বিবিসি বাংলা’র প্রতিবেদন
ব্রিটেনে সংক্রমণ বিপর্যয়ের মধ্যেই ভ্যাকসিন নিয়ে সন্দেহ-আপত্তি
নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের জেরে ব্রিটেনে সংক্রমণ এত দ্রুত বাড়ছে যে সরকারি হিসাবেই ইংল্যান্ডে এখন প্রতি ৮৫ জনের একজন সংক্রমিত।
১৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক হিসাবে ইংল্যান্ডে কোভিড রোগীর সংখ্যা ৬৫০,০০০। আগের সপ্তাহে ওই সংখ্যা ছিল ৫৭০,০০০। সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হচ্ছে লন্ডনে। কিন্তু লন্ডনের স্বাস্থ্য কর্মীরা বলছেন, সংক্রমণের ভীতি বাড়লেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ প্রস্তাব পেয়েও ভ্যাকসিন নিতে অস্বীকার করছেন।
ইংল্যান্ডের জাতীয় স্বাস্থ্য বিভাগ বা এনএইচএসের কর্মকর্তা মোস্তফা ফারুক, যিনি লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যমলেটস এলাকার একটি জিপি সেন্টার বা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক। তিনি জানান, ভ্যাকসিন দেওয়া শুরুর প্রথম সপ্তাহেই তারা সন্দেহ, বিভ্রান্তি এবং আপত্তির মুখোমুখি হয়েছেন। আমরা যখন ফোন করে ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছি, অনেক মানুষ গড়িমসি করছেন, নানা প্রশ্ন করছেন। অনেকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করছেন।
ব্রিটেনে ১৫ ডিসেম্বর ফাইজার/বায়োনটেকের তৈরি ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় ৮০ বছর এবং তার ঊর্ধ্ব বয়সীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
মোস্তফা ফারুক জানান, ব্রিটেনে সংক্রমণ বিপর্যয়ের মধ্যেই ভ্যাকসিন নিয়ে সন্দেহ-আপত্তি একন স্পষ্ট যার প্রমান প্রথম সপ্তাহে টাওয়ার হ্যামলেটসের ৩৬টি জিপি সার্ভিসের মাধ্যমে ৮০ বা তার ঊর্ধ্ব ৯৩৫ জনকে টিকা দেওয়ার টার্গেট নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আপত্তি-অনীহার কারণে লক্ষ্যমাত্রার ৪৪ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। ফলে বেঁচে যাওয়া ভ্যাকসিনগুলো ডাক্তার, নার্স বা অন্য স্বাস্থ্য কর্মীদের দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে পরে ডাক্তাররা নিজেরাই মানুষের বাসায় ফোন করেছেন, কিন্তু তারপরও অনেকেই ভ্যাকসিন নিতে সরাসরি অস্বীকার করেছেন।
উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলে, একজন জিপি একদিনে ২৫ জনকে ফোন করেছিলেন কিন্তু তাদের সাত জন সরাসরি ভ্যাকসিন নিতে অস্বীকার করেন, বাকি পাঁচজন নানা কারণে আসতে অপরাগতার কথা জানান।
মোস্তফা ফারুক বলেন, মানুষের মধ্যে ব্যাপক সন্দেহ কাজ করছে। তাদের নানা প্রশ্ন। কেউ বলছেন কীভাবে এত তাড়াতাড়ি এই ভ্যাকসিন বের করা সম্ভব হলো, ঠিকমত ট্রায়াল হয়েছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন তারা। অনেকে সন্দেহ করছেন বয়স্কদের হয়তো গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, তাদের জিপি সার্জারি থেকে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য যাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে তাদের অর্ধেকেরও বেশি নানা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ভ্যাকসিন বিরোধী বিভিন্ন গ্রুপ সোশ্যাল মিডিয়াতে যেসব প্রচারণা চালিয়েছে অনেক মানুষ তাতেও প্রভাবিত হচ্ছেন।
-বিডি প্রতিদিন
এস এস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন