ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ।।এক কোটির উপরে কল, টেস্ট ৪,৪২০০০ ।। করোনা সংক্রান্ত হটলাইনে প্রতিদিন ফোন আসছে। আকুতি জানাচ্ছেন টেস্টের। করোনা সমস্যা নিয়ে এসব ফোন কল দিচ্ছেন সরকারি দু’টি সংস্থায়। দিন যতই যাচ্ছে, কল ততোই বাড়ছেই। এ পর্যন্ত করোনা সংক্রান্ত এক কোটির উপরে মোবাইলে ফোন কল দিয়েছে মানুষ। আর করোনার নমুনা টেস্ট হয়েছে মাত্র ৪ লাখ ৪১ হাজার ৫৬০টি। যা মোট ফোন কলের ৪ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ জনের মধ্যে চারজন টেস্ট করার সুযোগ পেয়েছেন।শুরু থেকেই হটলাইনগুলোতে ফোন দিলেও রিসিভ না হওয়ার ব্যাপক অভিযোগ ছিল ভুক্তভোগীদের।
বিশ্বে করোনার প্রার্দুভাব দেখা দেয়ার পর থেকেই দেশে স্বাস্থ্যের হটলাইনে বেশি ফোন দিচ্ছেন মানুষ। কারণ করোনা নিয়ে দেশে প্রতিটি মানুষই রয়েছেন আতঙ্কে। তাই করোনা নিয়ে কোন সমস্যা হলেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর হটলাইনগুলোতে ফোন দিচ্ছেন জনসাধারণ। কখনও উত্তর পাচ্ছেন। কখনওবা উত্তর মিলছে না। তবে ফোন দিয়ে না পাওয়ার অভিযোগই বেশি করছেন ভুক্তভোগীরা। রাজধানীর শ্যামলীর বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন দম্পতির। অভিযোগ করোনার উপসর্গ নিয়ে তারা আইইডিসিআরে বারবার ফোন দিলেও তা রিসিভ হয়নি। আরেক বাসিন্দা গোপীবাগের আব্বাস। তার পরিবারে চার সদস্য। তাদের পরিবারে একজন বয়স্ক ব্যক্তিও ছিলেন। যিনি জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাস কষ্টের উপসর্গ নিয়ে কয়েকদিন হলো মারা গেছেন। অভিযোগ করে বলেন, তারা রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ( আইইডিসিআর)-এর হটলাইনে বারবার চেষ্টা করেও সাড়া পাননি। বলেন, উপায় না পেয়ে মুগদা হাসপাতালেও যাই। সেখানেও মিলেনি স্বাস্থ্যসেবা। পরে বিএসএমএমইউ থেকে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন। এভাবে করোনার উপসর্গ নিয়ে হটলাইনে ফোন দিয়েও কোন উত্তর না পাওয়ার অহরহ অভিযোগ আসছে সরকারি দু’টি প্রতিষ্ঠােেনর বিরুদ্ধে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইইডিসিআর’র কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে বলছেন, করোনার প্রাদূর্ভাব দেখা দেয়ার পর শুরুতে কম হটলাইন সংখ্যার কারণে একটু সমস্যা হয়েছিল। এখন সেই সমস্যা নেই। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দাবি এ পর্যন্ত করোনা সংক্রান্ত এক কোটির উপরে মানুষকে হটলাইনে সেবা দেয়া হয়েছে।
এদিকে, জ্বর-সর্দি-কাশি-শ্বাসকষ্টের রোগীদের নিয়ে স্বজনরা হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটছেন। কিন্তু কোথাও চিকিৎসা মিলছে না। অভিযোগ রয়েছে, করোনা উপসর্গের সঙ্গে জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের মতো রোগের লক্ষণ মিলে যায়। এ কারণে চিকিৎসকরা এসব রোগীরও চিকিৎসা না দিয়ে করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। অনেক সময় রোগীরা হাসপাতালে পৌঁছার আগেই মারা যান। শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, করোনার উপসর্গ নিয়ে রোগীরা হাসপাতালে দেরি করে আসছেন। হাসপাতালে পৌঁছার পর তিন থেকে ৪ ঘণ্টার মধ্যে ৮০ শতাংশ রোগী মারা যাচ্ছেন।
এদিকে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের দাবি করোনা (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত হটলাইনে ১০শে জুন পর্যন্ত মোট এক কোটি ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৮২টি ফোন কল এসেছে। এর মধ্যে হটলাইনে ১৬২৬৩ (স্বাস্থ্য বাতায়ন) ৪৯ লাখ ৩৯ হাজার ৪৩৭টি, ৩৩৩ হটলাইনে ৫২ লাখ ৬১ হাজার ৬৪২টি এবং আইইডিসিআর (১০৬৫৫;০১৯৪৪৩৩৩২২২) হটলাইনে ২ লাখ ৬২ হাজার ৭০৩টি কল এসেছে। সরকারি দু’টি সংস্থার হটলাইনগুলোতে ২৪ ঘণ্টায় ফোন এসেছে এক লাখ ৬৬ হাজার ২৮টি। আর দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনার ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৯৬৫টি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, স্বেচ্ছাসেবা হিসেবে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত তথ্য ও চিকিৎসা সেবা প্রদানে হটলাইনে যুক্ত আছেন চার হাজার ২১৭ জন চিকিৎসক। সূত্রঃ মানবজমিন
সি/এসএস
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন