স্বাধীনতা / বিপ্লব ঘোষ
স্বাধীনতা তো বসন্তের গোধূলি বিকেলে ডিঙি নৌকো নিয়ে ভেসে যাওয়া। শালের জঙ্গলে কাঠের দোতলা বাড়ির বারান্দায় বসে থাকা। স্বাধীনতা মানে ছোটবেলার সবুজ পুকুরে সাঁতার। বর্ষায় ভিজে ফুটবল খেলে ঘরে ফেরা।স্বাধীনতা তো খেজুর গাছের নিচে সন্ধ্যায় প্রথম প্রেম। বন্ধুদের সাথে বকখালির প্রথম সমুদ্র দেখা। রাতের ঝাউবনে একলা হরিণ ধরে দেবেনের মাটির হোটেলে বেঁধে রাখা। চৈত্রের দুপুরে মোষের পিঠে চড়া শেষে তেঁতুল গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়া। মাঝেরগ্রামে গোবিন্দদার পানের বরজে জল দেওয়া রোদালি সকালে। শ্রীরামপুরের গঙ্গায় মেয়ের সাথে হেঁটে যাওয়া। চাঁদিপুরে ভোরে বালিয়াড়ি জুড়ে লাল কাঁকড়ার পিছনে মিছে ধরতে যাওয়া। স্বাধীনতা দিবসে মিছিল বাজনা শেষে পতাকা উত্তোলন । চোলাই মদের ভাটি জ্বালিয়ে লকআপ খেটে ফিরে আসা। লুকিয়ে বন্ধুদের সাক্ষী রেখে বয়সের আগে বিয়ে করা। স্বাধীনতা আমার চেরাপুঞ্জির মেঘ,বৃষ্টি। দিদিমার সঙ্গ ঘুগু পাখি ধরা। মুরগি,ছাগলের ঘর। গোপন চিঠি,ডায়েরি। নিম,সুপারি,পেয়ারা, ফুলের বাগান। মাছ ধরতে যাওয়া গামছা দিয়ে। টিনের চালে ছন্দের তালে বাবার বাড়িতে রাত জাগা । তাহেরপুরের খেত খামার ,দূর্গাপুজো। জ্যাঠামশাইকে নিয়ে অন্য গাঁয়ে বাদকুল্লায় এক্জনের মাটির উঠোনে কাঠের বাক্সে মুদির দোকান । কালিনারায়ন পুরের গঙ্গায় স্রোতে ভেসে যাওয়া বন্ধুকে পাড়ে তোলা। দূরের কোনো স্কুলের মাঠে সারারাত জেগে সুরাপান করে নগ্ন হয়ে চাঁদিনি রাতে চোর চোর খেলা।