গ্রিসে বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতীয় শোক দিবস পালন
গ্রিসের এথেন্সস্হ বাংলাদেশ দূতাবাসে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে বিনম্র শ্রদ্ধা, যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস।
রবিবার সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহ্মেদ কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। এছাড়া, বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিস, গ্রিস আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ গ্রিস প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী ও আঞ্চলিক সংগঠনও জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এ সময়, সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে দূতাবাস চত্বরে ‘বিশ্বমঞ্চে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক মাসব্যাপী এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রদূত আসুদ আহ্মেদ। এই প্রদর্শনীতে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন ও আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ ও অসামান্য অবদানের চিত্র তুলে ধরা হয়। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে যোগদানকারী বিপুল সংখ্যক দর্শকের ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করে। দূতাবাস চত্বরে আয়োজিত এই প্রদর্শনী আগামী এক মাস দূতাবাসে আগত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত ও পবিত্র গীতা থেকে পাঠের মাধ্যমে জাতীয় শোক দিবসের দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান শুরু হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। জাতির পিতার গৌরবোজ্জ্বল কর্মময় জীবনের উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এরপর জাতির পিতা ও ১৫ আগস্টের সকল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। মুজিব জন্মশতবর্ষ ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে জাতির পিতার মহতী জীবন ও কর্মের উপর আলোচনায় বক্তাগণ জাতির পিতার ঐতিহাসিক অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন, ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। বক্তাগণ জাতির পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশ গড়ার কাজে সম্পৃক্ত হবার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতা ও ১৫ আগস্টের সকল শহিদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের প্রতীক। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টাই নন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের জন্য স্বীকৃতি আদায়ে তাঁর বিজ্ঞ রাষ্ট্রনীতি ও কূটনীতি তাঁকে বিশ্বের দরবারে অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতার মর্যাদায় আসীন করেছে। তিনি মুজিব জন্মশতবর্ষ ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জাতির পিতার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশ গঠনে উদ্বুদ্ধ হতে নতুন প্রজন্মসহ সকলকে আহ্বান জানান।
‘বিশ্বমঞ্চে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিশ্লেষণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধুমাত্র আমাদের পররাষ্ট্র নীতি তথা দক্ষ কূটনীতিক তৎপরতা চালানোর মূল মন্ত্র কিংবা দিকনির্দেশনা দিয়ে যাননি, বরং দেখিয়ে দিয়ে গেছেন কিভাবে শান্তি, সংহতি ও বন্ধুত্ব স্থাপনে বিশ্বনেতাদের আস্থা অর্জন করা যায়। তিনি বলেন, আলোকচিত্রগুলোতে সুন্দরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে কিভাবে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক শান্তির অগ্রদূত হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের চলমান কূটনৈতিক সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে একযোগে কাজ করার জন্য সকল প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।
আলোচনা অনুষ্ঠানের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারী থেকে বাংলাদেশের মানুষ, প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বিশ্ববাসীর সুস্হতা ও মঙ্গল কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান