দিনে ১০ মিনিট প্রকৃতিতে কাটানো শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক চাপ কমাতে পারে -তাহনিয়া কাদের
অভিনব এক গবেষণায় উঠে এসেছে প্রকৃতির সাথে কেবল ১০ মিনিট কাটালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গড়ে উঠা মানসিক চাপ কমতে পারে।
ইদানিং কালের কিছু রিপোর্ট অনুযায়ী দিনে দিনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক অসুস্থতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্চ স্তরের মানসিক চাপ এবং মানসিক অসুস্থ্যতায় ভুগছে। এরই মধ্যে দীর্ঘ দিনের জন্য অস্থিতিশীল শিক্ষার আবহাওয়ায় ভুগতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের করোনা পরিস্থিতিতে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাজ্যে বিগত দশ বছরে উদ্বেগ, হতাশা এবং সিজোফ্রেনিয়া সহ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার প্রতিবেদনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা পাঁচগুণ বেড়েছে। মার্কিন শিক্ষার্থীদের দ্বারা অভিজ্ঞ কিছু সাধারণ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে অপ্রতিরোধ্য উদ্বেগ এবং অতিরিক্ত হতাশা অন্তর্ভুক্ত। এধরনের সমস্যা অনুভুত হলে স্বাভাবিক জীবন যাপন কঠিন হয়ে পরে শিক্ষার্থীদের জন্য।
এমনকি কেউ কেউ আত্মহত্যার কথা ভাবছেন বলেও জানা গেছে সেসব রিপোর্ট থেকে। যদিও মানসিক অসুস্থতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েই চলেছে, তারপরেও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সীমাবদ্ধ হওয়ায় অনেককেই দীর্ঘ প্রতীক্ষা করতে হয় স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে। তবে গবেষণার আরেকটি সংস্থা পরামর্শ দেয় যে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির একটি উপায় ঘরের বাইরে কিছু সময় কাটানোর মতো সহজ হতে পারে। এসব গবেষণার প্রমাণগুলি দেখায় যে প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকা স্ট্রেস হ্রাস করতে এবং মানসিক সুস্থতায় উন্নতি করতে পারে।
এই সমাধানটি আশাব্যঞ্জক মনে হলেও প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রবেশের সুযোগ সীমাবদ্ধ হতে পারে কারন, অনেক ছাত্রকে তাদের বেশিরভাগ সময় বাড়িতে পড়াশোনা, ক্লাস, কনফারেন্সে বা লাইব্রেরিতে ব্যয় করতে হয়। তারপরেও কমপক্ষে ১০ মিনিট প্রকৃতিতে দিন এবং নিজের মানসিক যত্ন নিন। তবে একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে শরীরের কর্টিসল (“স্ট্রেস” হরমোন) এর মাত্রা হ্রাস করার জন্য সপ্তাহে তিনবার ২০ থেকে ৩০ মিনিটের প্রকৃতি ভ্রমণ সবচেয়ে কার্যকর । যদিও করোনা পরিস্থিতিতে খুব দূরে যাওয়া দুস্কর, সেক্ষেত্রে বাড়ীর ছাদে বা আঙ্গিনায় পছন্দমত গাছগাছালিতে মনোরম প্রকৃতি নিজের হাতেই গড়ে তুলতে পারেন। সাবধানতা অবলম্বন করে যতটা কাছে সম্ভব নদী, পাহাড় বা জঙ্গলে কিছুটা সময় কাটিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন এবং গুরুত্ব দিন। কেননা, এই যাবত কাল অবধি মানসিক স্বাস্থ্য একটি অবহেলার বিষয় হয়েই আছে। আর সে প্রভাবটা সবচেয়ে বেশি পরছে শিক্ষার্থীদের উপর। তরুণ প্রজন্ম প্রতিটা সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন ভালো থাকুন।
-সাউথ কোরিয়া থেকে