মিয়ানমারে চারজন গণতন্ত্রপন্থীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে সেনাবাহিনী।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী চারজন গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। দেশটিতে কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথমবারের মত সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের ঘটনা ঘটলো।
সাবেক আইনপ্রণেতা পিয়ো জেয়া দ, লেখক ও আন্দোলনকারী কো জিমি, হ্লা মিয়ো অং এবং অং থুরা জ-য়ের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী তৎপরতা’ চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল।
গত জুন মাসে সেনাবাহিনী তাদের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে বিশ্বজুড়ে নিন্দার মুখে পড়েছিল।
সামরিক জান্তা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি বা এনএলডি-র সরকারকে উৎখাত করে।
এই অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখা দেয়া, যদিও সে বিক্ষোভ দ্রুততার সাথেই দমন করা হয়।
ইয়াঙ্গনের কারাগারে পরিবারের সদস্যরা
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী ১৯৮৮ সালের পর দেশটিতে এই প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হল।
এর আগে দেশটিতে ফাঁসীতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হত।
ওই চারজন ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা ইয়াঙ্গনের ইনসেইন কারাগারে অপেক্ষা করছে কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করার জন্য।
পরিবারের হাতে এখনো মৃতদেহগুলি বুঝিয়ে দেয়া হয়নি, বিবিসিকে বলেছেন কো জিমির বোন।
পিয়োর স্ত্রী তাজিন নিয়ান্ট অং বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তাকে তার স্বামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।
পরিবারগুলো এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্য জানার জন্য আবেদন জমা দিয়েছে।
এই চারজন সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে?
পিয়ো জেয়া দ এবং কো জিমি বলে পরিচিত চ মিন ইউ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন এবং জুন মাসে দেয়া আপিলের রায়ে তারা হেরে যান।
তিপ্পান্ন বছর বয়সী কো জিমি ৮৮ জেনারেশন স্টুডেন্টস গ্রুপ নামে একটি গোষ্ঠীর সদস্য। এরা মূলত মিয়ানমারের একটি গনতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারী গোষ্ঠী যারা ১৯৮৮ সালের এক সামরিক জান্তাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জন্য সুপরিচিত।
কো জিমি তার গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের জন্য ২০১২ সাল পর্যন্ত কারাভোগ করেছেন।
গত বছর অক্টোবর মাসে তাকে গ্রেফতার করা হয় ইয়াঙ্গনের এক অ্যাপার্টমেন্টে অস্ত্র ও গোলাবারদে লুকিয়ে রাখা এবং ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের ‘উপদেষ্টায়’ পরিণত হবার অভিযোগে।
একচল্লিশ বছর বয়সী পিও জেয়া দ ছিলেন এনএলডির একজন সাবেক আইনপ্রণেতা। তিনি সু চির একজন ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন।
তিনি একজন সাবেক হিপহপ শিল্পী।
তিনি তার গানের কথা সেনাবিরোধী বক্তব্য তুলে ধরার কারণে প্রায়ই সেনাবাহিনীর রোষের মুখে পড়তেন।
তাকে গত নভেম্বর মাসে সন্ত্রাসী তৎপরতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
বাকী দুজন – হ্লা মিয়ো অং এবং অং থুরা জ’য়ের ব্যাপারে খুব বেশি কিছু জানা যায় না।
তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে একজন নারীকে হত্যার অভিযোগে, যিনি সামরিক জান্তার তথ্যদাতা ছিলেন বলে মনে করা হয়।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই ঘটনাকে ‘স্বাধীনতা, বেঁচে থাকার অধিকার এবং ব্যক্তির নিরাপত্তার অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছেন।
সূত্রঃ বিবিসি বাংলা
এফএইচ/বিডি
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান