একজন ছাদির মিয়া! কেউ খোঁজ রাখেনা ! গত বছর এমন দিনে দেশে দেশে পথে পথে ঘুরতে গিয়ে মাত্র দশদিনের জন্য বাংলাদেশে গিয়েছিলাম ‘তীর্থ আমার জন্ম ভূমি’ দেখতে, যদিও এর আগের বছরও গিয়েছিলাম জননী জন্মভূমি দেখতে। দশদিনের ভিতর নিজের শহর-গ্রাম-মাটি ও মানুষের সঙ্গে থেকেছি সারাক্ষণ। যা ধারাবাহিক লিখছি কিন্তু কেন যে দেশের কথা লিখতে গিয়ে বার বার থেমে যাই। কম্পিউটারের কীবোর্ডে আঙ্গুলগুলো আর খেলা করে না দ্রুতগতিতে ? যতবার যাই শুধু পরিচিত প্রিয়স্বজনরা শুধু মাইনাস পাই! প্লাসের সংখ্যা খুবই কম। তাই বড্ড ভয় হয় প্রতিদিন প্রতিনিয়ত।
গতবছর খুব কমসময়ের জন্য দেশে গিয়ে খবর পেলাম স্বৈরাচার বিরোধি আন্দোলনের সহযোদ্ধা জেল-জুলুম-হুলিয়া নিয়ে যার জীবন চলেছে, নিজের ব্যবসার উপার্জন প্রিয় সংগঠন আওয়ামীলীগের জন্য দু’হাতে ব্যায় করেছে, যখন আওয়ামী লীগ সংগঠন পরিবারকে কেউ বাজারে বসতে দেয়নি, আশ্রয় দেয়নি এ.এসএম আজাদুর রহমান এবং তাঁর গুলশান হোটেল আর ছাদির রেডিও হাউস (তাঁর) ব্যবসা কেন্দ্রে স্বৈরাচারীদের বিরুদ্ধে
সভা হয়েছে, আশ্রয় নিয়েছে সেই তৃণমূলের নেতা ছাদির মিয়া অসুস্থ! সংবাদটি শোনার পরই খুব কষ্ট লেগেছে। অথচো দেশে গিয়ে দেখলাম হাইব্রিড আওয়ামীলীগদের জয়জয়কার! তোমার মতো মানুষর বড্ড প্রয়োজন এখন!
ছাদির ভাই আমাদের প্রিয় মানুষের একজন! স্বৈরাচার বিরোধি আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের দাওয়া খেয়ে তাঁর গ্রামেই আশ্রয় নিতে হতো। সে অনেক কথা ! স্মৃতি যতই মধুর তারচেয়ে বেশী কষ্টের!
যাক্ ছাদির ভাই অসুস্থ জেনেই তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। তাঁর করুণ অবস্থা দেখে কষ্টের পাশাপাশি কান্না আটকাতে পারলাম না। সেতো একজন মহান ব্যক্তি! নিজের ঘর অন্ধকার রেখেই সমাজকে আলোকিত করার চেষ্টা করেছেন। শিক্ষার আলো গ্রামান্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নিজের অনেক মূল্যবান জমি দান করে এলাকায় ছেলেমেয়েদের জন্য গড়েছেন প্রাইমারী স্কুল। এখন এলাকার শিশুরা শিক্ষার আলোয় আলোকিত হচ্ছে। যা এ উপজেলার কোন এমপি-চেয়ারম্যান করেনি তা-ই করলেন ছাদির মিয়া! স্যালুট ছাদির ভাই।
যার প্রাণবন্ত হাসি আর জয় বাংলার উত্তাল শ্লোগানে মুখরিত ছিলো কমলগঞ্জ। যার মধ্যবিত্তের অর্থ দিয়ে সাহস আর অনুপ্রেরনায় সংগঠন চলতো সেই ছাদির মিয়া হঠাৎ করে ব্রেনস্টোকে আক্রান্ত হয়ে অন্ধকার জীবনে চলছে যাপিত জীবন। এখন আর জয় বাংলার উত্তাল শ্লোগানে নেই, নেই মটর সাইকেল নিয়ে দূর-দুরান্তে মিটিং মিছিলে। তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখলাম তিনি খুবই অসুস্থ। পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে-কষ্টে চলছে জীবন। ভাগ্য কতোইনা নির্মম! ঈশ্বর বুঝি তাই করেন যে মানুষ সারাটা জীবন দিয়ে যায় তাকে বেশী কষ্ট দেন আর যারা শুধু নেয় তাকেই শুধু দেন!
ছাদির ভাই এ দূর প্রবাস থেকে মনেপ্রাণে প্রার্থনা করছি, তুমি ভালো হয়ে উঠো, তোমার মতো বঙ্গবন্ধু প্রেমিক ফের জয় বাংলার উত্তাল শ্লোগানে সব দুর্নীতিবাজ সুবিধালোভি এবং স্বাধীনতাবিরোধিদের বিরুদ্ধে জেগে উঠো। আমি জানি তোমার প্রাণপ্রিয় নেত্রী যাঁর জন্য তুমি সর্বদা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলে তিনি এখন ক্ষমতায় কিন্তু তোমার মতো জীবন দেওয়া কর্মীর ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। তুমি সমাজকে আলোকিত করতে গিয়ে নিজের দুর্বিসহ জীবনযাপন করছো! কেউ এখন আর তোমাকে কেউ খুঁজ রাখেনা!
তোমাকে আবারো স্যালুট!
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী, আপনাকে সবিনয়ে বলছি ছাদির মিয়ার মতো একজন প্রকৃত তৃণমূল বঙ্গবন্ধু আর জননেত্রি শেখহাসিনা আপা প্রেমিক মুজিব সৈনিকের চিকিৎসা করে তাঁর মেয়ের বিয়েতে সহযোগিতা করুন, তাঁকে বাঁচান। জয় বাংলা। একজন ছাদির মিয়া! কেউ খোঁজ রাখেনা
-সদেরা সুজন. প্রধান নির্বাহী- কানাডা বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি। সিবিএনএ২৪ডটকম।