শাহজালাল সুজন এর এক গুচ্ছ কবিতা
পল্লী গায়ের ছেলে
পল্লী গায়ের ছেলে আমি
মাটির ঘরে থাকি,
সবুজ মাঠে দৌড়ে গিয়ে
কল্পনায় চাঁদ আঁকি।
নদীর বাঁকে গোসল করি
ডিগবাজি দেই জলে,
কখনো বা মাছ খুঁজে পাই
কাঁদা মাটির তলে।
বিকেল হলে নীল আকাশে
উড়িয়ে দেই ঘুড়ি,
নাটাই সুতোর প্রমের টানে
থাকে বাঁধন জুড়ি।
লাটিম খেলায় মেতে উঠি
দুষ্টু বন্ধুর সাথে,
পড়ার ফাঁকে তারা গুনি
জোৎস্না মাখা রাতে।
কৃষক ঘরে জন্ম আমার
বাংলায় কথা বলি,
মা মাটি দেশ নিখাদ খাঁটি
গর্ব করে চলি।
যাচ্ছে দেশটা ক্ষয়ে
একই দেশের রূপ পাল্টিয়ে
জোকার কত সাজে,
বাড়েনি দাম আয়ের উৎস
প্রমাণ মেলে কাজে।
পতাকাটা লাল সবুজের
আগের মতই লাগে,
ফুল ফুটেনি এই দেশে আজ
মনুষ্যত্বের বাগে।
যে যার মতো লুটের উৎসব
অবাধে যায় করে,
কৌশলে ফাঁদ পাতছে যেনও
এই ভূখণ্ডের চরে।
হাহাকার আর আর্তনাদে
চোখের জলে ভাসে,
দিনের পর দিন অর্ধাহারে
দুঃখ নিয়ে হাসে।
আঙুল চুষে তৃপ্তির ঢেকুর
জনতা যায় সয়ে,
পরাধীন আজ সব জায়গাতে
যাচ্ছে দেশটা ক্ষয়ে।
কবিতারা কথা বলে
ছন্দ দিয়ে দ্বন্দ্ব লাগে
শব্দ কুঁড়ি গুল্ম বাগে
বাক্যের গঠন নাই,
পণ্ড হলো কাব্য চাষে
লিখা শুধু কান্নায় হাসে
কোথায় পেল ঠাঁই।
কত কথা মনের মাঝে
ভঙ্গুর অর্থ মেকি সাজে
নেইতো লেখার মান,
শুভ্র মনে প্রয়োগ করে
মিলিয়ে তাল লিখো স্বরে
তাই কবিতা গান।
অসুর স্বভাব নিয়ে মনে
হরহর করে লিখে ক্ষণে
নেই ভাবার্থে মিল,
ভেতর বাহির সমান হলে
কবিতারা কথা বলে
শুদ্ধ হবে দিল।
মিষ্টি মুখের হাসি
প্রথম যেদিন তোমার চোখে
দেখলাম আমার ছবি,
নামলো বুঝি নীল গগনের
আয়না মাখা রবি।
ছলছল চোখে মায়া ভরা
কি অপরূপ দৃষ্টি,
উষ্ণ হৃদয় আচমকা ঢেউ
নামলো প্রেমও বৃষ্টি।
বাঁকা নয়ন উষ্ণ ঠোঁটের
শিহরণের ঘ্রাণে,
দোলা দিয়ে ঘুম ভেঙ্গেছো
আমার অবুঝ প্রাণে।
যে দিকে যায় তোমায় দেখি
এই হেমন্তের ক্ষণে,
অঙ্গেতে সাজ মেখে আছো
প্রকৃতিরই সনে।
পাগলপারা মনটা আমার
পরেছি প্রেম ফাঁসি,
মরতেও রাজি দেখে তোমার
মিষ্টি মুখের হাসি।