পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ড, আফগান নারীর আত্মহত্যা
অপরাধ ছিল এক বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়া। কিন্তু, দেশে নারী কারাগারের অভাব। তাই, তাকে প্রকাশ্যে পাথর ছুড়ে আঘাত করে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তালিবান কর্তৃপক্ষ। প্রকাশ্যে সেই নিষ্ঠুর মৃত্যু এড়াতে, শেষ পর্যন্ত গলায় ওরনার ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক আফগান নারী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে গত সপ্তাহে, আফগানিস্তানের ঘোর প্রদেশে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুসারে, এই ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল সপ্তাহখানেক আগে। গ্রামেরই এক বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন ওই নারী। কিন্তু, এই খবর পৌঁছে গিয়েছিল তালিবান কর্তৃপক্ষের কানে। তারপর, ওই নারী এবং পুরুষ – দুজনকেই শাস্তির নির্দেশ দেয় তালিবানিরা।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর), যে বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে পালিয়েছিলেন ওই নারী, তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। কথা ছিল শুক্রবার, নারীকে পাথর ছুড়ে ছুড়ে আঘাত করে মেরে ফেলা হবে। কিন্তু, তার আগেই আত্মঘাতী হন তিনি।
ঘোর প্রদেশের তালিবানি প্রাদেশিক পুলিশের মুখপাত্র আব্দুর রহমান বলেছেন, আমাদের এখানে নারী কারাগার না থাকার কারণেই, ওই নারীকে প্রকাশ্যে পাথর মারার শাস্তি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু, শাস্তি পাওয়ার আগেই, তিনি একটি ওরনা দিয়ে শ্বাসরোধ করে নিজের জীবন শেষ করে দেন।
সূত্রের খবর, সম্প্রতি আফগান দেশের বিভিন্ন প্রদেশে নারীদের বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। আর এই প্রবণতা রুখতে, তালিবান সরকার তাদের পাথর মেরে হত্যা বা প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা পুনর্দখল করেছিল তালিবানরা। তারপর থেকে তালিবানি শাসনে ক্রমেই নারীদের অধিকার ও স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। বিধিনিষেধের কারণে শিক্ষা থেকে কাজ, বাদ পড়েছে নারীরা। ফলে, আফগান নারীরা এখন চরম মানবাধিকার সংকটের মুখোমুখি। শিক্ষা, কাজ, সামাজিক অংশগ্রহণ এবং স্বাস্থ্যের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত আফগান নারীরা।
সূত্র: ইয়ন, এনডিটিভি