বিচিত্র কুমার -এর ছড়া ও কবিতা
ভূতের রেলগাড়ি
রাতের আঁধারে ভূতের গাড়ি চলে,
ডালা ভরা হাড়ি, হাওয়ায় ঝুলে,
ঘণ্টার শব্দে কাঁপে কুঁড়েমি রাত,
ভূতের রেলগাড়ি ছুটে যায় তাত।
বগিতে পেঁচানো ভূতের দল,
চাঁদের আলোয় মিশে ভুতুরে ঝল,
ছুটছে গাড়ি, কাঁপছে মাটির কোর,
হাড়ির গান শুনে ভয়ে পোর।
রেলপথের দুলুনি, ভূতের গগন,
ছাড়াছাড়ি হাড়ির ভেসে উঠে রগন,
দরজার ফাঁকে কান্নার সুর,
ভূতের গাড়ি চলে নিঃশব্দে দূর।
শেষে গাড়ি থামে গোপন বাঁকে,
ভূতেরা সরে যায় একটুখানি ডাকে,
অন্ধকার রাতে স্বপ্নে ভরা ছড়া,
ভূতের রেলগাড়ি, রয়ে যায় স্মৃতি সারা।
(০২)
বানরের মজার শপিং
বানর গেলো শপিং, মিষ্টির দোকানে,
চকলেট আর পুডিং, দেখলো আনন্দে।
মিষ্টির গন্ধে ভরালো, মুখে হাসির খেলা,
“সবগুলো দাও,” বলল, “প্যাকেট করুন দ্রুতেলা।”
জামার শপে ঢুকে, দেখল রঙিন জামা,
সোনালী ফিতা, চকচকে জামা, নতুন চামা।
“এই জামা দাও,” বলল বানর, হাসি মুখে,
মোজার দিকে নজর, পিপঁড়ে বলল, “হুররে!”
মোজার প্রতি চোখ, চকচকে সোনালী রঙে,
“এগুলো দেখি কেমন?” বানরের আনন্দে সঙ্গে।
শপিং শেষে বাড়ি ফিরল, আনন্দে মেতে ওঠা,
নতুন জামা, মোজা, মিষ্টির সঙ্গে সবই সহজা।
বানর গেয়ে উঠল, “আজকের দিন সোনার,
শপিং শেষে জীবন, আনন্দে পরিপূর্ণ তার!”
মিষ্টির পাত্রে ভরা, হাসির সাথে পুরস্কার,
বাননের মজার শপিং, হইলো সার্থক, কার!
(০৩)
হুতুম পেঁচা ও রাতের হাসি
হুতুম পেঁচা মুচকি হাসে,
রাতের বেলায় ঘুরে বেড়ায়, জোনাকীর পাশে বসে সাঝে।
ডালে ডালে উড়ে এসে, খোঁজে তার রাতের আহার,
তাকিয়ে চেয়ে বলে কা-কা, “পোকা কোথাও আছে কি সাদা?”
হাঁসের মতো গলা বাড়িয়ে, দুলিয়ে দোলায় মাথা,
হুতুম পেঁচা দেখে বোঝে, রাতের রাজা, সে যে সাথা।
চাঁদের আলোয় চোখ কটমটে, দেখে যত যা কিছু,
হু-হু করে ডেকে বলে, “এই যে! আমি, আমি হুতুম মুচলিসু!”
গাছের ডালে বসে বসে, গান গায় সে কা-কা-কা,
শুনে শুনে পাখিরা পালায়, ডানা ঝাপটা ঝাপটা।
কোথাও গেলে কে না জানে, এ তার রাজত্বের খেলা,
দখিন হাওয়া ছোঁয়া দিয়ে বলে, “চলো হুতুম, আজকে মেলা!”
এলোমেলো চুলে গুঁজে নেয়, পাতার মাঝে এক ফাঁক,
নাক ডেকে ঘুমায় যখন, গাছও দেয় তাকে ডাক।
বনের পথে সবার সাথে, বাজায় সে তবলা,
হুতুম পেঁচা দেখে রঙ্গ, সবাই খুশি, দোলায় ভাসা।
রাত বাড়লে সে হয়ে যায়, একটু বেশিই মাতাল,
পোকামাকড় ধরে খায়, আর গায় গান তার তাল।
“কু-কু” ডাকে কেউ যদি, সে বলে “হ্যাঁ হ্যাঁ, আমিও আছি,
এই বনের মালিক আমি, রাতের রাজার গাঁথা গান গাইছি!”
তারে দেখে কেউ ভয় পায়, কেউ হাসে মনে মনে,
হুতুম পেঁচা জানে সে, রাতের সেরা বন্ধু এই জনে।
দিনের আলো এলে সে যায় গাছের গহীন ছায়ায়,
হুতুম পেঁচা বলে, “রাত হলেই দেখা হবে, হাওয়ায়!”
এমন করেই রাতের বেলায়, হুতুম পেঁচা মজা করে,
অন্ধকারে ডানা মেলে, সব পাখিদের সঙ্গে গড়ে।
হাসে সে আবার, ডাকে কা-কা, রঙিন রাতের সুরে,
হুতুম পেঁচা, বন-জঙ্গলের রাজা, রাতে উড়ে বেড়ায় দূরে।
# বিচিত্র কুমার, খিহালী পশ্চিম পাড়া, আলতাফনগর ,বগুড়া