ফোবানার টিম অ্যাপ্রিসিয়েশন ডিনার
মন্ট্রিয়লে ৩৯ তম ফোবানার সফল সম্মেলনের পর চমৎকার এক গেট টুগেদার হয়ে গেল গতকাল রবিবার, ১৬ নভেম্বর। স্থানীয় অলিম্পিয়া রিসিপশন হলে ফোবানা মন্ট্রিয়ল ২০২৫-এর কমিটি এই গেট টুগেদারটির আয়োজন করে। আয়োজকরা এর নাম দেন টিম অ্যাপ্রিসিয়েশন ডিনার ( Team Appreciation Dinner )। এই ডিনারটি শুধু মজাদার খাওয়া দাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। এটি গতকালের তুষার ঝরা শীতটাকেও গল্পে, গানে, নৃত্যে, আবৃত্তিতে এবং সর্বোপরি কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার আলিঙ্গনে উষ্ণ করে তুলেছিল।
অনুষ্ঠানের নামের সাথেই ছিল এর মূল উদ্দেশ্যটি বর্ণিত। ফোবানা সম্মেলনে বিশেষভাবে সহযোগিতাপ্রদানকারীদের আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটির পক্ষ থেকে অভিনন্দন, কৃতজ্ঞতা, সম্মাননা আর ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন ছিল এই গেট টুগেদারের মূল উদ্দেশ্য। যেটি উৎসাহব্যঞ্জক ও অনুপ্রেরণামূলক উদ্যোগ বলে প্রশংসিত হয় সবার কাছে।
চা, কফি আর স্ন্যাকসের পর সম্মাননা পর্বটি দিয়েই শুরু করা হয় অনুষ্ঠান। মঞ্চে ডেকে নিয়ে ক্রেস্ট দিয়ে, ফুল দিয়ে, কথামালা দিয়ে সংবর্ধিত করা হয়। সম্মেলনকে সফল করে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করা ফোবানা টিমের সদস্যদের ও তাঁদের পাশে থাকা অন্যান্য সহযোগীদেরও এই সম্মান জানানো হয়।
ফোবানা মন্ট্রিয়ল ২০২৫’র কনভেনর,আয়োজক সংগঠন কানাডা-বাংলাদেশ সলিডারিটি ( সিবিএস )’র সভাপতি ও ফোবানা স্টিয়ারিং কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়া সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বক্তব্য দেন।তিনি মন্ট্রিয়লে এবার ফোবানাকে কেন্দ্র করে কমিউনিটিতে গড়ে ওঠা ঐক্যকে ধরে রাখার অনুরোধ জানান। জিয়াউল হক জিয়া সম্মেলন সফলে দল মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সহযোগিতাকে উদাহরণযোগ্য হিসেবে বর্ণনা করেন।
মেম্বার সেক্রেটারী ও ফোবানার আউটস্ট্যান্ডিং মেম্বার ইকবাল কবির বলেন, সম্মেলনে সকল পর্যায়ের কর্মির নিরলস শ্রম, মেধা, সময়, অর্থ যোগানের মূল লক্ষ্য ছিল দর্শকদের পরিপূর্ণ তৃপ্তি দেয়া। এরপরও বিশাল এই কর্মযজ্ঞের কোথাও অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুল ত্রুটি থাকতেই পারে – সেজন্যে কমিটিকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়া কমিটির নানা পর্যায়ের দায়িত্বশীল অনেকেই বক্তব্য রাখেন। বক্তারা অনেকগুলো ইভেন্ট নিয়ে সাজানো তিনদিন ব্যাপী ফোবানা সম্মেলনের আসরটিকে সার্বিক ভাবে সফল করতে কনভেনর জিয়াউল হক জিয়ার দূরদর্শী, দক্ষ নেতৃত্ব ও অমানুষিক পরিশ্রমের কথাও স্মরণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে আসেন ফোবানা স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন। তিনি তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশীদের মূল ধারার পাশাপাশি নিজেদের সংষ্কৃতি, ভাষা ও ঐতিহ্য প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ফোবানার মূল লক্ষ্যকে এগিয়ে নেয়ার আহবান জানান। তিনি মন্ট্রিয়লে ফোবানার কার্যক্রমেরও প্রশংসা করেন। তিনি সংবর্ধিত ব্যক্তিদের হাতে ক্রেস্টও প্রদান করেন।
সাংস্কৃতিক পর্বে স্থানীয় শিল্পীরা পরিবেশন করেন গান, নৃত্য, আবৃত্তি। অনুষ্ঠানে ফোবানা সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশিত জনপ্রিয় উপস্থাপক,আবৃত্তি শিল্পী ও সংগঠক শামসাদ রানা সম্পাদিত দৃষ্টিনন্দন স্মরণিকা বিতরণ করা হয়। রঙিন ফিতাবদ্ধ স্মরণিকাটি তাজা গোলাপের সাথে বিতরণের দৃশ্যটি ছিল বেশ শৈল্পিক।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ফোবানা ২০২৫’র দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা, মন্ট্রিয়লের দুই চৌকস উপস্থাপক – শামসাদ রানা ও লাবলু আকন।
সবশেষে ছিল ফটো সেশন ও নৈশভোজ।
উল্লেখ্য, এবছরের ২৯, ৩০ ও ৩১ আগস্ট মন্ট্রিয়লে উত্তর আমেরিকার বাংলাদেশীদের বৃহত্তম উৎসব ফোবানার ৩৯ তম সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।




