একগুচ্ছ কবিতায় – বিচিত্র কুমার
———————————————
একটা সত্যিকারের ভালোবাসার জন্যে আমি
হাজার কোটি বছর ধরে রঙিন পথে হেঁটেছি,
সেই তাজমহল থেকে মিশরের পিরামিড চূড়া
কিম্বা হিমালয় থেকে আল্পাস চূড়া।
কোথাও খুঁজে পাইনি একটু সত্যিকারের মমতা
পুরো পৃথিবীটা শুধু একটা মায়া সভ্যতা।
—————————————————-
০২) তোমার বর্ণনা
তুমি ছিলে কবিতার ছন্দের মতো মিষ্টি
কী মায়াবী তোমার দু’চোখের দৃষ্টি,
ঠিক যেন জোছনা রাতের পূর্ণিমার চাঁদ
কিম্বা উতলা নদীর ভাঙা এক বাঁধ।
কালোমেঘের মতো চুলগুলো উড়চ্ছিল
দুকানে কদম ফুলের ঝুমকা দুলচ্ছিল,
ঠিক যেন তুমি এক লজ্জাবতী
কিম্বা রঙের রানী প্রজাপতি।
তুমি রাখালিয়া বাঁশির মিলের সুর
বারবার মনে হয় নয় বহুদূর,
দেখেছি হৃদয়ে ভয়াবহ দাবানল
কিম্বা বটের ছায়ার মতো শীতল।
তুমি জলতরঙ্গীর মতো আবেগী
নীরবে বয়ে চলা অভিমানিনী নদী,
দেখেছি তোমায় প্রথম বর্ষার মৌসুমে নারী
পড়েছিলে যেন হলুদ বর্ণের শাড়ি।
——————————————————-
এসেছে আষাঢ়ও শ্রাবণ বয়ছে উরুউরু বাতাস
রংধনুর রঙে ছেয়েগেছে প্রেমিকের রঙিন আকাশ,
এদিকে প্রেমিকা প্রতীক্ষার প্রহরগুনছে একটি বছর ধরে
কদম ফুলের পরসা সাজিয়েছে তার নীড়ে।
অসংখ্য সবুজ পাতার ফাঁকে তার ডাগর দুটি আখিঁতে
সে যেন সেজে রয়েছে সাদাপারা হলুদ বর্ণ শাড়িতে,
তার শুধু ইচ্ছে করে আকাশের বুকে উড়তে ডানামেলে
প্রজাপতির মতো ফুরফুর করে হেসে খেলে।
যেখানে পাতি হাঁসেরা প্রেমসাগরে হাবুডুবু খায়
ভেসেভেসে সাঁতার কাটে রঙের মেলায়,
ঝুমুর ঝুমুর বৃষ্টি পড়ে মন করে হায় ব্যাকুল!
ডোবার জলে ব্যাঙেরা হেসে না পায় কূল।
লিচু বনের আড়ালে কেউ আবার চিঠি লেখে
রংধনুর সবরঙ তার সমগ্র শরীরে মেখে,
জুঁই কেয়া মালতীলতা হাসে হিজল বনে
ময়ূর মযূরীরা নৃত্য করে বর্ষার দিনে।
—————————————————————
মেঘলা আকাশ যখন তাকায় অপরূপা বৃষ্টির দিকে
হঠাৎ তখন বিজুলি চমকায় চতুর্দিকে মেঘ ডাকে
লজ্জাবতীর মতো লাল হয়ে বৃষ্টি পালায় রঙধনুর দেশে
উতলা দেওয়া আবেগে বৃষ্টিকে ডাকে।
তখন আধ-আলো লুকোচুরি চলে জগৎ জুড়ে
দু-জনে লুকিয়ে কথা বলে ছন্দ সুরে সুদূরে।
ভিরুভিরু চোখে আকাশ বলে,এতদিন কোথায় ছিলে?
অপলক দৃষ্টিতে বৃষ্টি বলে,আপনার নীল আকাশেই ছিলাম আমি,
কিন্তু আপনে হাজার তারার মাঝে আমাকে দেখতে পাননি?
আকাশ বলে ও তাই বুঝি?
হঠাৎ আন্ধকার নেমে এলো রঙিলা পৃথিবীর বুকে
তবু একঝলক হাসি ওদের চোখে মুখে।
অতঃপর-
কখন যে হঠাৎ বৃষ্টি এলো মনের অজান্তে
কিছু ক্ষণ কিছু মধুর স্মৃতি থেকে গেল মনে।
দুপচাঁচিয়া,বগুড়া,বাংলাদেশ।