মধুবন চক্রবর্তী-এর দু’টি কবিতা
ভাল লাগে
কারও কাছে গেলে ভাল লাগে , সত্যিই খুব ভাল লাগে।
ফুল ফুটবে না জেনেও
রোজ বিকেলে কাছে এসে বসে টুকুদা পাথরের জমিতেই ফুল চাষ করে।
বিশ্বাস, একদিন প্রতিধ্বনি ফিরে পাবেই।
তিস্তার বিষন্নতা হাঙরের মতো গিলতে আসবে জেনেও
হরিয়াল পাখিগুলো পাহাড় ভেঙে ঝর্নাকে ফেলে রেখে নদীতে জল খেতে নামে।
বিষন্নতা সান্দ্র হলে আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে।
কারও কাছে গেলে খুব ভাল লাগে, সত্যি ভাল লাগে।
অন্ধকার হবে জেনেও ঘুটঘুটে গুহাটার নিজস্ব আলোয় উজ্জ্বল হতে ভাল লাগে।
ছোঁয়াটুকু পাবে না জেনেও কারও আকাশে পাখি হতে ভাল লাগে।
সত্যিই খুব ভাল লাগে।
—————-
চাঁদ
চাঁদটা একদিন দু’ফালি হয়ে ভেঙে পড়েছিল আমার বারান্দায়।
সকালে উঠে দেখি তুলসীগাছের পাশে ক্যাকটাসের গা ঘেঁষে শীতের আগমনী রোদের শব্দ শুনছে।
লুটোপুটি খাচ্ছে আলো, যা রোদের উষ্ণতাকেও হার মানায়।
আলোর ছটায় আমার বিবর্ণ দেওয়াল হয়ে উঠল জলরঙে আঁকা রঙিন মাছ।
তেলচিটে মাটি হয়ে উঠল তেলরঙে আঁকা রঙিন নৌকো।
আমার শূন্যতায় চন্দন মাখিয়ে চাঁদ হয়ে উঠল ভালবাসার কাঠবিড়ালি
ধীরে ধীরে জড়িয়ে ধরলাম নষ্ট আমি অর্ধমৃত ওই দু’ফালিকে।
একদিন দেখি বারান্দায় চোখ ঝলসানো রূপ নিয়ে আস্ত চাঁদ।
আমাকে চুম্বন করে বলল, দুষ্মন্ত অপেক্ষায় অনেকদিন। ফিরিয়ে দাও আমাকে
আমি ঝলসানো আলো ভাসিয়ে দিলাম আকাশে।
প্রতিদিন এখন চাঁদ দেখি আমার দু’ফালি বারান্দা থেকে।