দেশের সংবাদ ফিচার্ড

১ স্বামীকে নিয়ে ২ নববধূর টানাটানি

১ স্বামীকে নিয়ে ২ নববধূর টানাটানি

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে এক ব্যাংক কর্মকর্তা বরকে নিয়ে দুই নববধূর হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। পরে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এক নববধূর পক্ষ নিয়ে বরকে তুলে নিয়ে যায় বলে জানা গেছে। শুক্রবার (৩০ জুলাই) এ ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে এ ঘটনার পর পুলিশ এসে উভয়পক্ষের বিয়ের কাগজপত্রের বৈধতা দেখে হতবাক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়নের উত্তর ভরতের ছড়া গ্রামের মৃত. ময়েন উদ্দিনের পুত্র ও রাস্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকের ভূরুঙ্গামারী শাখার ক্যাশ কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন গোপনে দুই নারীকে বিয়ে করেন। প্রথমে ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নে আব্বাস আলীর মেয়ে আশানুল আঁখিকে গোপনে চলতি বছরের মার্চ মাসে বিয়ে করেন।

পরে ২৩ জুলাই একই উপজেলার আন্ধারীরঝাড় ইউনিয়নের খামার আন্ধারীরঝাড় এলাকার আয়নাল হকের মেয়ে আইরিনকে ১৬ লাখ টাকার দেনমোহরে বিয়ে করেন।

অভিযোগ উঠেছে, আইরিনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে আশানুল আঁখিকে বিয়ে করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আইরিন তার মামাবাড়িতে ছানোয়ারকে ডেকে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করে। বিয়ের পর মামার বাড়িতে এক সঙ্গে দু’রাত কাটান তারা।

শুক্রবার পারিবারিকভাবে আইরিনকে ছানোয়ারের বাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথাবার্তা হয়। সে মোতাবেক বাড়িতে আয়োজন চলছিল। কিন্তু ছানোয়ারের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ যোগাযোগ না করায় আইরিনের পরিবার খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ছানোয়ার আরেকটি মেয়েকে বিয়ে করে বাড়ীতে তুলেছে। এ খবর পেয়ে ছানোয়ারের উত্তর ভরতের ছড়া গ্রামে গিয়ে আইরিনের পরিবার উপস্থিত হয়।

এ সময় ছানোয়ার আশানুল আঁখিকে নিয়ে ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নে তার শ্বশুরবাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিল। এসময় দুই নববধূ ছানোয়ারের স্ত্রীর দাবি নিয়ে প্রথমে ছানোয়ারকে নিয়ে টানাহেঁচড়া এবং পরে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতিতে লিপ্ত হয়। এ সময় গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাদেরকে শান্ত করে মীমাংসার উদ্যোগ নেয়।

মীমাংসা বৈঠক বসার পূর্বে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন সরকার একটি মাইক্রোবাসে ৮-১০ জনসহ এসে আশানুল আঁখির পক্ষ নিয়ে বরসহ আঁখিকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।

আইরিন জানান, ছানোয়ার আমাকে প্রথম বিয়ে করেছে। বরযাত্রী নিয়ে আজকে আমাদের বাড়ীতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা। অথচ তার বাড়িতে এসে দেখি নতুন বউ নিয়ে সে শ্বশুরবাড়ি পাড়ি জমাচ্ছে। তাকে জোর করে আশানুল আঁখি বিয়ে করেছে বলে দাবি করেন তিনি। আমি ছানোয়ারের বিয়ে করা প্রথম স্ত্রীর দাবি করে এখন তার বাড়িতে অবস্থান করছি।

অপরদিকে আশানুল আঁখি জানান, চলতি বছরের মার্চ মাসে ছানোয়ারের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। নানা কারণে তা প্রকাশ করা হয়নি। এজন্য বৃহস্পতিবার রাতে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে আসি। আমিই ছানোয়ারের প্রথম স্ত্রী। সে (আইরিন) চায়ের দাওয়াত দিয়ে ১৬ লাখ টাকা দেনমোহরে জোর করে বিয়ে রেজিস্ট্রি করেছে। তার উদ্দেশ্য ভাল ছিল না।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মাস্টার জানান, একজন ব্যক্তি সপ্তাহের মধ্যে দুই বিয়ে করার ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পর্যায় বসার কথা ছিল। তবে ছাত্রলীগের ছেলেরা একপক্ষ নিয়ে এসে ছানোয়ারসহ আঁখিকে নিয়ে যায়।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন সরকার জানান, আমরা কয়েকজন গিয়ে ছানোয়ার ও আঁখিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। সেখানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমার জানামতে ছানোয়ারের সঙ্গে আঁখির বিয়ে এক বছর আগে রেজিস্ট্রি হয়েছে।

এ ব্যাপারে ভুরুঙ্গামারী থানার ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, স্ত্রীর দাবি করা দুইজনই ব্যাংক কর্মকর্তা ছানোয়ারের বৈধ স্ত্রী। এ নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। তারা মীমাংসার চেষ্টা করছেন বলে শুনেছি। যেহেতু এটি পারিবারিক বিষয় এবং দুজনের কাছে বিয়ের বৈধ কাগজপত্র আছে সে কারণে তাদের অভিভাবকদের সমাধানের পথ খুঁজে দেখতে হবে।

এদিকে দুই নববধূ বিষয়ে বর ছানোয়ারের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা না বলে সামনা-সামনি দেখা করতে বলেন। -আমারসংবাদ


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

 

সংবাদটি শেয়ার করুন