মীর সাব্বির বললেন, “এক দেশের গালি আরেক দেশের বুলি”। কিন্তু উপস্থাপিকার অভিযোগ তিনি বুলিং এর শিকার।
‘এই মাতারি তুমি এরম উদলা গায়ে দাঁড়ায়ে আছো কিয়েরলিগা’ জনপ্রিয় অভিনেতা মীর সাব্বিরের এমন কথার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। উপস্থাপিকা ইশরাত পায়েলকে উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলতে দেখা যায় মীর সাব্বিরকে। তখন বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিলেও পরে এটি নিয়ে সরব হন। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মীর সাব্বিরকে নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন ইশরাত পায়েল।
সেই ভিডিও ক্লিপটি গত ১১ নভেম্বর বিবাহিত নারীদের নিয়ে আয়োজিত বিউটি কনটেস্ট ‘মিসেস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’-এর গ্র্যান্ড ফিনাল মঞ্চের। উপস্থাপিকার দাবি, মীর সাব্বির তার পোশাক নিয়ে আপত্তিকর কথা বলেছেন। কিন্তু মীর সাব্বির বলছেন, ‘এটি শ্রেফ বরিশালের আঞ্চলিক ভাষা, আপত্তিকর নয়।’
এদিকে, একাধিক সংবাদ মাধ্যমে ইশরাত পায়েল বলেন, ‘উনি নারীর পোশাক নিয়ে যে মন্তব্যটি করেছেন সেটি অশোভন। আমি ওয়েস্টার্ন পোশাকে ছিলাম। বুঝতে পারছি না! উনি বুঝে বলেছেন নাকি না বুঝে বলেছেন- এটা এক প্রকার বুলিং। ওনার স্যারি বলা উচিত ছিল।’
মীর সাব্বির বলেন, ‘আমি ওই অনুষ্ঠানের বিচারক। আমি কেনো তার পোষাক নিয়ে আপত্তিকর কথা বলবো। যেটা বলেছি বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায়- এটা খুবই নরমাল। নাটকে এই সংলাপ অহরহ ব্যবহার হচ্ছে। বরিশালের আঞ্চলিক অনেক শব্দ আছে যা অন্য অঞ্চলের মানুষের কাছে অশ্লীল মনে হতে পারে! আমি যেটা বলেছি সেটা কোনো ইনটেনশন নিয়ে বলিনি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েও কিছু বলিনি, বলেছি মজার ছলে। যখন বলেছি, সবাই হেসে রিসিভ করেছে। পরে সে হয়তো ভেবেছে আমি বুলিং করছি। বুলিং ভারি শব্দ। আমি তা করিনি।’
বুধবার বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন মীর সাব্বির। সেখানে এই অভিনেতা লিখেছেন, “এক দেশের গালি আরেক দেশের বুলি”। গত ১১ নভেম্বর মিসেস ইউনিভার্সের একটি প্রতিযোগিতায় আমি অতিথি হয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে একটি কথা নিয়ে প্রসঙ্গক্রমে উপস্থাপিকা দুই একটি কথা বলেছেন। মঞ্চে আমার সঙ্গে কথা বলার পর দেখলাম, ওই উপস্থাপিকার বরাত দিয়ে দুই একটি অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত করেছে। এর কারণে অনেক সাংবাদিক আমাকে ফোনও করেছেন। আসলে মূল বিষয়টা ছিল- ‘মানে বলতে পারেন তেমন কিছুই না। একটা ছোট্ট বিষয়কে হঠাৎ করে বড় করার চেষ্টা করা হয়েছে।’’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘উপস্থাপিকা মজার ছলে আমার বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কথা শুনতে চেয়েছেন। যেহেতু আমি বরিশালের ছেলে। আমি যে কথাটা বলেছিলাম ,সেটা উপস্থাপিকা চমৎকার হেসে রিসিভ করেছেন এবং দর্শকরা তখন মজা পেয়েছেন। আমি যেটা বলেছি সেটা তাৎক্ষণিক এবং এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। কাউকে হেয় করার জন্য কিছু বলি নাই। সেটা নিশ্চয়ই সকলেই ( যারা দেখেছেন তারা) বুঝতে পেরেছেন।’
মীর সাব্বির লিখেছেন, ”উপস্থাপিকা যে আমার ছোট বোনের মতো, সে যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে…আমি দুঃখ প্রকাশ করতেই পারি। সেটা নিয়ে এভাবে ফেসবুক কিংবা বিভিন্ন মাধ্যমে বক্তৃতা দিয়ে ছড়ানোর কিছু নাই। আমাকে বললেই পারত ‘দাদাভাই কিংবা ভাইয়া আপনাকে আমি রেসপেক্ট করি। আপনার কথায় আমি কষ্ট পেয়েছি। আমি তখন হয়তো বলতাম, ‘সরি তুমি কষ্ট পেও না। আমি তোমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য কথাটা বলিনি। কারণ তুমি আমার শব্দের মানে বুঝতে পারোনি। বিষয়টা শেষ হয়ে যেত। আমি আমার ছোট বোনের ‘আমার ব্যাপারে ভুল বোঝার কারণে দুঃখ প্রকাশ করতেই পারি।’ অতএব মন খারাপ না করে আমি আশা করছি, সকলের মতো আমার এই ছোট বোনটিরও আমার সম্পর্কে ধারণা এবং আমার বরিশালের আঞ্চলিক ভাষার ক্ষেত্রে (শব্দের মানে না বোঝার কারণে) যত অভিমান আছে সেটা ভুলে গিয়ে পুরো বিষয়টা পরিষ্কার হবে। আবারও ধন্যবাদ। আমার সকল ভক্ত দর্শকদের। তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। যেভাবে আমার পাশে সবাই আছেন, আমাকে ভালোবাসেন, আমার শিল্প কর্মের প্রতি অগাধ বিশ্বাস যাদের আছে, তারা আমার মাথার তাজ হয়ে থাকবেন আমরণ।”
সুত্রঃ সমকাল