বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডার শ্রদ্ধেয় উপদেষ্টা কবি আসাদ চৌধুরী স্মরণসভা
সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা দুই ঘন্টার অনুষ্ঠান ছিল যান্ত্রিক গোলযোগহীন ও অনেক অজানা তথ্যে সমৃদ্ধশালী। ১২ই নভেম্বর ২০২৩ বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা অনলাইনে আয়োজন করেছিল প্রয়াত দেশ বরেণ্য লেখক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব , বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলা একাডেমির সন্মানিত ফেলো শ্রদ্ধেয় কবি আসাদ চৌধুরীর পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়া নিয়ে শোক সভা ও একটি স্মরন সভার।
এই আয়োজনের আহবায়ক ছিলেন লেখক ও সংগঠক শ্রদ্ধেয় তাসরীনা শিখা এবং গ্রন্থনায় ছিলেন মানসী সাহা। সভার সভাপতিত্ব করেন কানাডা রাইটার্স ক্লাবের সভাপতি কবি মৌ মধুবন্তী। সভার প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের সাবেক সভাপতি জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নূরল হুদা। তিনি কবিকে নিয়ে স্মৃতিচারন ও কবিতা পাঠ করেন। তাঁর কাছ থেকে জানা যায় কবি সম্পর্কে অনেক মূল্যবান তথ্য। ল্যান্ড একনল্যাজমেণ্ট পড়েছিলো- নতুন প্রজন্মের কিশোর সপ্তর্ষী রায় মজুমদার ।
অনুষ্ঠানটি শুরু করা হয় বাংলাদেশ ও কানাডার জাতীয় সংগীত দিয়ে। দুটো জাতীয় সঙ্গীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডার সচিব, সঙ্গীতশিল্পী ও লেখক মানসী সাহা। এরপর শুরু হয় আলোচনা পর্ব। কবিকে নিয়ে আলোচনার জন্য উপস্থিত ছিলেন ও অংশ নিয়েছেন – বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব ঢাকার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শ্রদ্ধেয় কবি ও চিত্রশিল্পী রবিউল হক। তিনি কবির সাথে বাংলাদেশের সাহিত্য জগতের মুল স্রোতের যে ঐকান্তিক সংযোগ ও অবদান তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি কবিকে নিয়ে স্মৃতিচারন ও কবির কবিতাও পাঠ করেছেন। আলোচনা করেছেন গবেষক, বাচিক শিল্পী, লেখক ও বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডার উপদেষ্টা হাসান মাহমুদ। কবির আদর্শগত দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন – লেখক, অধ্যাপক ডঃ মোজাম্মেল খান, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডার উপদেষ্টা। মন্ট্রিয়াল থেকে লেখক, গবেষক তাজুল মোহাম্মদ বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডার উপদেষ্টা, আলোচনা করেছেন কবির জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে। বিশেষ অতিথি বিশিষ্ট নাট্যকার ও লেখক আক্তার হোসেন এবং ড. ধনঞ্জয় সাহা বিজ্ঞানী, ছড়াকার, অধ্যাপক যুক্ত হয়েও যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে আলোচনায় অংশ নিতে অপারগ ছিলেন। এছাড়াও ছিল কবির কবিতা পাঠ, স্বরচিত কবিতা পাঠ ও কবিকে নিয়ে স্মৃতিচারন- এতে অংশ নিয়েছেন কবি মোয়াজ্জেম খান মনসুর , সহ- সভাপতি ,বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা। তিনি তাঁর স্মৃতি থেকে আলোচনা করেছেন কবিকে নিয়ে। কবি ঋতুশ্রী ঘোষ , কবিকে নিয়ে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেছেন। স্বরচিত কবিতা কবিকে নিয়ে, তাঁর সাথে শ্রদ্ধেয় কবির প্রথম সাক্ষাৎ ও তাঁর সাথে কবির আন্তরিক সম্পর্ক নিয়ে সুন্দর আলোচনা করেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডার সভাপতি কবি মৌ মধুবন্তী। কবিকে নিয়ে স্মৃতিচারন করেছেন লেখক মানসী সাহা, সচিব বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা। বাংলাদেশ থেকে আরো যুক্ত হয়েছিলেন কবি ইউসুফ রেজা। তিনি কবির বিখ্যাত কবিতা বারবারা বিডলারের নেপথ্য কাহিনীর উপর আলোকপাত করেছিলেন এবং স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। সর্বশেষ কবিতা পাঠ করেন কবির জনপ্রিয় কবিতা” নদীর জলে আগুন ছিলো” লেখক তাসরীনা শিখা, নির্বাহী সদস্য বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা। কবিতার নির্বাচন ছিল অনুষ্ঠানের নিগুঢ়তম উদ্দেশ্য ও শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রকৃষ্ট।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডার সদস্য লেখক ও বাচিক শিল্পী সুমি রহমান। আরো যুক্ত ছিলেন মন্ট্রিয়াল থেকে বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডার প্রচার সম্পাদক সদেরা সুজন।
যে কবিকে নিয়ে এই স্মরণসভা তার পরিবারকে ছাড়া তো স্মরণসভা পরিপুর্ণ হয় না। বিশেষ করে অনুষ্ঠান যখন হচ্ছিলো অনলাইনে। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত যুক্ত ছিলেন কবি পরিবারের সদস্যগন। কবির স্ত্রী শাহানা চৌধুরী, কন্যা নুসরাত জাহান চৌধুরী ও পুত্র আসিফ চৌধুরী। তাঁদের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি কবির কবি জীবন ছাড়াও কবির সংসার জীবন , ব্যক্তিগত জীবন , কবির কবি হয়ে ওঠার জীবন। স্ত্রী ,কন্যা ও স্ত্রীর সাথে তার মধুর ভালোবাসার সম্পর্ক। কবির উদাসীন জীবন। কবি কন্যা নুসরাত জাহান চৌধুরী তাঁর বাবাকে নিয়ে লেখা একটি কবিতা পাঠ করেন এবং পুত্র আসিফ চৌধুরী, কবির সুমনের একটি সংগীত পরিবেশন করেন। কবির পরিবারের সবার সাথে কথা বলে জানা যায় কবি সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য। কবি পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করা হয় কবি আসাদ চৌধুরী স্মরণসভাটি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন- লেখক মানসী সাহা ও লেখক তাসরীনা শিখা।