আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা। ফাইল ছবি
মুহম্মদ আকবর।। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২১তম ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আবার সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন ওবায়দুল কাদের। থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের নাম এককভাবে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিবেচনায় রয়েছে।
এদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনে-ই নয়, দেশের প্রাচীনতম দলটির নতুন নেতৃত্ব নিয়ে সর্বত্রই রয়েছে নানা আলোচনা। কে হচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক এ প্রশ্নে ঘুরেফিরে আলোচনায় আছে অনেকের নাম। তাদের মধ্যে রয়েছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান।
সব কিছু ঠিক থাকলে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২১ ডিসেম্বর দলের জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের নাম ঘোষণা হতে পারে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের বিষয় বিবেচনায় রেখে আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। সে কারণে সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। তবে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য পদে বেশ কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। দলের বিভিন্ন পদে আসতে পারে কয়েকটি নতুন মুখ। দুজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হতে পারে। সেখানে একজন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্পাদক পদে থাকা একজনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে বসানো হতে পরে। এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে বাদ পড়তে পারেন একজন, আরেকজনকে কেন্দ্রীয় সদস্য পদে নেওয়া হতে পারে।
সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য পদে আসতে পারে বেশ কিছু পরিবর্তন। সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য পদ থেকে ১০-১২ জন বাদ পড়তে পারেন। শূন্য জায়গায় শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সন্তান, বেশ কজন নারী ও সাবেক ত্যাগী ছাত্রনেতা ও তৃণমূল নেতার ঠাঁই হতে পারে।
বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, প্রধানমন্ত্রীকন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং শেখ রেহানাপুত্র রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির প্রতি আওয়ামী লীগ ও সাধারণ মানুষের আগ্রহ থাকলেও এবারের কমিটিতে তাদের কেউ আসতে চান না বলে শোনা যাচ্ছে।
আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ২০ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় দুদিনের এ সম্মেলন উদ্বোধন করবেন। দলের সাড়ে সাত হাজার কাউন্সিলর ২১ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মাঠে নতুন নেতা নির্বাচনের জন্য বসবেন। কাউন্সিলরদের মতো সাড়ে সাত হাজার ডেলিগেট সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন। ১৫ হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে উদ্বোধনী অধিবেশনে। এর মধ্যে কূটনীতিকরাও রয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আওয়ামী লীগের সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে পারেন বলে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন।
সম্মেলনকে ঘিরে এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে পদ্মা সেতুর আদলে মঞ্চ তৈরির কর্মযজ্ঞ। মঞ্চটি হবে ডিজিটাল। যার উচ্চতা ২৮ ফুট, দৈর্ঘ্য দেড়শ ফুট। প্রস্থ ১৪০ ফুট। ২৮টি এলইডি পর্দায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান তুলে ধরা হবে। মঞ্চের প্রথম সারিতে বসবেন প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্যরা। এর পর থাকবেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
এদিকে এবারের সম্মেলনে ছয়টি নির্দিষ্ট বিষয় আলোচ্যসূচিতে থাকবে। এগুলো হলো- শোক প্রস্তাব উত্থাপন ও গ্রহণ, সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট উত্থাপন ও অনুমোদন, ঘোষণাপত্রের সংশোধনী পেশ ও অনুমোদন, গঠনতন্ত্রের সংশোধনী ও অনুমোদন, সংসদীয় বোর্ড গঠন এবং গঠনতন্ত্রের ২০ ধারা অনুযায়ী ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ নির্বাচন। এবারের সম্মেলনের স্লোগান- ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে/বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে গড়তে সোনার দেশ/এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ’।
এস এস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন