কানাডার সংবাদ

টরন্টোর ফারিয়া চৌধুরী আর নেই


টরন্টো প্রবাসী স্বনামধন্য লেখক রুমানা চৌধুরীর কন্যা ফারিয়া চৌধুরী আর নেই।  খুব অল্প বয়সেই চলে যেতে হয়েছে না ফেরার দেশে।

আগামী দু’মাসের মধ্যে সন্তান জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ফারিয়ার। কিন্তু গতকাল ৮ জুলাই, বেলা ১২ টায় আকস্মিকভাবে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। (ইন্না লিল্লাহি… রাজেউন)। ব্লাড ক্লড মৃত্যুর কারন বলে জানা যায়। মায়ের সাথে চলে গেল অনাগত সন্তানও। পৃথিবীর রঙ দেখা হলো না। ফারিয়ার (৩৫) অকাল মৃত্যুতে পুরো টরন্টোর বাঙালী কমিউনিটির মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।

ফারিয়া চৌধুরী, টরন্টো নিবাসী রুমানা চৌধুরী ও এনাম চৌধুরীর বড় মেয়ে। একসময় তিনি ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর বাংলাদেশী স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। এনাম চৌধুরী বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। আগামীকাল বাদ জুমা ফারিহার ভার্চুয়াল জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, ফারিয়ার পৈত্রিক নিবাস ফেনীর ছাগলনাইয়ায়। –তথ্য সহায়তায় ইমাম উদ্দীন ।

ফারিয়া চৌধুরীর মুত্যুতে শোকে মুহ্যমান প্রবাসীরা। তার অকাল মৃত্যু সংবাদ সোশ্যাল মিডিয়া ছড়িয়ে পড়লে গভীর শোক এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে স্ট্যাটাস অব্যাহত রয়েছে। 

মা লেখিকা রুমানা চৌধুরীর সঙ্গে ফারিয়া চৌধুরী


অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল খান লিখেছেন

একি বিচার তোমার হে বিধাতা! কেন এই দুই বছরের নিস্পাপ শিশু আর মাতৃজঠরে অধীর আগ্রহে তোমার সৃষ্ট এ সুন্দর পৃথিবীর আলো দেখার অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে চেতন শিশু মায়ের সাথে মাতৃ জঠর থেকে চলে যেতে হবে? হে শোকে শোক প্রকাশের কোন ভাষা নেই। এ সর্বশক্তিমান, এমুহূর্তে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে এ শোক সইবার ক্ষমতা দাও হে মহান বিধাতা। আমাদের কমুনিটি সদস্যদের কাছে আবেদন যে সমস্ত বন্ধুরা এ পরিবারকে চেনেন এবং জানেন তারা যদি এ মুহূর্তে কোন আনন্দময় ছবি পোস্ট না করেন তাহলে সেটাই হবে সবচেয়ে বড় শোক প্রকাশ।

কবি ও লেখক হাসান মাহমুদ লিখেছন

বজ্রাহত হয়ে বসে আছি।

ত্রিশ বছরের অজস্র স্মৃতি – ওর মা রুমানার সঙ্গে কত অনুষ্ঠান – ছোট্ট মেয়েটা চোখের সামনে বড় হল, বিয়ে হল, আজ সে নেই !

ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলায়হে রাজেউন !

একি বিচার তোমার হে বিধাতা! কেন এই দুই বছরের নিস্পাপ শিশু আর মাতৃজঠরে অধীর আগ্রহে তোমার সৃষ্ট এ সুন্দর পৃথিবীর আলো দেখার অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে চেতন শিশু মায়ের সাথে মাতৃ জঠর থেকে চলে যেতে হবে? হে শোকে শোক প্রকাশের কোন ভাষা নেই। এ সর্বশক্তিমান, এমুহূর্তে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে এ শোক সইবার ক্ষমতা দাও হে মহান বিধাতা। আমাদের কমুনিটি সদস্যদের কাছে আবেদন যে সমস্ত বন্ধুরা এ পরিবারকে চেনেন এবং জানেন তারা যদি এ মুহূর্তে কোন আনন্দময় ছবি পোস্ট না করেন তাহলে সেটাই হবে সবচেয়ে বড় শোক প্রকাশ।

লেখক জসিম মল্লিক লিখেছেন

এ কেমন চলে যাওয়া!

রুমানা চৌধুরী আমাদের টরন্টো শহরের একজন অতি পরিচিত মানুষ। সবার প্রিয়জন। তিনি একজন সক্রিয় লেখক। বাংলা ও ইংরেজী দুই ভাষাতেই লেখেন, কাব্য চর্চা করেন। তার সাথে যখনই দেখা হয় অমায়িক হেসে কুশল জানতে চান। লেখালেখি নিয়ে কথা হয়। তার কন্যা ফারিয়া চৌধুরীকে দু’একটি অনুষ্ঠানে দেখেছি। প্রানবন্ত, হাসিখুশী একটি মেয়ে। এই প্রজন্মের হয়েও বাংলা সংস্কৃতির প্রতি তার একটা টান ছিল। হঠাৎ কাল শুনি সে চলে গেছে পরলোকে! অবিশ্বাস্য! হৃদয় ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাওয়ার মতো খবর। এইভাবে কেউ চলে যায়! কোনো মানে আছে! মা বাবা কেমন করে এই শোক সইবেন! সন্তানের লাশ মা বাবার কাছে যে কত ভারি! জানি শান্তনা দেবার কোনো ভাষা নাই। শুধু বলব আল্লাহ আপনি এই পরিবারটিকে শোক সইবার ক্ষমতা দিন। মনীদ্র রায়ের কবিতার ভাষায় বলতে হয়,

”যে যায় সে চলে যায়, যারা আছে তারাই জেনেছে/

দু’হাতের উল্টো পিঠে কান্না মুছে হাসি আনতে হয়।”

টরন্টো ৯ জুলাই ২০২০

নাহিদ কবীর লিখেছেন

Rummana Chowdhury আপা আল্লাহ আপনাকে এই শোক সইবার শক্তি দিন।

ফারিহা ও তার অনাগত সন্তানের মৃত্যু মেনে নেয়া কঠিন ।

 কবি দেলওয়ার এলাহী লিখেছেন

রূমানা আপা নিজে খুব মায়াবতী মানুষ। তাঁর সঙ্গে কথোপকথনে আলাপচারিতায় মায়ার এই মর্মটা পাওয়া যায় সবসময়ই। যে কবিতাটি তিনি লিখেন হৃদয়ের মায়া ও ভালোবাসার মাধুরি সেই লেখায় জড়িয়ে থাকে। যে কবিতাটি তিনি আবৃত্তি করেন, উচ্চারণের শুদ্ধতার সাথে সেখানে ধ্বনিত হয় তাঁর নিখাঁদ আন্তরিকতা ও বিশ্বাসের আদর। আমাদের এই টরন্টো শহরে সাংস্কৃতিক পরিবারের তিনি একজন অনিবার্য ও অগ্রবর্তী অভিভাবক। অথচ, তিনি সবাইকে জড়িয়ে রাখেন সমতার সমন্বয়ে।

আজ তাঁর সন্তানের আকস্মিক মৃত্যু এই শহরের প্রতিটি মানুষকে স্বজন হারানোর বেদনায় ভারাক্রান্ত করেছে। বিহ্বল করে দিয়েছে। স্তব্ধ হয়ে প্রায় সবাই নিজের কাছেই প্রশ্ন করছেন – রূমানা আপা কীভাবে বহন করবেন এই বেদনার ভার!

আমার নিজের খুব অস্বস্তি লাগছে। নিরক্ষর বোবা মানুষের মতো অপারগতার অসহায়ত্বে নিজের সীমাবদ্ধতার শিকলে বন্দী হয়ে আছি। ‘আত্মার শান্তি হোক’ ‘গভীর সমবেদনা’ ইত্যাদি বাক্যবন্ধ লিখেও মনে হচ্ছে আমার অনুভবের কথাটি বলা হলো না। অতএব, এই বাক্যগুলো আজ অবান্তর।

আসলে মানুষের জীবনে কোনদিনই শতভাগ মনের কথা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ভাষারও একটা সীমাবদ্ধতা আছে। আজকে আবারও আমি বুঝতে পারলাম। রূমানা আপাকে আমরা আজ কী বলে সান্ত্বনা দেই!

প্রভু, আমরা বড় অসহায়!

ইন্নাল ইল্লা হি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজেউন!

সৈয়দ আব্দুল গাফ্ফার লিখেছেন

আমরা গভীর শোকাহত!!

আমাদের প্রিয় রুমানা চৌধুরী আপার বড় মেয়ে ও জাফর চৌধুরীর পুত্রবধু আমার অনেক স্নেহের ও ভালোবাসার ফারিয়া আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেছে পরপারে তার অনাগত শিশুটিকে সাথে নিয়ে। তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে টরোন্টে বিশ্ববিদ্যালযের বাংলাদেশ ছাত্র সমিতির সভাপতি থাকা কালীন পরিচয় ঘটেছিল আমার সাথে অমায়িক মৃদুভাষী ফারিয়া আত্নার আত্নীয় হয়ে যায় কিছুক্ষনের আলাপেই।

রুমানা আপার এবং জাফর ভাই ও ভাবীর জন্য কোন শব্দ নেই যা দিয়ে স্বান্তনা দিতে পারি।

ফারিয়া অনেক শান্তিতে থাকো মা তোমার সন্তানকে নিয়ে

কবি মৌ মধুবন্তী লিখেছেন

আমরা শোকাহত?

তার ও অধিক যদি কিছু থেকে থাকে আজ আমরা তাই। আমাদের প্রিয় রুমানা আপার বড় মেয়ে যে আমার অনেক স্নেহের ও ভালোবাসার ছিলো,সে আজ আমাদের সবাইকে ছেড়ে চলে গেছে দূরগ্রহে।

তার অনাগত শিশুটিকে সাথে নিয়ে।

রুমানা আপার জন্য কোন শব্দ নেই যা দিয়ে স্বান্তনা দিতে পারি। একজন মায়ের সবচেয়ে প্রিয়বন্ধু ছিল তার বড় মেয়ে।

ফারিয়া অনেক শান্তিতে থাকো মা তোমার সন্তানকে নিয়ে।

সিবিএনএ পরিবারের শোক

কানাডা-বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি সিবিএনএ, সিবিএনএ২৪ডটকম এবং দেশদিগন্ত মিডিয়ার পক্ষ থেকে ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর বাংলাদেশী স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ফারিয়া চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছে। সিবিএনএ-এর নির্বাহী সদেরা সুজন এক শোক বার্তায় বলেছেন ‘  আমাদের প্রিয় লেখক কবি রুমানা চৌধুরীর কন্যা ফারিয়া হোসেন বড্ড অসময়ে না ফেরার দেশে চলে যাওয়াতে আমরা শোকাহত, মর্মাহত। তার মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি এবং তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।

 

 

সিএ/এসএস


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন