“ধর্ষকেরা ‘পশুর’ মতো”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নারীদের এ পশুর হাত থেকে বাঁচাতে সরকার সংশ্লিষ্ট আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান যুক্ত করেছে। ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস দিবস ২০২০’ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আজ মঙ্গলবার এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ধর্ষকেরা হলো পশু, যে কারণে তারা তাদের অমানবিক প্রকৃতি দেখায়। এই কারণেই আমাদের মেয়েরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আমরা আইন সংশোধন করেছি এবং ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি অন্তর্ভুক্ত করে আমরা মন্ত্রিসভায় সংশোধনীটি পাস করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন সংসদ অধিবেশন না থাকায় সংশোধনী কার্যকর করার জন্য সরকার একটি অধ্যাদেশ জারি করছে। আমাদের লক্ষ্য হলো উদ্ভূত যেকোনো সমস্যার মোকাবিলা করা এবং এটি সমাধান করা।’
আন্তর্জাতিক দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশে প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে সুশাসন নিশ্চিত করবে টেকসই উন্নয়ন’। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো. এ বি তাজুল ইসলাম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহসিন বক্তব্য দেন। বেদেনী নুরুন্নাহার এবং মো. রেজাউল হক সরকারের কাছ থেকে দুর্যোগ সহনশীল বাড়ি পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করেন। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক কাশফিয়া তালুকদারও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সেরা স্বেচ্ছাসেবক বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী নতুনভাবে নির্মিত ১৭ হাজার ৫টি দুর্যোগ সহনশীল ঘর ভার্চ্যুয়ালি উদ্বোধন করেন এবং ‘স্ট্যান্ডিং অর্ডার অব ডিজাস্টার’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন অধ্যাদেশে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। জাতীয় সংসদের অধিবেশন না থাকায় এটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইনে পরিণত হলো। এখন নিয়ম অনুযায়ী সংসদ অধিবেশন শুরু হলে এটি আইন আকারে পাস হবে।
আগের আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। এখন সর্বোচ্চ শাস্তি হবে ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’।
এর আগে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের খসড়া গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পায়।
একের পর এক ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার আন্দোলনের মধ্যে গতকাল মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আইনি যাচাই (ভেটিং) সাপেক্ষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ওই খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া এক তরুণীকে তুলে নিয়ে সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ধর্ষণ (২৫ সেপ্টেম্বর) এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আরেক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ৪ অক্টোবর ভাইরাল হওয়ার পর সারা দেশে মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ধর্ষণ-নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ, মতিঝিল, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে দুই সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। এসব কর্মসূচি থেকে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবি ওঠে। এমন অবস্থায় আইনমন্ত্রী গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের জানান, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন হতে যাচ্ছে। গতকাল ওই খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রাখার পাশাপাশি আরও দুটি সংশোধনী আনা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো যৌতুকের ঘটনায় মারধরের ক্ষেত্রে (ধারা ১১-এর গ) সাধারণ জখম হলে তা আপসযোগ্য হবে। এ ছাড়া এই আইনের চিলড্রেন অ্যাক্ট-১৯৭৪-এর (ধারা ২০-এর ৭) পরিবর্তে শিশু আইন ২০১৩ প্রতিস্থাপিত হবে।
সূত্রঃ প্রথম আলো
বাঅ/এমএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন