বাংলাদেশের সর্বত্র মুখে মুখে আলোচনা শুধু পাপিয়া । ক্যাসিনো কাণ্ডের মতোই ঝড় তুলেছে পাপিয়ার অপরাধ জগতের গল্প। মুখে মুখে আলোচনা নরসিংদী থেকে উঠে আসা পাপিয়া কীভাবে এই সাম্রাজ্য গড়ে তুললেন। কারাইবা মদত দিয়েছে তাকে। এই অপরাধ জগতের সুবিধাভোগী কারা এনিয়েও আলোচনা চারপাশে। র্যাবের হাতে পাকড়াও হওয়ার পর একের পর এক বেরিয়ে আসে পাপিয়ার অন্ধকার জগতের নানা তথ্য। খোঁজা হচ্ছে তার মদতদাতাদের। ইতোমধ্যে তিন মামলায় ১৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে তাকে। জিজ্ঞাসাবাদে এ সংক্রান্ত আরও তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে ধারণা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
তদন্ত সূত্র জানায়, অনলাইন ক্যাসিনো ডন সেলিম প্রধানের অন্যতম সহযোগী ছিল পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন। সেলিমের ডেরায় ক্যাসিনোর পাশপাশি নানা অনৈতিক কাজেরও সঙ্গেও ছিলো পাপিয়া। এসব কাজ করে সে কাড়ি কাড়ি অর্থ কামিয়েছে। এই অর্থ দিয়ে গড়েছে বিপুল বিত্ত।
সেলিম প্রধানের ক্যাসিনোকাণ্ডের তদন্তের সূত্র ধরেই পাপিয়ার অপরাধ জগতের খোঁজ পায় র্যাব। তদন্ত সূত্র জানায়, ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর গা ঢাকা দেয় পাপিয়া ও তার স্বামী। তবে সুযোগ বুঝে তারা আবার নিজেদের অপরাধকাণ্ড শুরু করে। নিরাপদ হিসেবে পাঁচ তারকা হোটেলে তারা সম্রাজ্য গড়ে তুলে। সেলিম প্রধানের সঙ্গে পাপিয়া দম্পত্তিরও থাইল্যান্ডে বার রয়েছে। সেখানে তাদের অন্য বিনিয়োগ আছে বলেও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধারণা। সূত্র জানিয়েছে, তদন্তের অংশ হিসেবে এখন পাপিয়ার মদতদাতাদের খোঁজা হচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি তালিকা করা হয়েছে। এতে অনেকের নাম এসেছে। তদন্ত শেষে অনেকের নাম এই তালিকায় আসতে পারে। সূত্র জানায়, যাদের সঙ্গে পাপিয়ার ঘনিষ্টতার তথ্য প্রকাশ পেয়েছে তাদেরও তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে।
র্যাব বলছে, জাল টাকা বহনের অভিযোগেই মূলত পাপিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে অবৈধ অস্ত্র, মাদক, অনৈতিক ব্যবসা, ব্ল্যাকমেইলিং, সরকারি চাকরির তদবির বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, ক্যাডার বহিনী লালন পালনেও পাপিয়া ও তার স্বামীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মামলা দিয়ে আসামীদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ রিমান্ডে এনে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও মামলার তদন্তের দায়িত্ব র্যাবের কাছে আনার প্রক্রিয়া চলছে। কারণ পাপিয়ার অপরাধ জগতের সঙ্গে আর কার কার সম্পৃক্ততা আছে সেটি খুঁজে বের করবে র্যাব। এছাড়া পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও পাপিয়ার অপরাধের খতিয়ান বের করার চেষ্টা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাপিয়া দম্পতির আশ্রয় দাতারা এখন রীতিমত আতঙ্কে আছেন। কারণ পাপিয়া ইতোমধ্যে র্যাবের কাছে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। এছাড়া আদালত তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ১৫ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, রিমাণ্ডে নিয়ে পুলিশের জিজ্ঞসাবাদে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। র্যাব-১ অধিনায়ক শাফিউল্লাহ বুলবুল মানবজমিনকে বলেন, আমরা গত কয়েকদিন ধরেই পাপিয়াকে নিয়ে কাজ করেছি। আমাদের কাছে যা যা তথ্য ছিলো সব প্রকাশ করেছি। এখন তাদেরকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ রিমান্ডে এনে তদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। তবে আমরা চাচ্ছি মামলাগুলো তদন্ত করতে। কারণ তাদেরকে আরও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। পাপিয়া ও তার স্বামীর সঙ্গে আরো কে কে আছে এসব বিষয় খোঁজে বের করবো।
সূত্র জানিয়েছে, শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান সুমনের বেড়ে উঠা ছিল অনেকটা সাধারণভাবেই। সাধারণ পরিবারেই সন্তান হলেও দুজনের মধ্যে কিছুটা উচ্ছৃঙ্খল মনোভাব ছিলো। ২০০৬ সালে পাপিয়ার সঙ্গে প্রথম মফিজুরের পরিচয় হয়। তখন পাপিয়া নরসিংদী কলেজেই লেখাপড়া করতো। ওই সময়ই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। দুই বছর প্রেমের সম্পর্কের পর ২০০৯ সালে তারা বিয়ে করে। এরপর থেকেই স্বামী-স্ত্রী দুজনেই রাজনীতিতে সক্রিয় ভাবে পা রাখে। যদিও এর আগে থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতো মফিজুর। ২০১০ সালে নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক করা হয় পাপিয়াকে। সর্বশেষ নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয় তাকে। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, পাপিয়ার রাজনৈতিক পদাচারণার পেছনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাদেরই হাত ছিলো।
টোপ হিসেবে ব্যবহার করে তার কাছ থেকে অনেকেই অনেক ফায়দা নিয়েছে। আর পাপিয়াও তার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সকলের চাহিদা পূরণ করেছে। পাপিয়ার বেপরোয়া আচরণের জন্য তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল একটি মহল। এজন্য তার ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাও ঘটেছিলো। এরপর থেকে নরসিংদীতে কিছুটা অনিয়মিত ছিল সে। তবে ঢাকায় এসে সাবেক সংরক্ষিত এক নারী এমপির হাত ধরে আবার খোলস পাল্টাতে শুরু করে পাপিয়া ও তার স্বামী। ব্যবসা বাণিজ্য থেকে শুরু করে অনেক বড় বড় নেতা, ব্যবসীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে পাপিয়ার। বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে তার অবস্থান জানান দেয়। এটি তার বেপরোয়া হয়ে উঠার অন্যতম কারণ। সূত্র জানায়, প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সরকারি চাকরিজীবি ও ব্যবসায়ীদের বশে আনার জন্য পাপিয়া স্কটসার্ভিসের ব্যবসা শুরু করে। এজন্য ঢাকা ও ঢাকার বাইরের গরীব ঘরের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণীদের চাকরি দেবার নাম করে তার হেফাজতে নিয়ে যেতো। জোরপূর্বক এসব তরুণীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করাতো। তদবির বাণিজ্য হাসিল করার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে তরুণীদের পাঠিয়ে দিত। টাকা ও নারীর লোভেই তাকে আশ্রয় দিতে থাকে অনেকে। এই তালিকায় রাজনৈতিক ব্যক্তি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, উচ্চপদস্থ সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবি, শিল্পপতি এমনকি প্রশাসন সংশ্লিষ্ট লোকজনও ছিল।
সূত্র জানিয়েছে, পাপিয়া ও তার স্বামীর প্রভাব থাইল্যান্ড, ভারত ও মালেয়শিয়ায় ছিল। থাইল্যান্ডের বারে ঢাকার অতিথিদের জন্য বিশেষভাবে মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হতো। যেখানো দেশের অনেক পরিচিত মুখদের প্রায়ই দেখা মিলতো। তাদের মনোরঞ্জনের জন্য কমবয়সী মেয়েদের উপস্থিত রাখা হতো। এছাড়া বিভিন্ন দেশের বার কন্যাদের সেখানে থাকতেন। এছাড়া ভারতের কয়েকটি স্থানে গিয়েও তারা পার্টির আয়োজন করতো। সূত্র জানায়, পাপিয়া ও সুমনের টার্গেট থাকতো ব্ল্যাকমেইলিং করা। তাদের ডেরায় যদি কেউ প্রবেশ করতো এবং অনৈতিক কাজ করতো তবে গোপণে তাদের ভিডিও সংগ্রহ করতো। পরে ওই ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করে টাকা আদায় করতো। পাপিয়া ও সুমনের কাছে এমন ভিডিও পাওয়া গেছে।
এদিকে র্যাব পাপিয়া ও তার স্বামীর কি পরিমাণ বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাট, প্লট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, নগদ ও ব্যাংক হিসাবে কত টাকা আছে তার হিসেব বের করছে। ইতোমধ্যে র্যাব তাদের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা,বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের চেক বই, ব্যাংকের কার্ড জব্দ করেছে। এর বাইরে কি পরিমাণ টাকা আছে সেটি বের করা হবে।
তিন মামলায় ১৫ দিনের রিমাণ্ড: শামিমা নূর পাপিয়ার বিরুদ্ধে ডিএমপির পৃথক থানায় তিনটি মামলা করেছে র্যাব। এরমধ্যে শনিবার বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১টি ও শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র আইনে ১টি ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১টি মামলা করা হয়েছে। বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১০ দিনের রিমাণ্ড চেয়ে তাকে গতকাল আদালতে হাজির করা হয়। একইভাবে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায়ও রিমাণ্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত পাপিয়া ও তার স্বামীকে তিন মামলায় ১৫ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন। আর তাদের দুই সহযোগীকে ৫ দিন করে রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন।
বিমানবন্দর থানার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্মক (তদন্ত) কাজী কায়কোবাদ পাপিয়াসহ মোট চারজনকে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমাণ্ড আবেদন করেন। রিমাণ্ড আবেদনে তিনি বলেন, পাপিয়াসহ চার আসামি সংঘবদ্ধভাবে অবৈধ অস্ত্র, মাদক, চোরাচালন ও জাল নোটের ব্যবসা, চাঁদাবাজি, তদবির বাণিজ্য, জমি দখল- বেদখল করে অনৈতিক ব্যবসা বাণিজ্যর মাধ্যমে বিপুল অর্থ বিত্তের মালিক হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে আসামিদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বৈদেশিক মুদ্রার উৎস, জাল টাকা তৈরি চক্রের সক্রিয় সদস্যদের মূলহোতাকে গ্রেপ্তারসহ ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। এসময় আসামি পক্ষের আইনজীবির সওদাগর অ্যানী ও মশিউর রহমান রিমাণ্ডের বিরোধীতা করে জামিন আবেদন করেন। দুই পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুর রহমান ও মোহাম্মদ জসীম তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর মধ্যে বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদুর রহমান পাঁচ দিন, শেরেবাংলা নগর থানার অস্ত্র ও মাদক আইনে দায়ের করা মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীম পাঁচ দিন করে মোট দশদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এর আগে বিকাল সাড়ে তিনটার দিকেপুলিশ পাপিয়াসহ চার আসামিকে আদালতে হাজির করে। আদালতের কাঠগড়ার পাশে একটি চেয়ারে তাকে বসানো হয়। পরে পাপিয়াকে দেখার জন্য বিভিন্ন শ্রেণীর উৎসুক জনতারা আদালত পাড়ায় ভীড় করেন। এসময় অনেকেই পাপিয়া ও তার সহযোগীদের ছবি তুলেন। র্যাব জানিয়েছে পাপিয়ার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে আরেকটি মামলা হবে। এ নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়েছে।
নরসিংদীতে তোলপাড়: পাপিয়া ও সুমনের নেপথ্যের কাহিনি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর এই দম্পতির কথা এখন নরসিংদীতে ‘টক অব দ্য টাউন’। রোববার সকালে র্যাব-১ এর একটি তদন্তকারী টিম নরসিংদী শহরের ভাগদীস্থ পাপিয়ার পিত্রালয় ও পশ্চিম ব্রাহ্মন্দীস্থ শ্বশুরালয়ে অভিযান চালায়। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০০ সালের দিকে নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমনের উত্থান শুরু। শৈশব থেকেই চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও ব্ল্যাকমেইল ছিল মফিজের প্রধান পেশা। সুমন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। ২০০১ সালে পৌরসভার কমিশনার মানিককে যাত্রা প্যান্ডেলে গিয়ে হত্যার পর মফিজ আলোচনায় আসেন। এরপর মফিজ পাপিয়াকে বিয়ে করে। এরপরই তার স্ত্রী পাপিয়াকে রাজনীতিতে যুক্ত করেন। প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেন হত্যাকাণ্ডের পর দুর্বৃত্তায়ন রোধকল্পে সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নরসিংদী-১ আসনের এমপি লে: কর্নেল (অব.) নজরুল ইসলাম হিরু, নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং নরসিংদী পৌর মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল সন্ত্রাসী মফিজ ও তার স্ত্রী পাপিয়াকে আওয়ামী লীগের কর্মকান্ডে আসতে নিষেধ করেন। এর কয়েকমাস পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের ভাঙন দেখা দিলে পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন একটি গ্রুপে যোগ দেয়। অপরদিকে তাদের সখ্য গড়ে ওঠে ঢাকা সংরক্ষিত আসনের সাবেক মহিলা এমপি সাবিনা আক্তার তুহিনের সঙ্গে। ২০১৪ সালের ১৩ই ডিসেম্বর জেলা যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে বতর্মান জেলা পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য তৌহিদা সরকার রুনা সভাপতি ও শামীমা নূর পাপিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এলাকায় অভিযোগ আছে, পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন নরসিংদী এলাকায় ‘কিউ অ্যান্ড স্থি নামের একটি ক্যাডার বাহিনী পরিচালনা করতেন। যাদের মাধ্যমে তারা নরসিংদীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, মাসোহারা আদায়, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে আসছিলেন। তাদের এই ক্যাডার বাহিনীর অনেকের নাম ইতোমধ্যে জানা গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য র্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানা যায়। গত কয়েক বছর আগে পাপিয়ার উপস্থিতে তার স্বামী সুমন তার প্রতিপক্ষের হামলায় নরসিংদী শহরের বাসাইল এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয় মফিজ। তার চিকিৎসার পর সে সুস্থ হলে এর পর থেকে সে নরসিংদী ছড়ে ঢাকায় পাড়ি জমায়। নরসিংদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র কামরুজামান কামরুল বলেন, পাপিয়া ও তার স্বামীর চলাফেরা ৯/১০ বছর আগ থেকে আমাদের সন্দেহ ছিল। তখন থেকেই তাদেরকে আমরা নরসিংদীতে এবং রাজনীতি থেকে বিদায় করে দিয়েছি। নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেন, যুব মহিলা লীগের কোন অস্তিত্ব নেই। নরসিংদী আওয়ামী লীগের কোন নেতার সাথে আলোচনা বা পরামর্শ ছাড়াই এবং আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বাধা দেয়ার পরও কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আকতার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু উকিল পাপিয়াকে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক করেন।
আরও পড়ুনঃ