আমার গাঁও |||| শিকদার ওয়াহিদুজ্জামান
আমার ঘর কেড়ে নিলো কে বলোনা আমায় খুলি
তার ঘর ভেঙে খান খান করবো বানাবো পাথর ধুলি।
আমি তো ছিলাম গাঁও গেরামে বাঁশের পাতার ঘরে
আমার দ্বারে হানলো কে আঘাত হানলো সে কুঁড়ে ঘরে।
হালকা একটু বাতাসের পর ঘরখানা মোর দুলতো
ঘরের সকলে ভয়ে জড়সড় বারান্দাতে এসে মিলতো।
অর্ধেক ঘরে থাকতাম সকলে অর্ধেকে থাকতো বোড়ে
বাকীটা ছিলো নড়বড়ে মাঁচা মায়ের রান্না ঘরে।
ঝড়ঝাপটা আর বৃষ্টি বাদল আমার ঘরের কোণে
দিশেহারা মা কাঁদতো একাই ছোণের ঘরের সনে।
থেকে থেকে ঘর উঠতো কেপে এ বুঝি পড়লো ভেঙে
কি করবে মায় বুঝতো না হায় কাঁপতো সারা অঙ্গে।
কোথায় সে ঘর কেড়ে নিলো কে কওনা গাঁওয়ের কবি
আমি ভাবি সদা গাঁয়ের ও ছবি নইতো আমি কবি।
কোথায় আজিকে মহিষের গাড়ি কোথায় গরুর গোয়াল
কোথায় গাঁওয়ের গরুর বাথান কোথায় লাঙল জোঁয়াল।
কোথায় রয়েছে শোল মাগুর আর শিং পুটি কৈ মাছ
গ্রাস করেছে চাষের মাছেতে হাইব্রিড তার পাছ।
ধান্য ক্ষেতের ভিতর দিয়ে আইল যেতো না যতো দূর
সে আইল আজ পাইনা তো খুঁজে গেছে তা বহুদূর।
চিল শালিক আর মাছরাঙা মাছ অনেক অভিমান করে
ছেড়ে গেছে হায় আকাশ সীমানা ছেড়ে গেছে বহু দূরে।
জোনাকীরা আজ জ্বালে না আলো বড্ড কষ্ট বুকে
মনের দুঃখে ছেড়ে গেছে বন বুকের কষ্ট চেপে।
পাতা কুড়ানি আসে না বুড়ী মর্মর আওয়াজ শুনে
ঘুঘু পাখিরা কেঁদে যায় ফিরে গভীর বেদনা নিয়ে।
আমার সে গাঁও ফিরিয়ে দাও কবি যদি বা দেখে থাকো
আমার স্বপ্নের গাঁওখানা তুমি হৃদয়ে গেথে না রাখো।
এমন আঘাত করলো কে কবি আমার সোনার গাঁও এ
সোনা পুড়ে ছাই তামা ও যে হয় দেখে যাও নাও বেয়ে।
ফিরিয়ে দাও কবি আমার সে ঘর সোনার সে গাঁও খানি
নইলে আমি ফিরবো না আর ফিরবো না গাঁও গুলি।
আমি তো খেতাম শাক সবজি আর ছোটো ছোটো মাছ ধরে
আমার আহারে কে ভাগ বসালো কয়ে যাও কবি আজ ধীরে ।
এমন গাঁও এ জন্ম আমার জন্ম যে সার্থক আজ
এমন গাঁও এর কইতে কথা না-ই যে শরম লাজ।
যেথায় আজকে থাকো না কবি আমার গাঁও এর ছবি
একখানা রেখো বুকেতে তোমার একখানা রেখো রবি।
আমার গাঁওএর সরু রাস্তা আর সোনার ফসল গুলি
রক্তিম আভায় সূর্য ডুবাতো সান্ধ্য প্রদীপ জ্বালি।
ফিরিয়ে দাও কবি ফিরিয়ে দাও মোরে আমার সে গাঁও খানি
না হলে আর ফিরবো না আমি ফিরবো না গ্রাম খানি।
আমার সে গাঁও ছবির মতোন মায়ের মমতা মাখা
সারা বিশ্ব ঘুরে পাবে না কো আর এমন চিত্র আকাঁ।
সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, সুনামগঞ্জ
প্রকাশস্থানঃ বাংলো, জেলা ও দায়রা জজ, সুনামগঞ্জ
এস এস/সিএ