েব সাঈদ
কোভিড-১৯ এর জন্যে দায়ী SARS-CoV-2 (সার্স-সিওভি-২) ভাইরাসটিকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া বর্তমান বৈশ্বিক সংকটটি প্রবলভাবে বদলে দিয়েছে আমাদের ব্যক্তিগত আর পেশাগত জীবন। কোভিড সৃষ্ট প্যানডেমিক সংকট মোকাবিলায় ২০২০ সালের পুরো সময়টায় বিশ্বকে অনেকটা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মত করে লড়াই করতে হয়েছে কোভিড ভাইরাসের বিরুদ্ধে।
কোভিডকাল সমসাময়িক বিশ্বকে আরও কতদিন ব্যস্ত রাখে নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তবে আশাবাদ ব্যক্ত করা যায় যদি ভ্যাকসিনকে অগ্রাহ্য বা ফাঁকি দিতে সক্ষম আগ্রাসী কোন ভ্যারিয়েন্টের উদ্ভব না ঘটে তবে ভ্যাকসিন, মাস্ক, শারীরিক দূরত্ব, স্যানিটাইজার ব্যবহারের সমন্বিত প্রচেষ্টায় ২০২১ সাল নাগাদ বৈশ্বিক পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কোভিডে ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষতি পুষাতে অবশ্য সময় লাগবে বেশ।
দিনশেষে মানব সভ্যতার বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির কল্যাণে ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের মাধ্যমে করোনা যুদ্ধ জয়ে কৌশলগত অগ্রগতি অর্জন স্বস্থি এনেছে জনমনে। হার্ড ইমিউনিটি অর্থাৎ ভাইরাসটির বিরুদ্ধে স্থায়ী প্রতিরোধ সক্ষমতার জন্যে ভ্যাকসিনের ক্রমাগত উদ্ভাবন বিশাল অর্জন।
২০২১ সালে শুরুতে দেশে দেশে কোভিড টিকাদান সৃষ্টি করেছে উদ্দীপনা আর সংকট উত্তরণের আশাবাদ। বাংলাদেশে টিকার সেফটি নিয়ে নানা গুজবের মধ্যে অবশেষে ৭ই ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে কোভিড টিকা কর্মসূচীর শুরুতে দেখা গিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ। এই উৎসাহ ধরে রেখে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে সফল টিকাদান সংকট মোকাবিলায় কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।
কোভিডকালে পেশাগত ব্যস্ততার মাঝেও ব্যস্ত থেকেছি কোভিড নিয়ে নানাবিধ জ্ঞানার্জন আর সেই জ্ঞান সহজবোধ্য বাংলায় প্রিয় জন্মভূমির সুপ্রিয় পাঠকদের সামনে উপস্থাপনের। কোভিডের সূচনা পর্ব থেকে টেস্ট পদ্ধতি, চিকিৎসা পদ্ধতি, জাপান, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ সহ বৈশ্বিক কোভিড ব্যবস্থাপনা, কোভিডকালের অভিযোজিত জীবানাচার শিক্ষা, চাকুরী থেকে ভ্রমণ, দ্বিতীয় ঢেউ পরিস্থিতি, মিউটেশন/ভ্যারিয়েন্ট, ভ্যাকসিন উদ্ভাবন, বিতরণ, প্রযুক্তি হস্তান্তরে দ্বিধা এবং অবশেষে উন্নত দেশগুলোর সাথে সাথে বাংলাদেশে ভ্যাকসিনেশনের মত পর্যায়গুলোর সাধারণ আর কারিগরি ক্ষেত্রগুলো এড্রেস করার চেষ্টা করে গেছি নিরলসভাবে।
আমার এই নিরলস প্রচেষ্টার একনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে সদা পাশে থেকেছে সিবিএনএ। কোভিড নিয়ে আমার ধারাবাহিক লেখাগুলো পাঠকদের কাছে অনবদ্য আন্তরিকতার প্রকাশ করে গেছে সিবিএনএ। সদেরা সুজন দাদার কাছে লেখাটি পাঠাবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রাসঙ্গিকতা আর রুচিবোধের উন্নততর প্রকাশে দৃপ্ত ক্যাপশনে পৌঁছে দিয়েছেন পাঠকদের কাছে। সিবিএনএ আর সদেরা সুজন দাদার কাছে অপরিসীম কৃতজ্ঞতা।
কোভিড সংকট নিয়ে আমার লেখালিখির এই প্রচেষ্টা একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার বরাবরের মত সামনের দিনগুলোতে অবশ্যই পাশে পাব সিবিএনএ কে।
সিবিএনএ এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীকে আমাদের প্রাণঢালা অভিনন্দন আর শুভ কামনা।
কোভিড সময়ে সিবিএনএ |||| ডঃ শোয়েব সাঈদ লেখকঃ মন্ট্রিয়লে বায়োটেক বিষয়ক বহুজাতিক কর্পোরেটে গবেষণা পরিচালক হিসেবে কর্মরত এবং বাকসু’র সাবেক সাহিত্য সম্পাদক এবং সিবিএনএন-এর উপদেষ্টা ।