প্রবাসের সংবাদ ফিচার্ড

কানাডার ৩ ব্যাংকে এমপি শিমুলের কত টাকা আছে?

কানাডার-৩-ব্যাংকে-এমপি-শিমুলের-কত-টাকা-আছে

নাটোর-২ (সদর-নলডাঙ্গা) আসনের দুবারের এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল। গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ হারান তিনি।

দলীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে টিআর-কাবিখা বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম লুটপাট করেছেন। নিয়োগবাণিজ্য করে তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

দুর্নীতির টাকায় এমপি শিমুল নাটোর ও কানাডার বেগমপাড়ায় স্ত্রীর নামে বিলাসবহুল দুটি বাড়ি করেছেন। এছাড়া কানাডাসহ দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিনিধির নামে তিনি কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা রেখেছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, আয়কর ফাইল অনুযায়ী এমপি শিমুলের স্ত্রী শামীমা সুলতানা জান্নাতি একজন গৃহবধূ। কিন্তু তার নামে দেশ-বিদেশে রাজপ্রাসাদসম দুটি বাড়ি রয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জান্নাতির সম্পদ ছিল ২ কোটি ১৪ লাখ টাকার। পরের বছর তার সম্পদ বৃদ্ধি পায় ১৬ লাখ টাকা। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে তার সম্পদ বেড়েছে ৪ কোটি ২২ লাখ টাকার বেশি। সম্পদ বৃদ্ধির হার ২৮৪ শতাংশ, যা রীতিমতো বিস্ময়কর।

কানাডার ব্যাংকে এমপি শিমুলের অর্থ লেনদেনের তিনটি অ্যাকাউন্টের (ব্যাংক হিসাব) তথ্য আছে। এরমধ্যে তার নিজের নামে দুটি এবং কানাডার একজন নাগরিকের নামে অপরটি রয়েছে। কানাডিয়ান ইম্পেরিয়াল ব্যাংক অব কমার্সে তার একটি অ্যাকাউন্ট (সিআইবিসি ২০০০০০০পি) এবং ব্যাংক অব নোভা স্কোটিয়ায় আরেক অ্যাকাউন্ট (৩০০০০০০পি) রয়েছে। একটি ব্যাংক থেকে তিনি মাস্টার কার্ডও (৪৬৩৯৪৩১৮৫৮৭৯৬০৭৮) নিয়েছেন।

২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এসব অ্যাকাউন্টে তার ৪৬ লাখ ৫১ হাজার ১৬২ কানাডিয়ার ডলার (৩১ কোটি ৬২ লাখ টাকা) ছিল। এছাড়া কানাডার নাগরিক রাডি অর্নল্ডের নামে (কার্ড নম্বর ৫০৬১৯৭৩৯৩১৫৩৬৪৪৮) তিনি অর্থ লেনদেন করেছেন। এমপি শিমুলের স্ত্রী জান্নাতির নামে কানাডায় বিলাসবহুল বাড়ির তথ্য জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

জানা গেছে, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকাকালে শফিকুল ইসলাম শিমুল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে সদর আসন থেকে তিনি প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। এরপর তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন।

এমপি শিমুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ-জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে নিজের পরিবারের ১২ জনকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পদে বসিয়ে তিনি দল নিয়ন্ত্রণ করেছেন। তিন ভাই ও ভগ্নিপতিদের দিয়ে নাটোরের সব লাভজনক খাতও তিনি নিয়ন্ত্রণ করেছেন। বিএনপি-জামায়াতের লোক এনে তিনি হাইব্রিড আওয়ামী লীগ তৈরি করে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের দূরে ঠেলে দিয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের অভিযোগ-এমপি শিমুলের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সাজেদুর রহমানসহ দলের অনেক প্রবীণ নেতাকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।

সব অভিযোগ অস্বীকার করে এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল জানান, আওয়ামী লীগ একটি বড় রাজনৈতিক দল। এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকাই স্বাভাবিক। তবে অনেকের পায়ের নিচে মাটি না থাকলেও তারা জেগে জেগে আগামী দিনে এমপি হওয়ার দিবা স্বপ্ন দেখছেন। আর ফাঁকা আওয়াজ দিচ্ছেন। এসব মানুষই তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করছেন। তৃণমূলের সাধারণ মানুষ আমাকেই ভালোবাসে এবং আগামী দিনে তারা আমাকেই এমপি হিসাবে দেখতে চায়।

দেশ-বিদেশে নিজের ও স্ত্রীর নামে-বেনামে বাড়ি-গাড়ি সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা প্রসঙ্গে তিনি জানান, এসব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। যেসব সম্পদ আছে সেসব পৈতৃক সূত্রে পাওয়া। মূলত রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা তথ্য দেওয়া হচ্ছে। যারা এমন অভিযোগ করছেন-থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও আমেরিকায় তাদেরও বাড়ি রয়েছে। তাদেরও ব্যাংকে অনেক অবৈধ টাকা গচ্ছিত আছে।

সূত্রঃ যুগান্তর

CBNA24 অনলাইন ডেস্ক (এফএইচ/বিডি)

আমাদের ফেসবুক পেজে যেতে ক্লিক করুন
আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে যেতে ক্লিক করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন