জাতিসংঘ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন
নিউইয়র্ক, ০৮ আগস্ট ২০২৩: আজ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে যথাযোগ্য মর্যাদায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯৩তম জন্মবার্ষিকীজাতিসংঘ উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতির পিতা ও বঙ্গমাতাসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের বুলেটে নির্মমভাবে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহীদ সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আলোচনা পর্বে মূলবক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। দিবসটির প্রতিপাদ্য-“সংগ্রাম-স্বাধীনতা প্রেরণায় বঙ্গমাতা”উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, “স্বাধীনতা আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে গৌরবময় ইতিহাস। এই ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গবন্ধুর পরে এই ইতিহাস সৃষ্টিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। কারণ তিনি ছিলেন জাতির পিতার সুদীর্ঘ সংগ্রাম ও সকল সঙ্কটে এক অকুতোভয়, বিশ্বস্থ ও নির্ভিক সহযাত্রী। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতার জন্য একযুগেরও বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। এসময় বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বঙ্গমাতা দলীয় কর্মী এবং দলের প্রয়োজনে তাঁর সঞ্চিত অর্থ ব্যয় করেছেন; প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে দলীয় কর্মকান্ড সচল রেখেছেন এবং সর্বোপরি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সঠিক পথে পরিচালনা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।”
স্থায়ী প্রতিনিধি আরো বলেন, বঙ্গমাতা ছিলেন সাধারণের মধ্যে অসাধারণ প্রজ্ঞা ও প্রতিভার অধিকারিনী। বঙ্গবন্ধুর কারাগারে থাকাকালীন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সাহসী ভূমিকা পালন এবং বঙ্গবন্ধুর চরম আস্থার প্রতীক হিসেবে তিনি আমার চোখে দেখা নারীর ক্ষমতায়নের এক অনন্য উদাহরণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব, উদারতা, মানবিক হৃদয় এবং সাদামাঠা জীবন যাপনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “বঙ্গমাতার আদর্শ থেকেই এমন গুণাবলী অর্জন করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের নারীরা বঙ্গমাতার জীবনাদর্শ ও মুল্যবোধে উজ্জীবিত দেশ ও জাতির উন্নয়নে অবদান রাখবে মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত মুহিত।”
উন্মুক্ত আলোচনায় মিশনের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারিগণ অংশগ্রহণ করেন। আলোচকগণ বঙ্গমাতাকে জাতির পিতার রাজনৈতিক সাফল্যের অনন্য উৎস বিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করেন। সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের পরতে পরতে বঙ্গমাতার ভূমিকা এবং তাঁর আদর্শ যুগে যুগে কালে কালে বাঙালি নারীদের জন্য আলোর দীপ শিখা হয়ে অনুপ্রেরণা যোগাবে মর্মে উল্লেখ করেন আলোচকগণ। অবশেষে কেক কেটে বঙ্গমাতার জন্মদিন পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।