আমেরিকা ও লন্ডনে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে সিলেটের সবজি
আবুল কাশেম রুমন,সিলেট: আমেরিকা ও লন্ডনে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে সিলেটের সবজি সমূহ বিশেষ করে লাউ, মিস্টি লাউ, চাল কুমড়া, সিম, কচু, কচুর লতি, কাচাঁ মরিচ, নাগা মরিচ, বরবটি, টমেটো, জিংগা, ফুলকপি, মুকি, কচু, লতা, বাধা কপিসহ নানা জাতের শাকসবজি নিয়ে সাজিয়ে বসে আছেন সেখান কার কয়েক জন বিক্রেতা।
পছন্দের তাজা সবজি কিনতে দূর-দূরান্ত বিভিন্ন শহর থেকে এসেছেন অনেক ক্রেতা। আমেরিকায় বাংলাদেশ স্টোর ও লন্ডনে সিলেট স্টোরে চলছে সবজি বেচাকেনা। এছাড়া লন্ডনে বানিংহাম বাজারের নাম দিয়েছেন সিলেটের কৃষকের বাজার। এ এলাকায় সিলেটে ও বাংলাদেশের লোকজন বেশির ভাগ বাস করেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের ডেট্রয়েটের জোসেফ ক্যাম্পাউ স্ট্রিটে অবস্থিত ইসলামিক সেন্টার পার্কিং এলাকায়। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে ‘সিলেটের কৃষকের বাজার’ প্রবাসীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। শুধু বাংলাদেশী নয় অন্যান্য রাষ্ট্রের লোকজন এসব সবজি ক্রয় করতে ভিড় করছেন বলে জানা যায়।
গ্রীষ্মকালীন এই বাজারটি সপ্তাহের শনি ও রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিলেটের কৃষকের বাজার নামক সবজি বাজারে কেনাবেচা চলে।
জানা যায়, প্রবাসের কর্মব্যস্ত জীবনে অনেক প্রবাসী কাজের ফাঁকে বাসা-বাড়ির (গার্ডেন) এ শখের বসে গ্রীষ্মকালীন সময়ে নানা জাতের শাকসবজি চাষ করে থাকেন। অনেকে চাহিদা ও আত্মীয় স্বজনের পরিবারের চাহিদা পূরণ করে নিজের বাগানের ফলানো অতিরিক্ত সবজি বিক্রি করে বাড়তি টাকা ও উপার্জন করেন। সৌখিন কৃষকদের শাকসবজি বিক্রয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ‘সিলেট ফার্মা’স মার্কেট’।
প্রতি সপ্তাহের শনি ও রোববার সকাল বেলা বাগানের শাকসবজি বিক্রির উদ্দেশ্য কৃষকেরা ও ক্রেতার অপেক্ষায় থাকেন। বাগানের টাটকা শাক সবজি তুলনামূলক সস্তা হওয়ায় অনেকে কৃষকদের বাজার থেকে শাকসবজি ক্রয় করে থাকেন। পছন্দের শাকসবজি কিনে অনেকেই উৎফুল্ল দেখা যায়।
আমাদের প্রতিবেদক কে সেখানকার একজন কৃষি প্রেমিক ব্যক্তিত্ব মোবাইল ফোনে লাইভ করে সরেজমিনে সিলেটের কৃষকের বাজার ঘুরে দেখান, মিশিগানের ডেট্রয়েট ও হ্যামট্রামিক সিটিতে বসবাসকারী একাধিক কৃষক নিজেদের বাগানে চাষ করা শাকসবজি বিক্রির জন্য টেবিল সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় রয়েছেন। বাজারে আসা সবজি ক্রেতা শামিম আহমদ বলেন, শুনলাম এখানে শাক সবজির বাজার বসে, তাই আসলাম ফ্রেশ সবজি কিনার জন্য।
ওয়ারেন সিটি থেকে আসা ছাবিয়া আক্তার বলেন, এখানকার প্রবাসীরা কাজের ফাকে নিজের গার্ডেনে চাষ করে থাকেন সবজি, নিজের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত শাক সবজি বিক্রি করে থাকেন অনেকে, আর সেই শাক সবজি ফরমালিন ছাড়া তাই এখান থেকে ক্রয় করতে আসছি।
হ্যামট্রামিক শহরে বসবাসকারী, জয়দীপ চৌধুরী বলেন, এখানে কৃষকরা সরাসরি ক্রেতাদের কাছে শাকসবজি বিক্রি করে থাকেন, সব দিক দিয়ে সুবিধা থাকায় এখান থেকে কেনাকাটা করি।
কৃষক জিতু মিয়া বলেন, নিজের পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত শাকসবজি বিক্রি করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছি। সিলেটের কৃষকের বাজারের অন্যতম পরিচালক রহমান বলেন, কৃষক আর ক্রেতার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করে উভয় পক্ষ যেন লাভবান হয় এই উদ্দেশ্যে সিলেটের কৃষকের বাজার চালু করা হয়। চার বছর ধরে বাজারের কার্যক্রম চলছে।
এছাড়া আগামীতে আমরা প্রবাসে বসে সিলেটে থেকে সকল ধরণের সবজির বীজ সংগ্রহ করা শুরু করেছি। সিলেটী তথা বাংলাদেশের মানুষ যে ধরণের সবজি পছন্দ করেন সে ধরণের চাহিদা লক্ষ্য করে আমেরিকা ও লন্ডনের কৃষকরা বীজ সংক্রহ করতে বাংলাদেশের কৃষি অধিদপ্তরের পরিচিত অনেক কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে বীজ সংক্রাহ করছেন বলে জানা গেছে।