কমলগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একদিনে নারীসহ ৬ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১৪ জন
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে করোনা শনাক্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ নারীসহ ৬জন মারা গেছেন। নতুন শনাক্ত হয়েছেন ১৪ জন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ২ শিশুসহ একই পরিবারের ৫ জন রয়েছেন। কমলগঞ্জে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি, মাথা ব্যাথাসহ নানা উপসর্গের রোগীদের চিকিৎসা চলছে।
জানা যায়, গত ৯ দিন আগে শমশেরনগর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুল কাইয়ুম করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান। এরপর সোমবার (১৯ জুলাই) সকালে তার বড় ভাই আলাউদ্দীন (৪৫) করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, সর্দি, কাশি ও জ্বরে ভোগলেও রোববার বৃষ্টিতে ভিজে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তাকে দ্রুত সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সোমবার ভোরে মারা যান। করোনা সংক্রমিত হয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সোমবার সকালে আদমপুরের পশ্চিম জালালপুর গ্রামের হারুন-অর রশীদ (৪৫) ও কান্দিগাঁও গ্রামের ব্যবসায়ী শওকত আলী (৬২) করোনা উপসর্গ নিয়ে সিলেটের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকাল ৯টায় মারা যান। গত ১৬ জুলাই নমুনা দিয়ে করোনা শনাক্ত হয়ে সোমবার ভোরে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখোলা চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমল কুড়াইয়া (৪৫)। করোনা শনাক্ত হয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে মারা গেছেন আলীনগর ইউনিয়নের যোগিবিল গ্রামের আমেনা বেগম (৬৫)। তিনি কুমিল্লা সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সহকারী অধ্যাপক মঈন উদ্দীনের মা। করোনার উপসর্গ নিয়ে ছোট বোন আমেনা কে দেখতে এসে সোমবার সকালে আমেনার বড় বোন সবজান বিবি (৭০) মারা গেছেন।
কমলগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একদিনে নারীসহ ৬ জনের মৃত্যু, একই পরিবারের ৫ জনসহ নতুন শনাক্ত ১৪ জন
আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক বাদশা বলেন, করোনা আক্রান্ত হয়ে আমেনা বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। করোনার উপসর্গ নিয়ে তাকে দেখতে এসে তারই বড় বোন মারা গেছেন। সোমবার বিকেলে দুই বোনের নামাজে জানাজা এক সাথে অনুষ্ঠিত হয়।
কমলগঞ্জে করোনায় নতুন শনাক্তদের মধ্যে ভাদাইলদেউল গ্রামে ১১ ও ১৩ বছরের দুই শিশু সহ একই পরিবারে ৫ জন, শ্রীনাথপুর গ্রামের ১ জন, বড়চেগ গ্রামের ১ জন, কালেঙ্গা গ্রামের ১ জন, শমসেরনগর চা বাগানে ১ জন, শমসেরনগর বাজার এলাকায় ১ জন, নরেন্দ্রপুর গ্রামের ১ জন, ভানুবিল গ্রামের ১ জন, উত্তর ভানুবিল গ্রামের ১ জন ও তেতইগাঁও গ্রামের ১জনসহ মোট ১৪ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে ও প্রাইভেট ফিজিশিয়ানদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার সর্বত্রই প্রায় ঘরে ঘরেই সর্দি, কাশি, জ্বর ও মাথা ব্যথার রোগী রয়েছেন। তা করোনার উপসর্গ দাবি করে চিকিৎসকরা বলেন, এদের নমুনা পরীক্ষা করলে করোনা পজেটিভ হবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম, মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন, করোনা শনাক্ত ও উপসর্গ নিয়ে ৬ জন মারা যাওয়ার কথা শুনেছেন। তবে এদের মধ্যে ২ জন এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা দিয়ে কারেনা শনাক্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বাকি ৪ জন করোনার নমুনা এখানে দেননি। অন্যত্র দিলেও দিতে পারেন। তিনি আরো জানান, কমলগঞ্জ উপজেলায় এ পর্যন্ত ২৮৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২০২ জন। তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে আরও বলেন, কমলগঞ্জের সর্বত্রই করোনা উপসর্গের রোগী রয়েছেন। শপিংমল ও পশুর হাটে লোকে লোকারন্য। মানুষজন স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এতে করে কমলগঞ্জের অবস্থা আরও ভয়াবহ হতে পারে।
এসডি/বিডি
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান