ফিচার্ড লেখালেখি

সার্বজনীন শারদীয় দুর্গাপূজা ।। শিতাংশু গুহ 

সার্বজনীন শারদীয় দুর্গাপূজা ।। শিতাংশু গুহ 

বাঙালির মহোৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা বঙ্গদেশে সার্বজনীন। সূর্যবংশের ৫৮তম পুরুষ ভগবান রামচন্দ্র যখন রাবন বধের নিমিত্ত দুর্গাপূজা করেন তখনকার কথা জানিনা, তবে বৃটিশ শাসনামলে দুর্গাপূজার ব্যাপক সার্বজনীনতা ইতিহাসে লিপিবদ্ধ আছে। ভারত স্বাধীন হলে পশ্চিমবঙ্গে শারদ উৎসবের সার্বজনীনতা বাড়ে। পাকিস্তানী শাসনামলে পূর্ববঙ্গে দুর্গাপূজার জৌলস কমলেও সার্বজনীনতা অটুট ছিলো। স্বাধীন বাংলাদেশে মহাসমারোহে দুর্গাপূজা হয়, যদিও বাহাত্তরে মহাঅষ্টমী পূজার দিন একসাথে সারাদেশে পূজা মণ্ডপে হামলা হয়েছিলো। সদ্য স্বাধীন দেশ, কেউ তখন এটি আমলে নেয়নি। সেইথেকে দেশে যেমন পূজাও হয়, হামলাও হয়, তাতে এর সার্বজনীনতা হ্রাস পায়নি। ব্যয়বহুল বলে, আগেকার দিনে জমিদার বাড়ীতে দুর্গাপূজা হতো, ধর্ম নির্বিশেষে প্রজারা তাতে অংশ নিতেন। বর্তমানে দেশে-প্রবাসে কোটি কোটি টাকা খরচ করে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়, রাজা-প্রজা, ধনি-গবীর সবাই এতে অংশ নেন।

দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব নয়, এর আবেদন সার্বজনীন। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬-তে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে একই কথা বলেছেন। আমরা যখন ঢাকায় ‘মহানগর পূজা কমিটি’ নাম নিয়ে ঢাকেশ্বরী মেলাঙ্গনে দুর্গাপূজা শুরু করি, তখনো এর অন্যতম উদ্দেশ্য ছিলো, ‘সম্প্রীতি’। এখন সেটি দেশে প্রধান পূজা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিলনকেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রীসহ সবাই সেখানে যান। তবে বেগম খালেদা জিয়া কখনো ঢাকেশ্বরীতে পূজায় গিয়েছেন, তেমনটা দেখা যায়নি। কেউ দেখে থাকলে আমার ভুল শুধরে দেবেন। পূজায় কাউকে আঘাত দেয়া উদ্দেশ্য নয়, কিন্তু সম্প্রীতির নমুনা দেখে উইমেন চ্যাপ্টারের শান্তা মারিয়া মনে হয় কিছুটা রেগে বলেই ফেলেছেন, তাহলে ছুটীর বেলায় এত দৈন্যতা কেন? তিনি একটি হিসাব দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে বছরে ১১দিন সংবাদপত্র বন্ধ থাকে, তন্মধ্যে ৯দিন মুসলিম সম্প্রদায়ের উৎসবের জন্যে, বাকি দুইদিন পহেলা বৈশাখ ও মে-দিবস।

সরকারী ছুটীর হিসাব না-ই-বা দিলাম। দাবী আছে, দুর্গাপূজায় তিনদিন ছুটীর। মিডিয়া বলছে, বাংলাদেশে এবার প্রায় তেত্রিশ হাজার পূজা হচ্ছে। নিরাপত্তার কমতি নেই। ডিএমপি বলেছে, পূজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সামাজিক মিডিয়া জানাচ্ছে, দেশে মুর্ক্তিপূঁজা বন্ধের দাবী আছে, যথেষ্ট আপত্তিকর কথাবার্তাও আছে। ক’বছর আগে সাম্প্রদায়িক সংগঠন ‘আওয়ামী ওলেমা লীগ’ প্রশ্ন তুলেছে, দুর্গাপূজায় হিন্দুদের ৩দিন ছুটি চাই কেন? তদুপরি মুর্ক্তিভাঙ্গা তো আছেই, এবং যথারীতি এর কোন বিচার কখনো ছিলোনা, এখনো নেই! এতসবের মধ্যেও পুলিশ প্রহরায় দেশে ধুমধামে পূজা হচ্ছে। পুলিশ না থাকলে কি হতো বলা মুশকিল? আওয়ামী লীগ আমলে সবসময়ই পূজায় জাঁকজমক বেশি থাকে, অন্যদের আমলে কেন থাকেনা, সেটা তারা চিন্তা করে দেখতে পারেন।

সার্বজনীন দুর্গাপূজার মূল থিমটি হচ্ছে, অসুরের বিরুদ্ধে সুরের বা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের বিজয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এবারকার থিম হতে পারে, করোনা’র বিরুদ্ধে মানবজাতির বিজয়। পূজার ধর্মীয় দিকটি হিন্দুর হলেও উৎসবটি আসলেই সবার। শুধু দেশে কেন, এই প্রবাসেও তাই। নিউইয়র্কের এবার তিনটি নুতন পূজা যুক্ত হয়ে মোট ১৮টি পূজা হচ্ছে, এদের শ্লোগান, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’। ১৯৯০ সালে নিউইয়র্কে শম্ভূ চন্দ ও রতন তালুকদারের নেতৃত্বে হিন্দুরা যখন ‘বাংলাদেশ পূজা সমিতির’ ব্যানারে প্রথম পূজা করে তখনও ব্যাপারটা তাই ছিলো। তিন দশক পরে পূজা যেমন বেড়েছে, বেড়েছে কোন্দল, সম্প্রীতি কি বেড়েছে? সংখ্যাগরিষ্ট সম্প্রদায়ের লোকজন আজকাল পূজায় তেমন দেখা যায়না? নিউইয়র্কে বাংলাদেশের সরকারি মহলের সম্প্রীতি জোরদারের তেমন কোন উদ্যোগ নেই!!

২০১৬-তে স্থায়ী মিশন ও কনস্যুলেট মিলে সেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ব্যাপারটি অনেকটা নিখর্চার, কিন্তু প্রশংসনীয়। সেবার পূজায় পররাষ্ট্র দফতরের তরফ থেকে কনস্যুলেটের মাধ্যমে ডাকযোগে একটি পূজার কার্ড পাঠানো হয়, আমিও পেয়েছিলাম। কার্ডে ত্রিনয়নী দূর্গা, ‘হ্যাপী দূর্গা পূজা’, শারদীয় শুভেচ্ছা বা পূজা গ্রিটিংস সবই ছিলো, এবং এটি স্বাক্ষর করেছেন তৎকালীন নিউইয়র্ক কনসাল জেনারেল শামীম আহসান। উদ্যোগটি অবশ্যই মহৎ, প্রশংসনীয়, আমি ফোন করে শামীম আহসানকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম।  এমনতর ছোট ছোট ঘটনা যে জনসংযোগে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে, এই কার্ড  প্রমান। আমার মত আরো অনেকেই কার্ড পেয়ে খুশি হয়েছিলেন, তবে সেটিই ছিলো প্রথম এবং শেষ! প্রবাসে ‘তথাকথিত প্রগতিশীলদের’ কথা না বলাই ভালো! বাংলাদেশ সোসাইটি’র প্রয়াত প্রেসিডেন্ট কামাল আহমদ একবার পূজায় মিষ্টি পাঠিয়েছিলেন, সেটি এখন নেই।

২০১৬-তে জ্যাকসন হাইটসে’র প্রাণকেন্দ্রে প্রথম পূজা হয়, এতে অনেকে খুশি হ’ন, এমনি একজন আমাদের বামঘেঁষা বন্ধু গোপাল স্যানাল এবং তিনি তাতে সংযুক্ত থাকতে চেয়েছিলেন। হঠাৎ শুনি গোপাল দেশে গেছে। তারপর ফেইসবুকে দেখি নব-দম্পতির ছবি। মন্তব্যে লিখলাম, ‘গোপাল, এই ছিলো মনে’!.গোপাল উত্তর দিলো, দাদা, মানব-বন্ধনে আর একজন বাড়লো! প্রগতিশীল আন্দোলনে নিউইয়র্কে গোপাল একজন অগ্রণী সৈনিক, প্রতিটি মানববন্ধনে তিনি সামনের সারিতে। এই গোপালই দেখলাম, ষষ্ঠীর দিন পাবনার সব দোকানপাট বন্ধ দেখে রেগে পোস্টিং দিয়েছে, পূজার কেনাকাটা ছিলো, শুক্রবারের উছিলায় সব বন্ধ! সেবার পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান মিয়া নসিহত দিয়েছিলেন যে, নামাজ ও আযানের সময় বাদ্যযন্ত্র বাঁজানো চলবেনা। এবারও (২০২১) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রায় একই কথা বলেছেন? বক্তব্যটি যেভাবে এসেছে, তা শুনতে বেখাপ্পা লাগে বৈকি? এমনতর নসিহতের অর্থ হচ্ছে, নামাজ বা আযানের সময় মনোযোগ যাতে অন্যত্র না যায়?

একটি গল্প বলি, এক মহিলা এক মন্দিরে যান, পূজা শেষে তিনি পুরোহিতকে বলেন, ‘এই মন্দিরে আর আসবো না’? পুরোহিত জিজ্ঞাসা করেন, কেন? মহিলা জানালেন, এ মন্দিরে অসংখ্য মানুষ, হৈচৈ, ঠিকমত মনোনিবেশ করা যায়না। পুরোহিত বললেন, ঠিক আছে, আসবেন না, তবে একটি ছোট্ট অনুরোধ করি? ‘ওকে’, মহিলার উত্তর। পুরোহিত মহিলার হাতে একটি জলপূর্ণ ঘট দিয়ে বললেন, আপনি এই ঘট নিয়ে একবার মন্দিরের চারদিক ঘুরে আসুন। যাত্রাকালে পুরোহিত আবার বললেন, ‘দেখবেন, একফোঁটা জল যেন উপচে না পড়ে’। মহিলা মাথা নেড়ে সম্মতি দিয়ে মন্দিরের চতুর্দিক ঘুরে কিছুক্ষন পর পুরোহিতের সামনে এসে বিজয়ীর হাঁসি দিয়ে বলেন, ‘একফোঁটা জলও পড়েনি’। পুরোহিত তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনি যখন মন্দিরের চারিপাশ ঘুরছিলেন, তখন কি কোন শব্দ শুনেছিলেন’? মহিলা জানালেন, না, তিনি শুনেননি। পুরোহিত বললেন, ‘ঘটের জল যাতে উপচে না পরে এজন্যে আপনি এতটা একাগ্র ছিলেন যে অন্যকোন শব্দ আপনার কর্ণকুহরে প্রবেশ করেনি, একাগ্রতাই সবকিছু। বঙ্গদেশে যাঁরা কুম্ভ নৃত্য দেখেছেন, তাঁরা জানেন, নর্তকী নাচের যত মুদ্রাই প্রদর্শন করুক না কেন, তাঁর মন নিবিষ্ট থাকে মাথার ওপর কলসীতে, যাতে ওটি পড়ে না যায়! আবারো বলা যায়, একাগ্রতাই সবকিছু।

কথা ছিলো, পূজা উপলক্ষে শুধুই শান্তির ললিত বাণী শোনাবো। কিন্তু ছাগশিশু ও বাঘের গল্পটা মনে এলো:  ছাগলের বাচ্চাটি যুক্তি দিয়ে প্রমান করেছিলো যে সে জলঘোলা করেনি। বাঘ কিন্তু সেই যুক্তি শুনেনি, বরং ঘাড় মটকাবার আগে বলেছিলো, ‘তুই না করিস তোর বাপ্ করেছে’। ক’দিন আগে সিলেটে মসজিদ থেকে মাইকে আহবান জানিয়ে ইস্কন মন্দিরে হামলা করা হয়। অভিযোগ: আযানের সময় মন্দির থেকে মাইকে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে ডিস্টার্ব করা হয়েছে! আসলে ইস্কনে কোন মাইকই ছিলোনা। ধর্ম অবমাননার অজুহাতে রামু, নন্দীরহাট, সাতক্ষীরা, কুমিল্লা, নাসিরনগর, রংপুর, শাল্লা,  বা অন্যত্র হামলার ঘটনা তো আছেই। অজুহাত সৃষ্টি কি খুব কষ্টকর? যুক্তি যেখানে অচল, শক্তি সেখানে সচল। সরকার সন্ত্রাস দমনে ‘জিরো টলারেন্স’  নীতি নিয়েছেন, সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে কিন্তু সম্পূর্ণ উদাসীন। আবার ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট বা ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়টি বড়ই একপেশে! মুর্ক্তি ভাঙ্গলে কারো অনুভূতিতে আঘাত লাগেনা, এজন্যে অর্ধ-শতাব্দীতে এ অপরাধে একজনের বিচার হয়নি।

দেবীদুর্গা আসেন, সাথে কিছু অসুরও আসে, তিনি চলে যান, অসুরগুলো রেখে যান। অসুরেরা মূর্তি ভাঙ্গে, পূজা এলে প্রতিমা ভাঙ্গার মৌসুমও আসে? মঙ্গলবার (২১শে সেপ্টেম্বর ২০২১) রাতে কুষ্টিয়া ও দিনাজপুরে কয়েকটি পূজা মন্ডপে প্রতিমা ভাংচুর দিয়ে এবার মৌসুম শুরু হয়েছে। এরপর শুক্রবার ২৪ সেপ্টেম্বর চুয়াডাঙ্গায় প্রতিমা ভেঙ্গেছে। আরো আছে। বাংলাদেশে সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে সকল ধর্মাবলম্বীর স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। যাঁরা এই অধিকার খর্ব করার চেষ্টা করছে রাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়না? তাই, হিন্দুরা পূজার বাজেট কমান, বাজেট থেকে টাকা বাঁচিয়ে মন্দির ও মূর্তি রক্ষায় ব্যয় করুন। রাষ্ট্র যেখানে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, সেখানে আপনাকেই নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে? আর একটি মজার ব্যাপার হচ্ছে, পুলিশ কিন্তু মাঝে-মধ্যে এদের ধরে, পরে নিজেরাই ডাক্তার হিসাবে সার্টিফিকেট দিয়ে দেন যে, ‘লোকটি মানষিক ভারসাম্যহীন’ এবং ছেড়ে দেন্। শুনে অবাক হতে হয়, এসব ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক’ পাগলের শুধু মূর্তি বা মন্দির ভাঙ্গে, অন্য কিছু নয়?

পূজার আনন্দের মাঝে এবার মানুষ ‘ঝুমন দাস’র কথা মনে রাখবে, মুক্ত ঝুমন স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে পূজা দেখতে পারবে। ধর্ম যার যার হলেও উৎসব যেমনি সবার, রাষ্ট্রও তেমনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার। দেশে পূজার সময় নেতানেত্রীরা বিভিন্ন পূজা-মণ্ডপে যান, তাঁদের আপ্যায়নের সাথে সাথে কিছু কিছু দেনদরবারও চলে। মনে আছে মহানগরের পূজার চাঁদার জন্যে স্বপন সাহা ও আমি আশির দশকে একবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে গিয়েছিলাম, তিনি ৫শ’ টাকা দিয়েছিলেন। এতদিন পরে মনে হয় এবার আবার কিছু চাইলে কেমন হয়? এখন তো তিনি শুধু সভানেত্রী নন, তিনি প্রধানমন্ত্রী, দিতে চাইলে অনেক কিছুই দিতে পারেন। একটি সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়, ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’, মানবাধিকার কমিশন বা নিদেন-পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর একজন সংখ্যালঘু’ ও মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টাই বা কম কি? মডেল মন্দির, প্যাগোডা চাইলেই বা ক্ষতি কি? পূজার গিফট হিসাবে প্রধানমন্ত্রী দুই কোটি হিন্দুকে তিনকোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন, চাইলে আরো অনেক কিছু দিতে পারেন, সবই সদিচ্ছা। এবারের দুর্গাপূজা সব মানুষের কল্যাণ বয়ে আনুক, সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক। সবাইকে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা। নমস্কার। # [email protected];


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন