বিশ্ব

মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের পাশ থেকে এবার সরে যাচ্ছেন প্রবীণ ভোটাররা

মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের
ছবিঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের মধ্যে নানা জরিপে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে পিছিয়ে আছেন, তার কথা আগেই জানা গেছে। এবার প্রবীণদের মধ্যে পিছিয়ে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই প্রবীণরা হয়ে উঠতে পারেন নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের নির্ধারক। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন ১০ হাজার মানুষ ৬৫ বছর বয়স অতিক্রম করছেন। এবারে মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের জয় নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।

সমাজের প্রবীণ নাগরিকেরা ২০১৬ সালের নির্বাচনে তাদের পছন্দের তালিকায় রেখেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এবারে সে জায়গায় ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। প্রবীণদের এই মুখ ফিরিয়ে নেওয়া রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য মোটেই ভালো বার্তা নয়।

২০১৬ সালের নির্বাচনে আগাম জরিপে দেখা গিয়েছিল, ৫২ শতাংশ প্রবীণ ভোটার ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছিলেন। গত সপ্তাহে করা সিএনএনের জরিপে দেখা গেছে, ৩৯ শতাংশ প্রবীণ মার্কিন এবারও ট্রাম্পকে পছন্দের প্রার্থী হিসেবে দেখছেন। অন্যদিকে প্রবীণ ভোটারদের ৬০ শতাংশের সমর্থন ডেমোক্র্যাটপ্রার্থী জো বাইডেনের প্রতি।

এ নিয়ে উৎকণ্ঠার শেষ নেই ট্রাম্প শিবিরে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক বার্তায় বলেছেন, প্রবীণদের প্রতি তাঁর ভালোবাসার কথা। প্রবীণদের স্বাস্থ্যসেবায় প্রতি বয়স্ক নাগরিকের নামে ২০০ ডলারের স্বাস্থ্য কার্ড পাঠানোর তাঁর পদক্ষেপের কথাও বলছেন তিনি।

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যর্থতার কারণেই প্রবীণদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায় প্রবীণেরা। ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে ভাইরাস মোকাবিলায় কোন সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি তারা এখনো পাচ্ছেন না।

২০১৬ সালের নির্বাচনে আগাম জরিপে দেখা গিয়েছিল, ৫২ শতাংশ প্রবীণ ভোটার ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছিলেন। গত সপ্তাহে করা সিএনএনের জরিপে দেখা গেছে, ৩৯ শতাংশ প্রবীণ মার্কিন এবারও ট্রাম্পকে পছন্দের প্রার্থী হিসেবে দেখছেন। অন্যদিকে প্রবীণ ভোটারদের ৬০ শতাংশের সমর্থন ডেমোক্র্যাটপ্রার্থী জো বাইডেনের প্রতি

তরুণদের মধ্যে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার হার এমনিতেই কম। ২০১৮ সালে দেখা গেছে, মাত্র ২০ শতাংশ তরুণ নির্বাচনের দিনে ভোট কেন্দ্রে গেছে। প্রবীণদের মধ্যে ভোট দেওয়ার মতো নাগরিক অধিকারকে বেশ গুরুত্বের চোখে দেখা হয়। অনেকেই অবসরজীবন কাটান, ফলে ডাকযোগে ভোট দেওয়া, আগাম ভোট দেওয়ায়ও প্রবীণরা তরুণদের চেয়ে এগিয়ে থাকেন।

২০১৬ সালের নির্বাচন ও এবারের নির্বাচনে নানা জরিপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবীণ ভোটারদের মনোভাবের বিরাট পরিবর্তন দেখা গেছে। করোনাভাইরাস ছাড়াও প্রবীণদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। স্বাস্থ্যবিমা, ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক টানাপোড়েন প্রবীণদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

ফ্লোরিডায় ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জয়ের পেছনে প্রবীণদের ব্যাপক ভোট কাজ করেছিল। ফ্লোরিডায় অবসরে যাওয়া বিপুলসংখ্যক প্রবীণের বসবাস। এবারের সব জরিপে দেখা যাচ্ছে, ফ্লোরিডার মতো রাজ্যেও প্রবীণদের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যাপকভাবে পিছিয়ে আছেন।

প্রবীণেরা এখন দিনে দিনে দীর্ঘজীবী হচ্ছেন। ৬২ বছর থেকে ৬৭ বছর বয়সে অবসরে যাওয়া প্রবীণদের মূল আয়ের উৎস তাদের মাসিক সামাজিক নিরাপত্তার আয়। ৫০ বছর আগে সোশ্যাল সিকিউরিটি পাওয়া লোকজনের চেয়ে এই সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। আমৃত্যু সামাজিক নিরাপত্তার অর্থ পাওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্র তরুণ ও প্রবীণদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক একটা দ্বন্দ্ব এখন চলছে। তরুণদের কাজ করে কর দিতে হচ্ছে। এ করের অর্থ থেকে প্রবীণেরা সোশ্যাল সিকিউরিটির অর্থ পাচ্ছেন।

তরুণ কর্মজীবীরা মনে করছে, তারা যখন অবসরে যাওয়ার সময় হবে, তখন সামাজিক নিরাপত্তা তহবিলে পর্যাপ্ত অর্থই থাকবে না। টান পড়বে জনপ্রতি পাওয়া অর্থের পরিমাণে। টান পড়বে অবসর যাওয়া জীবনের স্বাস্থ্য সেবায় জোগান দিতে।

এসব উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে প্রবীণেরা বেশ সতর্কভাবেই তাদের সমর্থন জানাচ্ছেন প্রার্থীদের। ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী জো বাইডেন বলেছেন, তিনি প্রবীণদের সামাজিক নিরাপত্তা তহবিল পুনর্গঠন করবেন। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবেন।

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাইডেন কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন, এমন সব ভাবনা থেকেই প্রবীণরা তাদের সমর্থনের কথা জানাচ্ছেন। তিন নভেম্বরের নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, ততই প্রবীণদের দিকে সতর্ক নজর রাখছে দুই শিবির।

সূত্রঃবিবিসি বাংলা

বাঅ/এমএ


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন