এক টাকায় আহার !!! বিদ্যানন্দ ও একজন কিশোর কুমার দাশ
সুইফট বলেছিল,”আপনি মরে গেলে যদি কেউ মনে না রাখে তাহলে সে জীবনের কোন মূল্য নেই।” হয়ত এই নীতিতেই বিশ্বাস রেখেই এই লোকটির পথ চলা ।
ভদ্রলোকটির নাম #কিশোর_কুমার_দাশ। চুয়েট থেকে পাস করা কম্পিউটার প্রকৌশলী, 2001 ব্যাচ। যারা বিদ্যানন্দকে জানেন তাদের না চেনার কথা না।
ইনিই বাংলাদেশে প্রথম গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিশ্ববিদ্যালয়_ভর্তি_কোচিং এর ব্যবস্থা করেন , আমাদের দেশে অনেকমেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা হারিয়ে যায় উচ্চমাধ্যমিক এর পরে ভাল গাইডলাইনের অভাবে। আর সে ব্যবস্থাই তিনি করেন একদম ফ্রিতে।
তাঁর প্রতিষ্ঠানে আছে ফ্রি লাইব্রেরীর সুবিধা, টাকার অভাবে আমরা সবধরনের বই কিনতে পারি না, তার উদ্যোগে সেটাও সফল হয়েছে । এবং যাদের বাসায় থেকে পড়াশুনা করার ব্যবস্থা নেই, এখানে থাকারও ব্যবস্থা আছে । আর এসব কাজে সহায়তা করে আসছে আমাদের মতই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিছু ছাত্র-ছাত্রীরা।
ইনিই প্রথম পথ শিশুদের ছবি তোলার ব্যবস্থা করেন — #ফ্রেমে_বাঁধা_শৈশব। ছবিগুলো তুলে তাদের কাছে পৌছে দেয়া হয়।
আর তিনিই প্রথম #এক_টাকায়_আহার প্রজেক্টের মাধ্যমে পথশিশু ও বন্যা,অগ্নিকান্ড সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর মাঝে খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়। এই ধারনাটা সত্যিই অসাধারণ, হয়ত খাবারের মূল্য ৫০ টাকা বা তার ও বেশি, কিন্তু সেই খাবারের যোগান এই প্রতিষ্ঠান ১ টাকায় ব্যবস্থা করেছে। অনেকে ভাবতে পারেন এই ১ টাকা নেওয়ার কি অর্থ। এর অর্থ এই যে, এই টাকাটা ঐ গরীব পথ শিশুকে বুঝতে শিখাবে যে তার আত্মসম্মান বোধ আছে। সে খাবারটি ফ্রিতে খাচ্ছে না। এই খাবারে এক রকম আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়। “এক টাকায় আহার” প্রজেক্টের আওতায় সারা দেশে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৮,০০০০ বক্স খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
#এক_টাকায়_চিকিৎসা — প্রজেক্টের আওতায় এই পর্যন্ত ২৫,০০০ এর বেশি সুবিধাবঞ্চিত মানুষ প্রেস্ক্রিপশনের পাশাপাশি তিন দিনের ওষুধ পেয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকজন শিশু এবং বৃদ্ধকে। বেদে পল্লী, মেথর পল্লী সহ উত্তরাঞ্চলের চর এলাকা, বন্যাদুর্গত গ্রাম, দূর্গম পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামে মেডিকেল ক্যাম্প করা হয়েছে বছর ঘুরে ঘুরে।
#এক_গ্লাস_দুধ প্রজেক্টের আওতায় বস্তির গর্ভবতী ও নবজাতকের মায়েদের পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি এ সময়ে পালনীয় ও বর্জনীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করা হয়।
এছাড়া স্থায়ী প্রতিষ্ঠান হিসেবে #অনাথালয় গুলোর যাত্রা শুরু। প্রায় তিন শতাধিক এতিম এবং হতদরিদ্র পরিবারের শিশুদের জন্য ইতিমধ্যে চারটি অনাথালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আরো দুটো অনাথালয়ের কাজ চলছে।
আনন্দের সাথে শিক্ষালাভের মন্ত্র নিয়ে যাত্রা শুরু হওয়া বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বর্তমানে #স্কুল আছে ৬ টি। এছাড়া প্রতিটি শাখায় শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রম পরিচালিত হয় নিয়মিত।
#বাসন্তী নামে একটি গার্মেন্টসে তৈরি হচ্ছে শীতের পোষাক। এছাড়া এক বছরে অনাথালয়ের ছেলেমেয়েদের জন্য বিভিন্ন উৎসবে বানানো হয়েছে নতুন কাপড়।
#পাঁচ_টাকায়_স্যানিটারি_প্যাড আনা হয়েছে বস্তির দরিদ্র এবং ছিন্নমূল শিশু কিশোরীদের জন্য।
এছাড়া #সাত_টাকায়_পূজোর_বাজার এবং বর্তমানে চলা #বদলা_বদলি_স্টল — এ সব কিছুর আইডিয়া ওনার।
আর সবকিছু সম্ভব হয়েছে এই অসাধারণ মনের অধিকারী মানুষটির জন্য। হয়ত বা কোনদিন এক টাকারই জয় জয়কার হবে চারদিকে।
আমরা অনেকেই চিনি বিদ্যানন্দ কে কিন্তু এর প্রতিষ্ঠাতা কে আমরা অনেকে হয়ত চিনি না, আর চিনবো ই বা কি করে কারণ ইনি মিডিয়ার সামনে আসেন না বললেই চলে। অগোচরে থেকে প্রতিনিয়ত গাইড করে যান তাঁর স্বেচ্ছাসেবক টিমকে।
উনার কথা গুলা শেয়ার করার উদ্দেশ্য দাদা কে প্রচার করার জন্য নয় একটু কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য মানুষের জন্য কিছু করার প্রবনতা কতটা দৃঢ় সেটা উনার থেকে শিখেছি।।
ধন্যবাদ দাদা, বিদ্যানন্দ পরিবারের দাদা।।
বিদ্যানন্দ – Bidyanondo https://www.facebook.com/Bidyanondo/
লিখেছেনঃ Nur Alom
সিবিএনএ/এসএস
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন